নিউমার্কেটে কেন সংঘাত বারবার

ঈদবাজারের জমজমাট বেচাকেনা রেখে দুই দিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র নিউমার্কেট এলাকা। কয়েকটি মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের এ সংঘাতে দুজন প্রাণ হারিয়েছেন। হাসপাতালে ধুঁকছেন আরও কয়েকজন। আহত হয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিকসহ অনেকে। দুই দিন ধরে চলা এ সংঘাতের আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। নিউমার্কেট এলাকায় বারবার কেন ঘটছে এমন সংঘাতের ঘটনা? এ নিয়ে উভয় পক্ষ থেকেই অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ঢাকা কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ও পুলিশের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাথ এবং বিভিন্ন মার্কেট থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নিম্নমানের পণ্যে বেশি দাম হাঁকিয়ে ক্রেতাদের নাজেহাল করার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সংঘাতের শেষ দিনে বিভিন্ন কলেজের ছাত্রীরাও মিছিল করে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার, টিজিং ও নাজেহাল করার অভিযোগ তুলেছেন। নিউমার্কেট ও তৎসংলগ্ন মার্কেটগুলোর বিরুদ্ধে ক্রেতা হয়রানির এমন অভিযোগ সাধারণ ক্রেতারাও বিভিন্ন সময় তুলে ধরেছেন। এর প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন মার্কেটের কর্মচারীদের আচরণগত পরিবর্তন আনার দাবি উঠেছে। রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, হকার্স কিংবা চন্দ্রিমা মার্কেট। এলাকার নাম ছাপিয়ে মার্কেটের পরিচিতিই বেশি। ঈদ কিংবা পুজো উৎসব নয়, সব সময়ই ব্যবসা-বাণিজ্যে সরগরম থাকে এলাকাটি। ধানমন্ডি ও শাহবাগের মধ্যবর্তী এ এলাকায় ২০-২২টি বড় মার্কেট-শপিং মল ও ফুটপাথকেন্দ্রিক হাজার হাজার ক্ষুদ্র দোকানে সব মৌসুমেই জমজমাট অবস্থা বিরাজ করে। এ ছাড়া নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের বাগ্‌বিতণ্ডা থেকে শুরু করে হাতাহাতি এবং সংঘর্ষ নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে মারমুখী অবস্থান নেয় দুই পক্ষ। সর্বশেষ সোমবার রাত ও মঙ্গলবার দিনভর সংঘর্ষের জেরে প্রাণ গেছে অন্তত দুজনের। নিরীহ তরুণ নাহিদ হোসেন ছাড়াও প্রাণ হারিয়েছেন মোরসালিন নামে এক দোকান কর্মচারী। এ সংঘর্ষের জেরে তীব্র যানজটে নাকাল হতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। নিউমার্কেটসহ আশপাশের ব্যবসায়ীদের দাবি, ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয়ে রেস্তোরাঁয় খেয়ে টাকা কম দেওয়া, কাপড়-বই ইত্যাদি কিনে টাকা কম দেওয়া এবং কখনো কখনো টাকা না দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এসব নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরেই মূলত তাদের সঙ্গে ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সংঘাত বাধে। অনেক সময় ছাত্রদের একটা অংশ কিছু ব্যবসায়ীর পক্ষে মার্কেটে গিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেন বলে কারও কারও অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের একটা অংশের ভাষ্য, ঈদের মতো বড় উৎসবের আগে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এককালীন মোটা অঙ্কের চাঁদা চান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ছাত্ররা। এর সঙ্গে সাবেক ছাত্রনেতারাও জড়িত। এসব নিয়েও সূত্রপাত হয়। ঢাকা কলেজের আশপাশে বড় মার্কেটের মধ্যে নিউমার্কেট ছাড়াও আছে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূরজাহান মার্কেট, চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্স, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, গ্লোব শপিং সেন্টার ও নীলক্ষেত বইয়ের মার্কেট। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা ও তাদের কর্মচারীরা প্রায়ই দুর্ব্যবহার করেন। পণ্যের অতিরিক্ত দাম চান। বিশেষ করে নারীদের সঙ্গে তারা অশোভন আচরণ করেন। প্রতিবাদ করতে গেলেই তারা মারমুখী হন। সর্বশেষ সংঘাতের ঘটনায় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটা অংশ মিছিল করে। ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীরাও তাদের সমর্থন জানান। বুধবার ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে মিছিল করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীও দোকান মালিক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কাছে। নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত বিভিন্ন মার্কেট ছাড়াও ফুটপাথে হরেক পণ্যের অসংখ্য অস্থায়ী দোকান বসে। অভিযোগ আছে, টাকার বিনিময়ে মানুষের হাঁটার জায়গায় পণ্য নিয়ে বসার সুযোগ করে দেন সাবেক ও বর্তমান ছাত্রনেতার একটা অংশ, স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য। এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা নেওয়া হয়। ঈদের মতো বড় উৎসবে দিতে হয় এককালীন বড় অঙ্কের টাকা। এ ছাড়া ঢাকা কলেজের কিছু ছাত্র বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের কাছে উপঢৌকন দাবি করেন। জানা গেছে, নীলক্ষেত থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত ফুটপাথের জায়গা অনেক দিন ধরে কতিপয় ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে। তারা আবার তা অন্যদের কাছে ভাড়া দেন। দোকানভেদে মাসিক ১০-১৫ হাজার বা এর বেশি টাকায় ফুটপাথের জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়। এ অর্থের একটি অংশ পুলিশ, আরেকটি অংশ নিয়ন্ত্রকদের পকেটে যায়। যেসব দোকানের জায়গা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে সেগুলোয় পুলিশের লাইনম্যানদেরও নিয়মিত টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে দোকান তুলে দেওয়া হয়। ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা ফুটপাথের দখল ধরে রাখতে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এসব বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স ম কাইয়ূম বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। কেউ কখনো এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি।’ চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্সের কয়েকজন দোকান কর্মচারী বলেন, ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয়ে কিছু যুবক প্রায়ই মার্কেটে এসে কাপড় নিয়ে কম দাম দিয়ে চলে যান। প্রতিবাদ করলে তারা নানা হুমকি-ধমকি দেন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক-কর্মচারীদের দিকে। তারা বলছেন, দোকানকর্মীদের দুর্ব্যবহারের কারণে মাঝেমধ্যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে। ছাত্ররা কোনো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নন। ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিলেই ব্যবসায়ীরা পণ্যের অতিরিক্ত দাম চান। এ নিয়ে কখনো কখনো তর্কাতর্কি হয়। অনেক দিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবারের সংঘাতে। ঢাকা কলেজের ছাত্ররা জানান, এ কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরাও তাদের সমর্থনে মিছিল করেছেন। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ৮১১ জন আসামি গ্রেফতার

» নির্বাচনী বাজেটে কোনো কার্পণ্য করা হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

» ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

» জুলাই শহীদদের স্মরণে গণসংহতির শ্রদ্ধা, সরকারকে সতর্ক করলেন সাকি

» ইউপিডিএফ সদস্য গ্রেপ্তার

» ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, প্রতিবছর অভ্যুত্থান স্মরণের অঙ্গীকার

» জুলাই গণহত্যা : শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির পক্ষে শুনানি সোমবার

» ‘জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া

» জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন করেই ছাড়বো: নাহিদ ইসলাম

» আসিফ মাহমুদের অস্ত্র রাখার বিষয়টি আইনত অপরাধ, বিচার করা উচিত : নিলুফার মনি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নিউমার্কেটে কেন সংঘাত বারবার

ঈদবাজারের জমজমাট বেচাকেনা রেখে দুই দিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানীর অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র নিউমার্কেট এলাকা। কয়েকটি মার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের এ সংঘাতে দুজন প্রাণ হারিয়েছেন। হাসপাতালে ধুঁকছেন আরও কয়েকজন। আহত হয়েছেন কয়েকজন সাংবাদিকসহ অনেকে। দুই দিন ধরে চলা এ সংঘাতের আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। নিউমার্কেট এলাকায় বারবার কেন ঘটছে এমন সংঘাতের ঘটনা? এ নিয়ে উভয় পক্ষ থেকেই অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ঢাকা কলেজের কিছু শিক্ষার্থী ও পুলিশের বিরুদ্ধে নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাথ এবং বিভিন্ন মার্কেট থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ক্রেতাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নিম্নমানের পণ্যে বেশি দাম হাঁকিয়ে ক্রেতাদের নাজেহাল করার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সংঘাতের শেষ দিনে বিভিন্ন কলেজের ছাত্রীরাও মিছিল করে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার, টিজিং ও নাজেহাল করার অভিযোগ তুলেছেন। নিউমার্কেট ও তৎসংলগ্ন মার্কেটগুলোর বিরুদ্ধে ক্রেতা হয়রানির এমন অভিযোগ সাধারণ ক্রেতারাও বিভিন্ন সময় তুলে ধরেছেন। এর প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্ন মার্কেটের কর্মচারীদের আচরণগত পরিবর্তন আনার দাবি উঠেছে। রাজধানীর নিউমার্কেট, গাউছিয়া, হকার্স কিংবা চন্দ্রিমা মার্কেট। এলাকার নাম ছাপিয়ে মার্কেটের পরিচিতিই বেশি। ঈদ কিংবা পুজো উৎসব নয়, সব সময়ই ব্যবসা-বাণিজ্যে সরগরম থাকে এলাকাটি। ধানমন্ডি ও শাহবাগের মধ্যবর্তী এ এলাকায় ২০-২২টি বড় মার্কেট-শপিং মল ও ফুটপাথকেন্দ্রিক হাজার হাজার ক্ষুদ্র দোকানে সব মৌসুমেই জমজমাট অবস্থা বিরাজ করে। এ ছাড়া নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের বাগ্‌বিতণ্ডা থেকে শুরু করে হাতাহাতি এবং সংঘর্ষ নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে মারমুখী অবস্থান নেয় দুই পক্ষ। সর্বশেষ সোমবার রাত ও মঙ্গলবার দিনভর সংঘর্ষের জেরে প্রাণ গেছে অন্তত দুজনের। নিরীহ তরুণ নাহিদ হোসেন ছাড়াও প্রাণ হারিয়েছেন মোরসালিন নামে এক দোকান কর্মচারী। এ সংঘর্ষের জেরে তীব্র যানজটে নাকাল হতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে। নিউমার্কেটসহ আশপাশের ব্যবসায়ীদের দাবি, ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয়ে রেস্তোরাঁয় খেয়ে টাকা কম দেওয়া, কাপড়-বই ইত্যাদি কিনে টাকা কম দেওয়া এবং কখনো কখনো টাকা না দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এসব নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরেই মূলত তাদের সঙ্গে ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের সংঘাত বাধে। অনেক সময় ছাত্রদের একটা অংশ কিছু ব্যবসায়ীর পক্ষে মার্কেটে গিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করেন বলে কারও কারও অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের একটা অংশের ভাষ্য, ঈদের মতো বড় উৎসবের আগে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এককালীন মোটা অঙ্কের চাঁদা চান রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ছাত্ররা। এর সঙ্গে সাবেক ছাত্রনেতারাও জড়িত। এসব নিয়েও সূত্রপাত হয়। ঢাকা কলেজের আশপাশে বড় মার্কেটের মধ্যে নিউমার্কেট ছাড়াও আছে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূরজাহান মার্কেট, চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্স, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, গ্লোব শপিং সেন্টার ও নীলক্ষেত বইয়ের মার্কেট। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা ও তাদের কর্মচারীরা প্রায়ই দুর্ব্যবহার করেন। পণ্যের অতিরিক্ত দাম চান। বিশেষ করে নারীদের সঙ্গে তারা অশোভন আচরণ করেন। প্রতিবাদ করতে গেলেই তারা মারমুখী হন। সর্বশেষ সংঘাতের ঘটনায় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সমর্থনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটা অংশ মিছিল করে। ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীরাও তাদের সমর্থন জানান। বুধবার ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে মিছিল করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজের একাধিক শিক্ষার্থীও দোকান মালিক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কাছে। নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত বিভিন্ন মার্কেট ছাড়াও ফুটপাথে হরেক পণ্যের অসংখ্য অস্থায়ী দোকান বসে। অভিযোগ আছে, টাকার বিনিময়ে মানুষের হাঁটার জায়গায় পণ্য নিয়ে বসার সুযোগ করে দেন সাবেক ও বর্তমান ছাত্রনেতার একটা অংশ, স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য। এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা নেওয়া হয়। ঈদের মতো বড় উৎসবে দিতে হয় এককালীন বড় অঙ্কের টাকা। এ ছাড়া ঢাকা কলেজের কিছু ছাত্র বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের কাছে উপঢৌকন দাবি করেন। জানা গেছে, নীলক্ষেত থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত ফুটপাথের জায়গা অনেক দিন ধরে কতিপয় ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে। তারা আবার তা অন্যদের কাছে ভাড়া দেন। দোকানভেদে মাসিক ১০-১৫ হাজার বা এর বেশি টাকায় ফুটপাথের জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়। এ অর্থের একটি অংশ পুলিশ, আরেকটি অংশ নিয়ন্ত্রকদের পকেটে যায়। যেসব দোকানের জায়গা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে সেগুলোয় পুলিশের লাইনম্যানদেরও নিয়মিত টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে দোকান তুলে দেওয়া হয়। ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা ফুটপাথের দখল ধরে রাখতে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতা-কর্মীদের ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এসব বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স ম কাইয়ূম বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। কেউ কখনো এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেনি।’ চাঁদনী চক শপিং কমপ্লেক্সের কয়েকজন দোকান কর্মচারী বলেন, ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয়ে কিছু যুবক প্রায়ই মার্কেটে এসে কাপড় নিয়ে কম দাম দিয়ে চলে যান। প্রতিবাদ করলে তারা নানা হুমকি-ধমকি দেন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক-কর্মচারীদের দিকে। তারা বলছেন, দোকানকর্মীদের দুর্ব্যবহারের কারণে মাঝেমধ্যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে। ছাত্ররা কোনো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নন। ঢাকা কলেজের ছাত্র পরিচয় দিলেই ব্যবসায়ীরা পণ্যের অতিরিক্ত দাম চান। এ নিয়ে কখনো কখনো তর্কাতর্কি হয়। অনেক দিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এবারের সংঘাতে। ঢাকা কলেজের ছাত্ররা জানান, এ কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরাও তাদের সমর্থনে মিছিল করেছেন। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com