সংগৃহীত ছবি
ধর্ম ডেস্ক :শিশুর জন্মের পর আকিকা দেওয়া ইসলামের একটি বিধান। প্রিয়নবী (স.) উম্মতকে নবজাতকের জন্য আকিকা দিতে উৎসাহ দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সন্তানের সঙ্গে আকিকার বিধান রয়েছে। তোমরা তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করো (অর্থাৎ পশু জবাই করো) এবং সন্তানের শরীর থেকে কষ্টদায়ক বস্তু (চুল) দূর করে দাও।’ (বুখারি: ৫৪৭২)
আকিকা কখন করতে হয়
সাধারণত সন্তান ভূমিষ্ঠের সপ্তম দিনে আকিকা করা উত্তম। তবে যদি কেউ কারণবশত সপ্তম দিনে না করতে পারে, তাহলে পরবর্তীতে যেকোনো দিন আদায় করতে পারবে। (ইবনুল কাইয়িম, তুহফাতুল মাওদুদ: ৬৩ পৃ; ফতোয়া লাজনা দায়েমা: ১৭৭৬; মাজমু ফতোয়া উসাইমিন: ২৫/২১৫)
নিজের আকিকা করা যাবে?
ছোটবেলায় আকিকা করা না হলে সে বড় হয়ে নিজের আকিকা নিজে করতে চায় সেটারও সুযোগ আছে। বিখ্যাত তাবেয়ি মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন (রহ) বলেন, আমি যদি জানতাম যে, আমার আকিকা করা হয়নি তাহলে আমি নিজেই আমার আকিকা করতাম। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২৪৭১)
সন্তানের আকিকার দায়িত্ব বাবার
সন্তানের আকিকা করার দায়িত্ব সাধারণত বাবার। তার সামর্থ্য না থাকলে যদি মা সামর্থ্যবান হন তাহলে মা সন্তানের আকিকা করবেন অথবা তাঁদের পক্ষ থেকে দাদা-দাদি, নানা-নানি আকিকা আদায় করতে পারবেন। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ৩০/২৭৭)
আকিকা কয়টি করতে হয়
ছেলেসন্তানের পক্ষ থেকে একই ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করা সুন্নত। (ফতোয়ায়ে শামি: ৬/৩৩৬) তবে, ছেলের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করলেও মোস্তাহাব আদায় হয়ে যাবে। যদিও দুটি করা উত্তম। (রদ্দুল মুহতার: ৫/২১৩, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ: ৩০/২৭৭)
আকিকার পশু যেমন হবে
যেসব জন্তু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না, সেসব জন্তু দিয়ে আকিকাও শুদ্ধ হয় না। তাই আকিকার ক্ষেত্রে জন্তুর বয়স ও ধরনের দিক থেকে কোরবানির জন্তুর গুণ পাওয়া যায়, এমন জন্তুই নির্বাচন করতে হবে। (তিরমিজি: খ. ৪, পৃ-১০১)
আকিকার গোশত বণ্টনের বিধান
আকিকার গোশত বণ্টন সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামের মত হলো- আকিকা ও কোরবানির গোশতের হুকুম একই। অর্থাৎ কোরবানির গোশত যেমন তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের জন্য রাখা, এক ভাগ গরিবকে দেয়া ও একভাগ আত্মীয়দের মাঝে বণ্টন করা উত্তম। আবার ইচ্ছে করলে পুরোটাই নিজের জন্য রাখা জায়েজ আছে। ‘কাঁচা ও রান্না করা উভয়টিই বণ্টন করা যাবে। সর্বস্তরের লোক তা খেতে পারবে। এমনকি নিজের মা-বাবা, নানা-নানি, ধনী-গরিব সবাই নিশ্চিন্তে আকিকার গোশত খেতে পারবে।’ (ফতোয়ায়ে শামি: ৬/৩৩৬)
কোরবানির পশুতে আকিকা করার নিয়ম
কোরবানির জন্তুর সঙ্গে আকিকা করার নিয়ম হলো- একটি বড় পশুতে তিন শরিক কোরবানি হলে সেখানে আরো দু-এক শরিক আকিকার জন্যও দেওয়া যেতে পারে। তদ্রূপ কোরবানির মতো একই পশুতে একাধিক ব্যক্তি শরিক হয়ে আকিকা আদায় করতে পারবে। (দুররুল হুক্কাম: ১/২৬৬)