রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
রবিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তিন দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিভারের জটিল সমস্যায় ভুগছিলেন। দুই মাস আগে তিনি সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা নিয়ে ঢাকায় আসেন এবং সমস্যা দেখা দিলেই পর্যায়ক্রমে রাজধানীর স্কয়ার ও ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার একান্ত সচিব আক্কাস খান রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
নাজমুল হুদা ১৯৪৩ সালের ৬ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারি নাজমুল হুদা ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান জাগো দল গঠন করলে নাজমুল হুদা জাগো দলে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) গঠিত হলে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন এবং তিনি ছিলেন দলের সর্বকনিষ্ঠ স্থায়ী কমিটির সদস্য। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন।
১/১১ পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে তিনটি দুর্নীতির মামলা হয়। ২০১০ সালে ২১ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন। তখন তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। বহিষ্কৃত হলেও তিনি বিএনপির দলীয় কাজ করতে থাকেন এবং ২০১১ সালের ৫ এপ্রিল তার সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অবশেষে ২০১২ সালে ৬ জুন নাজমুল হুদা নিজেই বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন।
২০১২ সালের ১০ আগস্ট নাজমুল হুদা ও আবুল কালাম মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন। কিন্তু কয়েক মাস পরে আবুল কালাম কর্তৃক বিএনএফ থেকে বহিষ্কার হন। ২০১৪ সালের ৭ মে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জোট নামে একটি জোট গঠন করেন এবং ২১ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি নামে দল গঠন করেন। ২০১৫ সালের ২০ নভেম্বর নাজমুল হুদা তৃণমূল বিএনপি নামে আরও একটি নতুন দল গঠন করেন।