বন্যার সময় যে দোয়া পড়বেন

প্রকৃতির যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা তারই অধীনে। কখনো প্রকৃতি বিরূপ রূপ ধারণ করে। রূঢ় ও রুষ্ট হয়, যাকে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলি। যেমন ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, ভারী বর্ষণ, বন্যা, খরা, দাবানল, শৈত্যপ্রবাহ, ভূমিকম্প, সুনামি প্রভৃতি।

 

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কিছু দোয়া বা আমলের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার সুযোগ রয়েছে। আজ সেসব আমলের কথাই তুলে ধরা হলো।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, যেন তার উম্মতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে একসঙ্গে ধ্বংস না করা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আল্লাহর রাসুল বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার করতেন এবং অন্যান্যদেরকেও নির্দেশ তা পড়ার নির্দেশ দিতেন।

 

দুর্যোগের আল্লাহর রাসুল (সা.) যা করতেন

দমকা হওয়া বইতে দেখলে রাসুল (সা.) আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যেতেন এবং উদ্বিগ্ন হয়ে চলাফেরা করতেন। যখন বৃষ্টি হতো তখন তিনি খুশি হতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝোড়ো বাতাস বইত—তখন রাসুল (সা.) এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন—

اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।

 

হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির কল্যাণগুলো কামনা করছি, এই বৃষ্টিতে যেসব কল্যাণ রয়েছে সেগুলো কামনা করছি এবং এই বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর  আর এ বৃষ্টি ও বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সব রকম অকল্যাণ ও বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই।’

 

এরপর যখন বৃষ্টি হতো— তখন মহানবী (সা.) শান্ত হতেন। আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি যে লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন?’ এর জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে (বৃষ্টি বর্ষণের আকারে) আজাব পতিত হয়েছিল। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩২০৬; মুসলিম, হাদিস : ৮৯৯; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪৯)

বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার বা বৃষ্টি থামানোর দোয়া

প্রয়োজনমাফিক বৃষ্টি কল্যাণকর। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও বন্যা অবশ্যই খারাপ। যখন প্রবল বৃষ্টি হতো— তখন নবী (সা.) বলতেন,

اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا ولَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ علَى الآكَامِ والظِّرَابِ، وبُطُونِ الأوْدِيَةِ، ومَنَابِتِ الشَّجَرِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার। (বুখারি, হাদিস : ১০১৪)

 

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।

অতি বৃষ্টি বন্ধের দোয়া ও আমল

আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ! তখন আকাশে বিন্দুমাত্র মেঘের ছোঁয়াও ছিল না, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর দোয়ার পর দিগন্তে মেঘের উদ্ভাস হয়, কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো আকাশ ছেয়ে ফেলে, অতঃপর মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়।

 

আনাস (রা.) আরো বলেন, আল্লাহর শপথ! পরবর্তী ছয় দিন ধরে আমরা সূর্য দেখিনি। সপ্তাহান্তে পরবর্তী জুমায় পুনরায় ওই ব্যক্তি যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবারত অবস্থায়, ওই ব্যক্তি আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ধনসম্পদ সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পানিতে পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহ তায়ালার কাছে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার প্রার্থনা করুন।

 

তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই হাত উঁচিয়ে দোয়া করলেন—

اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا ولَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ علَى الآكَامِ والظِّرَابِ، وبُطُونِ الأوْدِيَةِ، ومَنَابِتِ الشَّجَرِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার। (বুখারি, হাদিস : ১০১৪)

 

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।

বজ্রপাত শুনে যে দোয়া পড়তে হয়

আল্লাহর রাসুল বজ্রপাতের সময় কথা বন্ধ রাখতেন। আর বলতেন—

وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ

উচ্চারণ : ওয়া য়ুসাব্বিহুর রা’দু বিহামদিহি, ওয়াল মালাইকাতু মিন খিয়ফাতিহি। (সুরা রাদ, আয়াত : ১৩)

অর্থ : বজ্র ও সব ফেরেশতা সন্ত্রস্ত হয়ে তার প্রশংসা পাঠ করে।

 

এরপর বলেন, এটি দুনিয়াবাসীর জন্য চরম হুমকি। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৭২৩; মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৩৬৪১; আল-আজকার, হাদিস : ২৩৫)

ঝড়-তুফান ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার দোয়া

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এ দোয়া পড়তেন—

اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًا، اللَّهُمَّ صَيِّبًا هَنِيئًا، اللَّهُمَّ لاَ تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلاَ تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছায়্যিবান নাফিআ, আল্লাহুম্মা ছায়্যিবান হানীআ। আল্লাহুম্মা লা তাকতুলনা বি-গদাবিকা, ওয়া লা তুহলিকনা বি-আযাবিকা ওয়া আ-ফিনা ক্বাবলা যা-লিকা।

 

অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি আপনার গজব দিয়ে আমাদের হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন।’ (বুখারি, হাদিস : ৭২১; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫০; নাসায়ি, হাদিস : ৯২৭; আহমাদ, হাদিস : ৫৭৬৩; মিশকাত, হাদিস: ১৫২১)

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু

» তীব্র গরমে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করলেন ইউএনও

» লালমনিরহাটে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু

» ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার চেষ্টা

» দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করুন, আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

» প্রতিক্রিয়াশীল চক্র গণতন্ত্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে : পরশ

» আগামীকাল ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» বন্দনা করা ছাড়া জাপার কোনো রাজনীতি নেই: ফিরোজ রশিদ

» বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের

» থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বন্যার সময় যে দোয়া পড়বেন

প্রকৃতির যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা তারই অধীনে। কখনো প্রকৃতি বিরূপ রূপ ধারণ করে। রূঢ় ও রুষ্ট হয়, যাকে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলি। যেমন ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, ভারী বর্ষণ, বন্যা, খরা, দাবানল, শৈত্যপ্রবাহ, ভূমিকম্প, সুনামি প্রভৃতি।

 

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কিছু দোয়া বা আমলের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার সুযোগ রয়েছে। আজ সেসব আমলের কথাই তুলে ধরা হলো।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন, যেন তার উম্মতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দিয়ে একসঙ্গে ধ্বংস না করা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আল্লাহর রাসুল বেশি বেশি তাওবা-ইসতেগফার করতেন এবং অন্যান্যদেরকেও নির্দেশ তা পড়ার নির্দেশ দিতেন।

 

দুর্যোগের আল্লাহর রাসুল (সা.) যা করতেন

দমকা হওয়া বইতে দেখলে রাসুল (সা.) আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যেতেন এবং উদ্বিগ্ন হয়ে চলাফেরা করতেন। যখন বৃষ্টি হতো তখন তিনি খুশি হতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝোড়ো বাতাস বইত—তখন রাসুল (সা.) এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন—

اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা-ফিহা ওয়া শাররি মা-উরসিলাত বিহি।

 

হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির কল্যাণগুলো কামনা করছি, এই বৃষ্টিতে যেসব কল্যাণ রয়েছে সেগুলো কামনা করছি এবং এই বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর  আর এ বৃষ্টি ও বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সব রকম অকল্যাণ ও বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই।’

 

এরপর যখন বৃষ্টি হতো— তখন মহানবী (সা.) শান্ত হতেন। আয়েশা (রা.) আরো বলেন, ‘আমি রসুলুল্লাহ (সা.)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি যে লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি তা দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েন?’ এর জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে বৃষ্টি আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কি না। কেননা আগের উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে (বৃষ্টি বর্ষণের আকারে) আজাব পতিত হয়েছিল। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩২০৬; মুসলিম, হাদিস : ৮৯৯; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪৯)

বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার বা বৃষ্টি থামানোর দোয়া

প্রয়োজনমাফিক বৃষ্টি কল্যাণকর। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও বন্যা অবশ্যই খারাপ। যখন প্রবল বৃষ্টি হতো— তখন নবী (সা.) বলতেন,

اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا ولَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ علَى الآكَامِ والظِّرَابِ، وبُطُونِ الأوْدِيَةِ، ومَنَابِتِ الشَّجَرِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার। (বুখারি, হাদিস : ১০১৪)

 

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।

অতি বৃষ্টি বন্ধের দোয়া ও আমল

আনাস (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ! তখন আকাশে বিন্দুমাত্র মেঘের ছোঁয়াও ছিল না, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর দোয়ার পর দিগন্তে মেঘের উদ্ভাস হয়, কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো আকাশ ছেয়ে ফেলে, অতঃপর মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়।

 

আনাস (রা.) আরো বলেন, আল্লাহর শপথ! পরবর্তী ছয় দিন ধরে আমরা সূর্য দেখিনি। সপ্তাহান্তে পরবর্তী জুমায় পুনরায় ওই ব্যক্তি যখন মসজিদে প্রবেশ করে তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবারত অবস্থায়, ওই ব্যক্তি আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ধনসম্পদ সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পানিতে পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে, আল্লাহ তায়ালার কাছে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার প্রার্থনা করুন।

 

তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) দুই হাত উঁচিয়ে দোয়া করলেন—

اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا ولَا عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ علَى الآكَامِ والظِّرَابِ، وبُطُونِ الأوْدِيَةِ، ومَنَابِتِ الشَّجَرِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাওয়া-লাইনা, ওয়ালা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়াজ জিরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ; ওয়া মানাবিতিস শাজার। (বুখারি, হাদিস : ১০১৪)

 

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের ওপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং গাছ-উদ্ভিদ গজানোর স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।

বজ্রপাত শুনে যে দোয়া পড়তে হয়

আল্লাহর রাসুল বজ্রপাতের সময় কথা বন্ধ রাখতেন। আর বলতেন—

وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ

উচ্চারণ : ওয়া য়ুসাব্বিহুর রা’দু বিহামদিহি, ওয়াল মালাইকাতু মিন খিয়ফাতিহি। (সুরা রাদ, আয়াত : ১৩)

অর্থ : বজ্র ও সব ফেরেশতা সন্ত্রস্ত হয়ে তার প্রশংসা পাঠ করে।

 

এরপর বলেন, এটি দুনিয়াবাসীর জন্য চরম হুমকি। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৭২৩; মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৩৬৪১; আল-আজকার, হাদিস : ২৩৫)

ঝড়-তুফান ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার দোয়া

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এ দোয়া পড়তেন—

اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًا، اللَّهُمَّ صَيِّبًا هَنِيئًا، اللَّهُمَّ لاَ تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلاَ تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছায়্যিবান নাফিআ, আল্লাহুম্মা ছায়্যিবান হানীআ। আল্লাহুম্মা লা তাকতুলনা বি-গদাবিকা, ওয়া লা তুহলিকনা বি-আযাবিকা ওয়া আ-ফিনা ক্বাবলা যা-লিকা।

 

অর্থ : হে আল্লাহ, আপনি আপনার গজব দিয়ে আমাদের হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন।’ (বুখারি, হাদিস : ৭২১; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫০; নাসায়ি, হাদিস : ৯২৭; আহমাদ, হাদিস : ৫৭৬৩; মিশকাত, হাদিস: ১৫২১)

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com