সংগৃহীত ছবি
অনলাইন ডেস্ক বাঙালি হোক বা অবাঙালি, মাছ খাওয়া যে স্বাস্থ্যের জন্য উপকার সেই কথা সবাই জানেন। এমনকি বিশেষজ্ঞরাও বার বার মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আমরা জানি না মাছের কোন অংশ কাদের জন্য উপকার বা কোন অংশ খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়।
মাছ পরিষ্কার করার সময় বা খাওয়ার সময়, আমরা এর বেশিরভাগ অংশই ফেলে দিই। কিন্তু জানেন কী এই অংশগুলো আসলে অনেক বেশি পুষ্টিকর।
সাধারণ মাছ আনার পর, আমরা এটি পরিষ্কার করি, এর কিছু অংশ সরিয়ে ফেলি, ধুয়ে ফেলি এবং তারপর রান্না করি। মাছ পরিষ্কার করার সময়, আমরা মাছের কিছু অংশ অপ্রয়োজনীয় বলে সরিয়ে ফেলি।
কিন্তু মাছের এমন কিছু অংশ আছে যা পুষ্টিকর বলে মনে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু আমরা সকলেই মাছ ধোওয়ার সময় সেগুলি ফেলে দিই। চলুন দেখি এই অংশগুলো কী কী।
অ্যাকাডেমি অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়েটিশিয়ানের ডা. জার্লিন জোন্স বলেন, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হলো অসম্পৃক্ত চর্বি। মাছের এই বিশেষ অংশগুলোতে আইকোসাপেন্টাইনয়িক অ্যাসিড এবং ডোকোসাহেক্সাইনয়িক অ্যাসিডও পাওয়া যায়। এটি সারা শরীরে প্রদাহ কমায়। এই কারণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
গবেষণায় বলা হয়েছে যে, সপ্তাহে দুই দিনও যদি মাছ খাওয়া হয়, তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
ফিশ আই : বেশিরভাগ মানুষ মাছ ধোয়ার সময় চোখ ফেলে দেন। কেউ কেউ এটি খান, এই বলে যে এটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। কিন্তু আসল তথ্য অনুসারে, মাছের চোখ ভিটামিন বি১ এবং অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। যা স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে এই অংশ।
মাছের মূত্রাশয় : ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন চিকিৎসায় মাছের মূত্রাশয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। এতে জেলটিন, লিপিড, সুগার এবং ভিটামিনের মতো উপাদান রয়েছে।
ট্র্যাডিশনাল চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসারে, মাছের মূত্রাশয় রক্তকে সুস্থ রাখে এবং কিডনিকে শক্তিশালী রাখে। হাঁটুর জয়েন্ট এবং পিঠের জন্য ভালো। নতুন গবেষণা অনুসারে, মাছের মূত্রাশয়ে কোলাজেন থাকে যা মানুষের টিস্যু কোষগুলোকে উন্নত করে এবং ত্বকের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।
মাছের হাড়: মাছের কাটা হলো মাছের হাড়। সাধারণত আমরা সবাই এটি ফেলে দিই। কিন্তু এতে ভরপুর থাকে ক্যালসিয়াম। মাছের কাটা অস্টিওপোরোসিস রোগীদের জন্য অপরিহার্য পুষ্টির ভাণ্ডার।
তাই মাছের কাটা নরম না হওয়া পর্যন্ত মাছ রান্না করুন। অথবা আপনি এটি শুকিয়ে গুঁড়ো করে আপনার খাদ্যতালিকায় গ্রহণ করতে পারেন। অথবা আপনি এটি থেকে স্যুপ তৈরি করে পান করতে পারেন।
মাছের কলিজা : মাছের লিভার প্রোটিন এবং অসম্পৃক্ত চর্বি সমৃদ্ধ, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভালো। এই অংশ কোলেস্টেরলের জন্যও দুর্দান্ত উপকারী। শুধু তাই নয় এই অংশ খেতেও দারুণ সুস্বাদু।
মাছের আঁশ: মাছ ধোওয়ার পর পরিষ্কার করার সময় প্রথমেই আমরা আঁশগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু জানেন কি এতে প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড, কোলিন, লেসিথিন ইত্যাদি উপাদান রয়েছে। লেসিথিন স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়া ধীর করতে সাহায্য করে। ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তের চর্বি এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে।
আপনি হয়ত ভাবছেন মাছের আঁশ কীভাবে খাবেন। প্রথমে একটি পাত্রে পানি নিন। ফুটিয়ে নিন, তাতে সামান্য ভিনিগার দিয়ে দিন এবং মাছের আঁশগুলো দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এই জলটি স্যুপের মতো না হওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে নিন। এতে আপনার পছন্দের মশলা যোগ করুন এবং পান করুন। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন