বিএনপিকে ভয়-লোভ দেখিয়েও শেখ হাসিনা ভাঙতে পারেনি : ডা. জাহেদ উর রহমান

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বিএনপির দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রামের কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা শতভাগ জেঁকে বসতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকার প্রধান বাধা ছিল বিএনপি। বিএনপিকে লোভ দেখিয়ে, ভয় দেখিয়ে নানাভাবে চেষ্টা করেছে কিন্তু বিএনপিকে ভেঙে ফেলতে পারেনি। এখন সেই বিএনপির প্রধানকে টার্গেট করে ভয়ঙ্কর রকমের স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।

 

এটা খুবই এলার্মি।’ সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ বিশ্লেষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

ডা. জাহেদ বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই না, এর আগে থেকেই বিএনপির আন্দোলনের কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা শতভাগ জেঁকে বসতে পারেনি। কম্বোডিয়াতে হুম সেন শতভাগ স্বৈরাচার হতে পেরেছেন, কারণ কম্বোডিয়ার শক্তিশালী বিরোধী দলটাকে ভেঙে ফেলতে পেরেছিলেন তিনি।

 

যখন সেটা করতে পারলেন, তারপর তার ক্ষমতায় থাকা কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি। শেখ হাসিনা বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকার প্রধান বাধা ছিল বিএনপি। যেই দলটা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াইকে জাগিয়ে রাখলো, সেই দলটাকে আওয়ামী লীগের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে যারা স্টেবল হতে দিতে চায় না, তাদের এক ধরনের চক্রান্ত আছে এবং কেউ কেউ সেই ফাতে পা দিয়েছে।’

 

তিনি আরো বলেন, এনসিপির সাথে সরকারের বেশ কিছু ক্ষেত্রে এলাইনমেন্ট দেখা যায়। যে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন তারা মোটা দাগে এনসিপির মতো করে কথা বলেন। সম্প্রতি মিটফোর্ডের ঘটনায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘প্রস্তর যুগে স্বাগতম, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না ইত্যাদি ইত্যাদি।’ বিএনপিকে এনসিপি এবং জামায়াত যেভাবে এট্যাক করছিল সেই ভাষা। প্রস্তর যুগ যদি হয়ে থাকে এটা কার জন্য হয়েছে? এ ব্যর্থতা কার? এ ব্যর্থতা সরকারের।

 

একটা বিষয় ইন্টারেস্টিং— সরকার এক বছর ধরে ক্ষমতায় আছে অথচ মিছিল হচ্ছে বিএনপির বিরুদ্ধে, সমালোচনা হচ্ছে বিএনপির। এ রকম একটা হত্যাকাণ্ডের জন্য কার বিরুদ্ধে মিছিল হওয়ার কথা ছিল? সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাওয়ার কথা ছিল। অথচ তা হয়নি। সরকারের মধ্যে থেকে উপদেষ্টারা এনসিপির টোনে কথা বলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা আমরা সবাই জানি।

 

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের ব্যবসার অবস্থা কিন্তু ভালো না। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কিনেছে বেশি দামে, এখন ডলার অনেকটা ফ্লোটিং মানে ডলারের দাম টাকার বিনিময়ে পড়ে যাচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে আমাদের অর্থনীতিতে ডলারের চাহিদা কমে গেছে। চাহিদা কমে গেছে মানে আমাদের অর্থনীতি আসলে গ্রো করছে না। সেটা সংকুচিত হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা আবার ধরে রাখতে চাইছে। কারণ যদি ডলারের দাম ভালো না থাকে তাহলে রেমিটেন্স আসবে না। এটা একটা ইন্ডিকেটর যে আমাদের অর্থনীতি ভালো যাচ্ছে না। অর্থনীতি ভালো না যাওয়া মানে ব্যবসায়ীরা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। ব্যবসায়ীরাও চাইছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে নির্বাচন হোক। শুধু দুই-তিনটা রাজনৈতিক দল এবং কিছু গোষ্ঠী আছে যারা নির্বাচন চায় না। এইটার মধ্যে একটা পাওয়ার ব্যালেন্সিং হবে এবং কিছু বিশৃঙ্খলা হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইলেকশন হয়ে যাবে ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» শুধু একটি দল সংবিধান সংশোধন করুক আমরা চাই না: জামায়াত

» ছাত্রলীগকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণার আহ্বান এবি পার্টির

» এত জ্বালা কেন, এত অহংকার কেন? জামায়াতকে ফারুক

» বৃদ্ধা মাকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া সেই ছেলেসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

» বিএনপির ১৬ বছরের আন্দোলনের পটভূমি চব্বিশের জুলাই: রিজভী

» ১৪৪টি দলের কোনোটিই ‘উত্তীর্ণ’ হতে পারেনি, সময় পাচ্ছে আরও ১৫ দিন

» নাক দিয়ে রক্ত বের হলে কি ওজু ভেঙে যাবে?

» বিমানবন্দর থেকে ৯৬ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো মালয়েশিয়া

» বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ১১ হাজার ৭ জন গ্রেফতার

» আগামী বছর বিয়ে মধুমিতার, জানা গেল দিনক্ষণ!

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিএনপিকে ভয়-লোভ দেখিয়েও শেখ হাসিনা ভাঙতে পারেনি : ডা. জাহেদ উর রহমান

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বিএনপির দীর্ঘদিনের লড়াই-সংগ্রামের কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা শতভাগ জেঁকে বসতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকার প্রধান বাধা ছিল বিএনপি। বিএনপিকে লোভ দেখিয়ে, ভয় দেখিয়ে নানাভাবে চেষ্টা করেছে কিন্তু বিএনপিকে ভেঙে ফেলতে পারেনি। এখন সেই বিএনপির প্রধানকে টার্গেট করে ভয়ঙ্কর রকমের স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।

 

এটা খুবই এলার্মি।’ সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ বিশ্লেষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

ডা. জাহেদ বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই না, এর আগে থেকেই বিএনপির আন্দোলনের কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা শতভাগ জেঁকে বসতে পারেনি। কম্বোডিয়াতে হুম সেন শতভাগ স্বৈরাচার হতে পেরেছেন, কারণ কম্বোডিয়ার শক্তিশালী বিরোধী দলটাকে ভেঙে ফেলতে পেরেছিলেন তিনি।

 

যখন সেটা করতে পারলেন, তারপর তার ক্ষমতায় থাকা কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি। শেখ হাসিনা বছরের পর বছর ক্ষমতায় থাকার প্রধান বাধা ছিল বিএনপি। যেই দলটা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াইকে জাগিয়ে রাখলো, সেই দলটাকে আওয়ামী লীগের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে যারা স্টেবল হতে দিতে চায় না, তাদের এক ধরনের চক্রান্ত আছে এবং কেউ কেউ সেই ফাতে পা দিয়েছে।’

 

তিনি আরো বলেন, এনসিপির সাথে সরকারের বেশ কিছু ক্ষেত্রে এলাইনমেন্ট দেখা যায়। যে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন তারা মোটা দাগে এনসিপির মতো করে কথা বলেন। সম্প্রতি মিটফোর্ডের ঘটনায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘প্রস্তর যুগে স্বাগতম, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না ইত্যাদি ইত্যাদি।’ বিএনপিকে এনসিপি এবং জামায়াত যেভাবে এট্যাক করছিল সেই ভাষা। প্রস্তর যুগ যদি হয়ে থাকে এটা কার জন্য হয়েছে? এ ব্যর্থতা কার? এ ব্যর্থতা সরকারের।

 

একটা বিষয় ইন্টারেস্টিং— সরকার এক বছর ধরে ক্ষমতায় আছে অথচ মিছিল হচ্ছে বিএনপির বিরুদ্ধে, সমালোচনা হচ্ছে বিএনপির। এ রকম একটা হত্যাকাণ্ডের জন্য কার বিরুদ্ধে মিছিল হওয়ার কথা ছিল? সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চাওয়ার কথা ছিল। অথচ তা হয়নি। সরকারের মধ্যে থেকে উপদেষ্টারা এনসিপির টোনে কথা বলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা আমরা সবাই জানি।

 

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের ব্যবসার অবস্থা কিন্তু ভালো না। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কিনেছে বেশি দামে, এখন ডলার অনেকটা ফ্লোটিং মানে ডলারের দাম টাকার বিনিময়ে পড়ে যাচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে আমাদের অর্থনীতিতে ডলারের চাহিদা কমে গেছে। চাহিদা কমে গেছে মানে আমাদের অর্থনীতি আসলে গ্রো করছে না। সেটা সংকুচিত হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এটা আবার ধরে রাখতে চাইছে। কারণ যদি ডলারের দাম ভালো না থাকে তাহলে রেমিটেন্স আসবে না। এটা একটা ইন্ডিকেটর যে আমাদের অর্থনীতি ভালো যাচ্ছে না। অর্থনীতি ভালো না যাওয়া মানে ব্যবসায়ীরা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। ব্যবসায়ীরাও চাইছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে নির্বাচন হোক। শুধু দুই-তিনটা রাজনৈতিক দল এবং কিছু গোষ্ঠী আছে যারা নির্বাচন চায় না। এইটার মধ্যে একটা পাওয়ার ব্যালেন্সিং হবে এবং কিছু বিশৃঙ্খলা হবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইলেকশন হয়ে যাবে ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com