প্রথম শহীদ মিনারের কারিগর নওগাঁর ডা. মঞ্জুর হোসেন

একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাঙালি জাতির চির প্রেরণা ও অবিস্মরণীয় একটি দিন। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, এখন সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোউজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর এই দিনটি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।

 

একুশে ফেব্রুয়ারীর প্রভাত ফেরিতে নগ্ন পায়ে, কালো ব্যাচ পরে শহীদ মিনারে গিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারী-বেসকারী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন আনুষ্ঠানিক ভাবে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কিন্তু যাদের বিনিময়ে এর সূচনা তার সঠিক ইতিহাস আমাদের অনেকেরই অজানা। যারা জীবনকে বাজী রেখে সংগ্রাম করেছিল যাদের অনুপ্রেরনায় জাতী আজ স্বাধীন। আমরা যে বাংলা ভাষায় মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি। যার হাতে তৈরী হয়েছিল প্রথম শহীদ মিনার। তিনি নওগাঁর কৃতি সন্তান ডা. মঞ্জুর হোসেন। তিনি ‘বিপ্লব দা’ হিসেবে খ্যাত।

পাঠ্য বইয়ের সিলেবাসে ভাষা সৈনিকদের আত্নজীবনী তুলে ধরা, তাদের স্বীকৃতি ও তার নিজ জেলায় বড় আকারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল।

 

জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার সুলতানপুর মহল্লার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান ডা. মঞ্জুর হোসেন। বাবা মোবারক আলী ও মা নুরুন নাহার এর আট সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ১৯২৮ সালে ১৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন। আর ১৯৬৮ সালে ৪ ডিসেম্বর মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিন্দ্রায় শায়িত আছেন। তিনি ১৯৪৩ সালে নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৪৫ সালে কলকাতা থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেও চাকুরি না করে আজীবন সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। এমবিবিএস পাশ করে নিজ জন্মভূমিতে পেশাজীবন শুরু করেন। তার চার ছেলে ও দুই মেয়ে।

 

বায়ান্নর ভাষা আান্দোলনে অত্যন্ত সাহসী ও সংগ্রামী ভূমিকায় ছিলেন ডা. মঞ্জুর হোসেন। তখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র। ১৯৪৯ সালে সরকারি স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দিবসে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে গোলাম মাওলার কক্ষে ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সংগ্রাম কমিটিতে মতবিরোধ দেখা দেয়। সেখানে তিনি সাহসী ও দৃপ্ত কন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন ‘চুয়াল্লিশ ধারা ভাঙ্গবোই ভাঙ্গবো।’ মেডিকেল ব্যারাকে এক স্বতস্ফুর্ত সমাবেশে প্রতিবাদি বক্তব্য দিয়েছিলেন ডা. মঞ্জুর হোসেন। সভায় রাতে ফজলুল হক হলের পুকুর পাড়ে ১১জন ছাত্র নেতার ১৪৪ ধারা ভঙ্গের চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের গোপন বৈঠকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন তিনি।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে দলে দলে ছাত্র-ছাত্রীরা চারজন করে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে এক ধরণের সত্যাগ্রহে অংশগ্রহন করে। স্লোগান দিয়ে বের হলে পুলিশ এসে ছাত্রদের গ্রেফতার করে ট্রাকে ভর্তি করে। এক পর্যায়ে প্রায় ১০ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রী গ্রেফতার, লাঠিচার্জ ও কাঁদানো গ্যাস ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে জমায়েত হয়। বেলা ৩টায় পরিষদের অধিবেশনের পূর্বেই ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ বিকেল ৪টার দিকে গুলি চালায়।

 

এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন হাবিবুর রহমান শেলী, ডা. মঞ্জুর হোসেন ও আকমল হোসেন। দ্বিতীয় দলে ছিল ইব্রাহিম তোয়াহা, আব্দুস সামাদ, আনোয়ারুল হক খান, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। ছাত্রীদের মধ্যে শাফিয়া খাতুন, নিলীমা ইব্রাহিম, রওশন আরা বাচ্চু ও শামসুন নাহার। ওইদিন ২৩ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে কয়েকজন ছাত্রনেতা শহীদের স্মৃতির উদ্যেশ্যে রাতেই নিজেরা ইট, সিমেন্ট ও বালু দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। এই প্রথম শহীদ মিনারের অন্যতম কারিগর ছিলেন ডা. মঞ্জুর হোসেন। পরদিন ২৪ শে ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলে। সরকার বিরোধী বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে অত্যান্ত সাহসী ও সংগ্রামী ভূমিকা পালন করায় সহযোদ্ধারা তাকে ‘বিপ্লব দা’ উপাধি দিয়েছিল।

 

একুশে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় তিনি গ্রেফতার হন এবং করাভোগ করেন। আন্দোলন ছাড়াও পরবর্তীকালে সংঘটিত এ দেশের বহু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৈনিক ছিলেন তিনি। পাকিস্থান সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার কারণে ১৭বার গ্রেফতার হয়েছিলেন।

 

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের চিকিৎসা প্রদান করেছেন। গরিব রোগীদের বিনা টাকায় চিকিৎসা এবং এমনকি তাদের ঔষধ পর্যন্ত কিনে দিয়েছেন। অনেক জটিল রোগীকে নিজ খরচে ঢাকা পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। গরীবের ডাক্তার হিসেবে খ্যাত চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সাথেও জড়িত ছিলেন। বাবার উদ্যোগ ও সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘সাপ্তহিক দেশ বানী’র সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬৪ সালে ‘তহশীলদারের দূর্ব্যবহার পরিণামে গলায় গামছা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলায় হয়। এতে নিম্ন আদালতে তিন মাসের কারাদন্ড হয়। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। এছাড়া তিনি আবৃত্তি, সংগীতচর্চা ও লেখালেখি করতেন।

 

রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন একজন নির্লোভ, ত্যাগী সৎ ও আদর্শবান মানুষ। সারাজীবন সংসার ও নিজের জন্য কিছু না করে নওগাঁবাসী তথা দেশ ও জাতির জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এর রাজশাহী জেলার সভাপতি পদে আসীন ছিলেন। নওগাঁর স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ’ তাদের নিজস্ব গবেষণায় ডা. মঞ্জুর হোসেন ইতিহাস তুলে ধরেন।

 

ডা. মঞ্জুর হোসেনের তৃতীয় ছেলে নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হাসান ইমাম তমাল বলেন, যে ১১ জন এর নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গা হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আমার বাবা। বিশে^র মধ্যে একমাত্র আমরাই যারা ভাষার জন্য সংগ্রাম করেছি। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সংগ্রাম শুরু হয়ে ১৯৭১ এ দেশ স্বাধীনের মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হয়। ভাষা সংগ্রামে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ সরকার ২০০২ সালে বাবাকে ‘একুশে পদক (মরণোত্তর)’ দেওয়া হয়। সে সময় ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের অনেকেই এখনো স্বৃকীতি পাননি।

 

তিনি বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি আসলে শহীদ মিনারে আমরা হুড়োহুড়ি করে ফুল দিয়। এখনো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই। আগামী প্রজন্ম জানবে না শহীদ মিনার আসলে কি। সরকারের উচিৎ পাঠ্য বইয়ের সিলেবাসে ভাষা সৈনিকদের আত্নজীবনী তলে ধরা এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে তাদের মর্যাদা প্রদান করা। এছাড়া সারাদেশে একই আদলে শহীদ মিনার তৈরীর পাশাপাশি নওগাঁয় বড় আকারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার তৈরী দাবী জানান তিনি।

 

স্বামীর স্মৃতিচারণ করে মরহুম ডা. মঞ্জুর হোসেন এর স্ত্রী জাকেরা জামানী বলেন, একদিন বিকেলে বাজার করার জন্য ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি ফিরে না। পরে লোকজন এসে জানায় স্বামীকে পুলিশরা ধরে গেছে। সন্ধ্যার পর ছেলেরা বাজার করে নিয়ে আসার পর রাতের রান্না হয়। তিনি নিজের জন্য কিছুই করেননি। সব সময় সমস্যার মধ্যে তার জীবনটা কেটেছে। অনেকবার জেলহাজত খেটেছে।

 

ডা. মঞ্জুর হোসেন এর চাচাতো ভাই বয়জেষ্ঠ্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনি ছিলেন সিংহপুরুষ। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন থেকে দেখতাম ভাই ছিলেন পরিশ্রমি ও মিশুক প্রকৃতির। এরপর আমাদের যখন একটু বুদ্ধি হলো তখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াশুনা শুরু করেন। তখন তার কাছ থেকে শুনতাম ভাষা আন্দোলনের কথা। যা শুনে আমাদের গা শিহরিত হয়ে উঠত।

 

একুশে পরিষদ নওগাঁ’র সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ১৯৫২ সালে অগ্নিঝরা দিনগুলোতে সামনের সারিতে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন- ডা. মঞ্জুর হোসেন। তাকে ‘বিপ্লব দা’ হিসেবে সবাই চিনতেন। ভাষা সংগ্রামে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ফ্রিতে রোগীদের চিকিৎসা দিতেন। ডা. মঞ্জুর হোসেন ছিলেন একটি অবিস্মরণীয় নাম, একজন দ্রোহের প্রতীক এবং সাম্যবাদী মানুষ। তিনি মনে প্রাণে যা বিশ^াস করতেন তাই করতেন। তার যাপিত জীবন ছিল ত্যাগের এবং মহিমান্বিত।

 

তিনি বলেন, ভাষা সৈনিকদের মধ্যে স্থানীয় ভাবে ১৯৯৫ সালে ডা. মঞ্জুর হোসেনকে প্রথম একুশে পরিষদ পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। এমনকি তিনি যেখানে চিরনিন্দ্রায় শায়িত আছেন সে কবরটিও অনেকগুলো কবরের মধ্যে সনাক্তকরণ ছিল না। পরবর্তীতে একুশের পরিষদ নওগাঁ’র উদ্যোগে ২০১১ সালে কবর সনাক্ত করে বাঁধাই করে ফলক লাগানো হয়। যেখানে প্রতি বছরের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও পুষ্পস্তর্বক অর্পণ করা হয় বলে জানান এ সংগঠক।

 

ভাষা সৈনিক ডা. মঞ্জুর হোসেন এর জীবনি স্মরণ করে সাংবাদিক ও কলামিষ্ট, মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাষার জন্য ঢাকায় আন্দোলন শুরু হয় তখন আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে অনেকেই শহীদ হন। এরপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সে সময় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হলে নওগাঁয় চলে আসেন। এরপর ডা. আমজাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট বয়তুল্ল্যাহ, এমএ রকীব ও খন্দকার মকবুল হোসেনকে নিয়ে ভাষা সংগ্রাম সংগঠিত করে হরতাল ও অবরোধ সহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেন। ভাষা যদি না থাকে আমাদের অস্বিত্ব থাকবে না। ভাষা কেন্দ্রীক যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা অল্প সময়ে তিনি নওগাঁর মানুষদের বোঝাতে এবং প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তার একটা বড় ভূমিকা ছিল। আমরা নওগাঁসহ দেশবাসী তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। জেলায় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো ভাল ভাবে সম্পূর্নের জন্য একটা বড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার তৈরীর দাবী জানান তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যৌথসভা ডেকেছে আওয়ামী লীগ

» ভোট পড়ার হার সন্তোষজনক: কাদের

» ‘গ্রামে নিজেরা উৎপাদন করছেন যারা, তাদের খুব একটা কষ্ট নেই’

» ভোট গণনা চলছে

» উপজেলা নির্বাচনে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি

» ইসলামপুরে পার্থশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্দ্যোগে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত

» নতুন হ্যান্ডসেট এ৬০ নিয়ে এসেছে অপো

» স্মার্টফোনের বাজারে এলো রিয়েলমি সি৬৫

» নগদ মেগা ক্যাম্পেইনের উপহার বুঝে পেলেন ২১ বিজয়ী

» অবৈধ স্টিকার লাগানো যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্রথম শহীদ মিনারের কারিগর নওগাঁর ডা. মঞ্জুর হোসেন

একুশে ফেব্রুয়ারি’ বাঙালি জাতির চির প্রেরণা ও অবিস্মরণীয় একটি দিন। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, এখন সারা বিশ্বের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্য দেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে। জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোউজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর এই দিনটি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।

 

একুশে ফেব্রুয়ারীর প্রভাত ফেরিতে নগ্ন পায়ে, কালো ব্যাচ পরে শহীদ মিনারে গিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারী-বেসকারী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন আনুষ্ঠানিক ভাবে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কিন্তু যাদের বিনিময়ে এর সূচনা তার সঠিক ইতিহাস আমাদের অনেকেরই অজানা। যারা জীবনকে বাজী রেখে সংগ্রাম করেছিল যাদের অনুপ্রেরনায় জাতী আজ স্বাধীন। আমরা যে বাংলা ভাষায় মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি। যার হাতে তৈরী হয়েছিল প্রথম শহীদ মিনার। তিনি নওগাঁর কৃতি সন্তান ডা. মঞ্জুর হোসেন। তিনি ‘বিপ্লব দা’ হিসেবে খ্যাত।

পাঠ্য বইয়ের সিলেবাসে ভাষা সৈনিকদের আত্নজীবনী তুলে ধরা, তাদের স্বীকৃতি ও তার নিজ জেলায় বড় আকারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠার দাবী জানিয়েছে সচেতন মহল।

 

জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার সুলতানপুর মহল্লার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান ডা. মঞ্জুর হোসেন। বাবা মোবারক আলী ও মা নুরুন নাহার এর আট সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ১৯২৮ সালে ১৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন। আর ১৯৬৮ সালে ৪ ডিসেম্বর মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিন্দ্রায় শায়িত আছেন। তিনি ১৯৪৩ সালে নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৪৫ সালে কলকাতা থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৫৯ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেও চাকুরি না করে আজীবন সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। এমবিবিএস পাশ করে নিজ জন্মভূমিতে পেশাজীবন শুরু করেন। তার চার ছেলে ও দুই মেয়ে।

 

বায়ান্নর ভাষা আান্দোলনে অত্যন্ত সাহসী ও সংগ্রামী ভূমিকায় ছিলেন ডা. মঞ্জুর হোসেন। তখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র। ১৯৪৯ সালে সরকারি স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দিবসে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে গোলাম মাওলার কক্ষে ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সংগ্রাম কমিটিতে মতবিরোধ দেখা দেয়। সেখানে তিনি সাহসী ও দৃপ্ত কন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন ‘চুয়াল্লিশ ধারা ভাঙ্গবোই ভাঙ্গবো।’ মেডিকেল ব্যারাকে এক স্বতস্ফুর্ত সমাবেশে প্রতিবাদি বক্তব্য দিয়েছিলেন ডা. মঞ্জুর হোসেন। সভায় রাতে ফজলুল হক হলের পুকুর পাড়ে ১১জন ছাত্র নেতার ১৪৪ ধারা ভঙ্গের চুড়ান্ত সিদ্ধান্তের গোপন বৈঠকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন তিনি।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে দলে দলে ছাত্র-ছাত্রীরা চারজন করে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে এক ধরণের সত্যাগ্রহে অংশগ্রহন করে। স্লোগান দিয়ে বের হলে পুলিশ এসে ছাত্রদের গ্রেফতার করে ট্রাকে ভর্তি করে। এক পর্যায়ে প্রায় ১০ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রী গ্রেফতার, লাঠিচার্জ ও কাঁদানো গ্যাস ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে জমায়েত হয়। বেলা ৩টায় পরিষদের অধিবেশনের পূর্বেই ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ বিকেল ৪টার দিকে গুলি চালায়।

 

এই দলের নেতৃত্বে ছিলেন হাবিবুর রহমান শেলী, ডা. মঞ্জুর হোসেন ও আকমল হোসেন। দ্বিতীয় দলে ছিল ইব্রাহিম তোয়াহা, আব্দুস সামাদ, আনোয়ারুল হক খান, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ। ছাত্রীদের মধ্যে শাফিয়া খাতুন, নিলীমা ইব্রাহিম, রওশন আরা বাচ্চু ও শামসুন নাহার। ওইদিন ২৩ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে কয়েকজন ছাত্রনেতা শহীদের স্মৃতির উদ্যেশ্যে রাতেই নিজেরা ইট, সিমেন্ট ও বালু দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেন। এই প্রথম শহীদ মিনারের অন্যতম কারিগর ছিলেন ডা. মঞ্জুর হোসেন। পরদিন ২৪ শে ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী শহীদ মিনারটি ভেঙে ফেলে। সরকার বিরোধী বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য তিনি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে অত্যান্ত সাহসী ও সংগ্রামী ভূমিকা পালন করায় সহযোদ্ধারা তাকে ‘বিপ্লব দা’ উপাধি দিয়েছিল।

 

একুশে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় তিনি গ্রেফতার হন এবং করাভোগ করেন। আন্দোলন ছাড়াও পরবর্তীকালে সংঘটিত এ দেশের বহু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৈনিক ছিলেন তিনি। পাকিস্থান সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার কারণে ১৭বার গ্রেফতার হয়েছিলেন।

 

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের চিকিৎসা প্রদান করেছেন। গরিব রোগীদের বিনা টাকায় চিকিৎসা এবং এমনকি তাদের ঔষধ পর্যন্ত কিনে দিয়েছেন। অনেক জটিল রোগীকে নিজ খরচে ঢাকা পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। গরীবের ডাক্তার হিসেবে খ্যাত চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতার সাথেও জড়িত ছিলেন। বাবার উদ্যোগ ও সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘সাপ্তহিক দেশ বানী’র সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন ১৯৬০ সালে। ১৯৬৪ সালে ‘তহশীলদারের দূর্ব্যবহার পরিণামে গলায় গামছা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে পত্রিকার বিরুদ্ধে মামলায় হয়। এতে নিম্ন আদালতে তিন মাসের কারাদন্ড হয়। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন। এছাড়া তিনি আবৃত্তি, সংগীতচর্চা ও লেখালেখি করতেন।

 

রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন একজন নির্লোভ, ত্যাগী সৎ ও আদর্শবান মানুষ। সারাজীবন সংসার ও নিজের জন্য কিছু না করে নওগাঁবাসী তথা দেশ ও জাতির জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) এর রাজশাহী জেলার সভাপতি পদে আসীন ছিলেন। নওগাঁর স্থানীয় একটি সামাজিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ’ তাদের নিজস্ব গবেষণায় ডা. মঞ্জুর হোসেন ইতিহাস তুলে ধরেন।

 

ডা. মঞ্জুর হোসেনের তৃতীয় ছেলে নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর হাসান ইমাম তমাল বলেন, যে ১১ জন এর নেতৃত্বে ১৪৪ ধারা ভাঙ্গা হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আমার বাবা। বিশে^র মধ্যে একমাত্র আমরাই যারা ভাষার জন্য সংগ্রাম করেছি। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সংগ্রাম শুরু হয়ে ১৯৭১ এ দেশ স্বাধীনের মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হয়। ভাষা সংগ্রামে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ সরকার ২০০২ সালে বাবাকে ‘একুশে পদক (মরণোত্তর)’ দেওয়া হয়। সে সময় ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের অনেকেই এখনো স্বৃকীতি পাননি।

 

তিনি বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি আসলে শহীদ মিনারে আমরা হুড়োহুড়ি করে ফুল দিয়। এখনো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নাই। আগামী প্রজন্ম জানবে না শহীদ মিনার আসলে কি। সরকারের উচিৎ পাঠ্য বইয়ের সিলেবাসে ভাষা সৈনিকদের আত্নজীবনী তলে ধরা এবং রাষ্ট্রীয় ভাবে তাদের মর্যাদা প্রদান করা। এছাড়া সারাদেশে একই আদলে শহীদ মিনার তৈরীর পাশাপাশি নওগাঁয় বড় আকারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার তৈরী দাবী জানান তিনি।

 

স্বামীর স্মৃতিচারণ করে মরহুম ডা. মঞ্জুর হোসেন এর স্ত্রী জাকেরা জামানী বলেন, একদিন বিকেলে বাজার করার জন্য ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ি ফিরে না। পরে লোকজন এসে জানায় স্বামীকে পুলিশরা ধরে গেছে। সন্ধ্যার পর ছেলেরা বাজার করে নিয়ে আসার পর রাতের রান্না হয়। তিনি নিজের জন্য কিছুই করেননি। সব সময় সমস্যার মধ্যে তার জীবনটা কেটেছে। অনেকবার জেলহাজত খেটেছে।

 

ডা. মঞ্জুর হোসেন এর চাচাতো ভাই বয়জেষ্ঠ্য মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনি ছিলেন সিংহপুরুষ। আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন থেকে দেখতাম ভাই ছিলেন পরিশ্রমি ও মিশুক প্রকৃতির। এরপর আমাদের যখন একটু বুদ্ধি হলো তখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়াশুনা শুরু করেন। তখন তার কাছ থেকে শুনতাম ভাষা আন্দোলনের কথা। যা শুনে আমাদের গা শিহরিত হয়ে উঠত।

 

একুশে পরিষদ নওগাঁ’র সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ১৯৫২ সালে অগ্নিঝরা দিনগুলোতে সামনের সারিতে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন- ডা. মঞ্জুর হোসেন। তাকে ‘বিপ্লব দা’ হিসেবে সবাই চিনতেন। ভাষা সংগ্রামে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি ফ্রিতে রোগীদের চিকিৎসা দিতেন। ডা. মঞ্জুর হোসেন ছিলেন একটি অবিস্মরণীয় নাম, একজন দ্রোহের প্রতীক এবং সাম্যবাদী মানুষ। তিনি মনে প্রাণে যা বিশ^াস করতেন তাই করতেন। তার যাপিত জীবন ছিল ত্যাগের এবং মহিমান্বিত।

 

তিনি বলেন, ভাষা সৈনিকদের মধ্যে স্থানীয় ভাবে ১৯৯৫ সালে ডা. মঞ্জুর হোসেনকে প্রথম একুশে পরিষদ পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। এমনকি তিনি যেখানে চিরনিন্দ্রায় শায়িত আছেন সে কবরটিও অনেকগুলো কবরের মধ্যে সনাক্তকরণ ছিল না। পরবর্তীতে একুশের পরিষদ নওগাঁ’র উদ্যোগে ২০১১ সালে কবর সনাক্ত করে বাঁধাই করে ফলক লাগানো হয়। যেখানে প্রতি বছরের ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও পুষ্পস্তর্বক অর্পণ করা হয় বলে জানান এ সংগঠক।

 

ভাষা সৈনিক ডা. মঞ্জুর হোসেন এর জীবনি স্মরণ করে সাংবাদিক ও কলামিষ্ট, মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাষার জন্য ঢাকায় আন্দোলন শুরু হয় তখন আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়। এতে অনেকেই শহীদ হন। এরপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সে সময় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হলে নওগাঁয় চলে আসেন। এরপর ডা. আমজাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট বয়তুল্ল্যাহ, এমএ রকীব ও খন্দকার মকবুল হোসেনকে নিয়ে ভাষা সংগ্রাম সংগঠিত করে হরতাল ও অবরোধ সহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেন। ভাষা যদি না থাকে আমাদের অস্বিত্ব থাকবে না। ভাষা কেন্দ্রীক যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা অল্প সময়ে তিনি নওগাঁর মানুষদের বোঝাতে এবং প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তার একটা বড় ভূমিকা ছিল। আমরা নওগাঁসহ দেশবাসী তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। জেলায় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো ভাল ভাবে সম্পূর্নের জন্য একটা বড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার তৈরীর দাবী জানান তিনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com