নিউইয়র্ক সিটিতে দেয়ালচিত্রে বাংলাদেশ

নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় হিলসাইড এভিনিউর বিস্তৃত এলাকাকে ‘লিটল বাংলাদেশ’ করা হয়েছে বছরখানেক আগে। সেই এলাকায় কম্যুনিটির জনপ্রিয় তাজমহল পার্টি হলের সুপরিসর দেয়ালে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল ‘শাপলা’সহ নদীমাতৃক বাংলাদেশকে তুলে ধরা হয়েছে দেয়ালচিত্রে। এটি উদ্বোধন করেছেন দুই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী একুশে পদকপ্রাপ্ত রথীন্দ্রনাথ রায় এবং কাদেরি কিবরিয়া।

 

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই দুই কণ্ঠযোদ্ধা ১৩ নভেম্বর রবিবার বিশিষ্টজনদের পাশে নিয়ে ম্যুরাল তথা দেয়ালচিত্রটি উন্মোচন করেন। ওই দেয়াল তথা তাজমহল রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ মুরাদ বলেন, ‘চিত্রশিল্পী টিপু আলম অনেক দিন থেকেই আমাকে বলছিলেন দেয়ালটিকে কিছু একটা দিয়ে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য। কিন্তু আমি তা আমলে নেইনি। আমার হৃদয় স্পর্শ করতে পারেনি। অধিকন্তু তা সাদা রাখতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করছিলাম। অতি সম্প্রতি টিপু এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে এলেন যা দেখে মনে হলো, আরে এটাই তো চাই। দেশে যাবার প্রয়োজন হবে না। সকাল-বিকাল এই চিত্র দেখবো আর দেশকে মনে করবো, যেখানে আমার নাড়ি পোতা, নাড়ির টান।

 

এর আগে ম্যূরালের প্রেক্ষাপট উপস্থাপনকালে খ্যাতনামা শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, এটি একটি ল্যাটিন শব্দ। যখন মানবসভ্যতার বালাই ছিল না। ভাষাও আবিস্কার হয়নি। সে সময় এমন ছবির মাধ্যমে সবকিছু প্রকাশের প্রয়াস চালানো হয়েছে। এর ব্যাপ্তি ঘটে উনিশ শতকে। দেয়ালে না এঁকে অনেকে ক্যানভাসে এঁকে তা দেয়ালে সেটে দেয়া হতো। দেয়াল এবং কখনো কখনো বাড়ির ছাদেও এমন ছবি আঁকা হতো। বলা যেতে পারে ম্যুরালের মধ্যদিয়েই মানবসভ্যতার উৎপত্তি ঘটেছে। তাই আমাদের সকলের গভীর ভালবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে বাংলাদেশের স্মৃতি হৃদয়পটে ভেসে উঠার সহায়ক এই ম্যূরালের প্রতি। এমন একটি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে উদ্যোক্তা এবং আর্টিস্ট উভয়ের প্রতিই ধন্যবাদ জানিয়েছেন রথীন্দ্রনাথ রায়। অপর কণ্ঠযোদ্ধা কাদেরি কিবরিয়া বলেন, এভাবে ফিতা কেটে ম্যূরালের অবমুক্ত ঘটানো আমার জীবনে প্রথম। আজীবন তা স্মৃতি হয়ে থাকবে।

 

সাংস্কৃতিক সংগঠক গোলাম সারোয়ার হারুনের ব্যবস্থাপনায় পরবর্তীতে তাজমহল পার্টি হলে দুই কণ্ঠযোদ্ধা বাংলাদেশের গান পরিবেশন করেন। উপস্থিত সুধীজনের মধ্যথেকে অনেকেই এই ম্যুরালের আর্টিস্ট ও উদ্যোক্তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

 

উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটিতে এটি হচ্ছে তৃতীয় ম্যুরাল। এর আগে জ্যাকসন হাইটসে ব্যস্ততম ৭৩ স্ট্রিটের একটি দেয়ালে জাতীয় স্মৃতিসোধ আঁকা হয়েছিল। সেটি এখন আর দেখা যায় না। দ্বিতীয় ম্যুরালটি হচ্ছে ব্রঙ্কসে এবং মাতৃভাষা দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে সকল অনুষ্ঠান সেই ম্যূরালের সামনে হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বন্দনা করা ছাড়া জাপার কোনো রাজনীতি নেই: ফিরোজ রশিদ

» বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের

» থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা

» দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় অজ্ঞাত বৃদ্ধার মৃত্যু

» আজকের খেলা

» অধিকার আদায়ে শেরে বাংলার অবদান কখনোই ভুলবার নয়: ফখরুল

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৩৯ জন গ্রেপ্তার

» সরবরাহ থাকলেও কমছে না সবজির দাম, অস্বস্তি মাছ-মাংসের বাজারে

» ভারী বৃষ্টিপাতের পর তানজানিয়ায় বন্যা-ভূমিধস, নিহত অন্তত ১৫৫

» ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা শুরু

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নিউইয়র্ক সিটিতে দেয়ালচিত্রে বাংলাদেশ

নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকায় হিলসাইড এভিনিউর বিস্তৃত এলাকাকে ‘লিটল বাংলাদেশ’ করা হয়েছে বছরখানেক আগে। সেই এলাকায় কম্যুনিটির জনপ্রিয় তাজমহল পার্টি হলের সুপরিসর দেয়ালে বাংলাদেশের জাতীয় ফুল ‘শাপলা’সহ নদীমাতৃক বাংলাদেশকে তুলে ধরা হয়েছে দেয়ালচিত্রে। এটি উদ্বোধন করেছেন দুই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী একুশে পদকপ্রাপ্ত রথীন্দ্রনাথ রায় এবং কাদেরি কিবরিয়া।

 

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই দুই কণ্ঠযোদ্ধা ১৩ নভেম্বর রবিবার বিশিষ্টজনদের পাশে নিয়ে ম্যুরাল তথা দেয়ালচিত্রটি উন্মোচন করেন। ওই দেয়াল তথা তাজমহল রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ মুরাদ বলেন, ‘চিত্রশিল্পী টিপু আলম অনেক দিন থেকেই আমাকে বলছিলেন দেয়ালটিকে কিছু একটা দিয়ে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য। কিন্তু আমি তা আমলে নেইনি। আমার হৃদয় স্পর্শ করতে পারেনি। অধিকন্তু তা সাদা রাখতেই স্বাচ্ছন্দবোধ করছিলাম। অতি সম্প্রতি টিপু এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে এলেন যা দেখে মনে হলো, আরে এটাই তো চাই। দেশে যাবার প্রয়োজন হবে না। সকাল-বিকাল এই চিত্র দেখবো আর দেশকে মনে করবো, যেখানে আমার নাড়ি পোতা, নাড়ির টান।

 

এর আগে ম্যূরালের প্রেক্ষাপট উপস্থাপনকালে খ্যাতনামা শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, এটি একটি ল্যাটিন শব্দ। যখন মানবসভ্যতার বালাই ছিল না। ভাষাও আবিস্কার হয়নি। সে সময় এমন ছবির মাধ্যমে সবকিছু প্রকাশের প্রয়াস চালানো হয়েছে। এর ব্যাপ্তি ঘটে উনিশ শতকে। দেয়ালে না এঁকে অনেকে ক্যানভাসে এঁকে তা দেয়ালে সেটে দেয়া হতো। দেয়াল এবং কখনো কখনো বাড়ির ছাদেও এমন ছবি আঁকা হতো। বলা যেতে পারে ম্যুরালের মধ্যদিয়েই মানবসভ্যতার উৎপত্তি ঘটেছে। তাই আমাদের সকলের গভীর ভালবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে বাংলাদেশের স্মৃতি হৃদয়পটে ভেসে উঠার সহায়ক এই ম্যূরালের প্রতি। এমন একটি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে উদ্যোক্তা এবং আর্টিস্ট উভয়ের প্রতিই ধন্যবাদ জানিয়েছেন রথীন্দ্রনাথ রায়। অপর কণ্ঠযোদ্ধা কাদেরি কিবরিয়া বলেন, এভাবে ফিতা কেটে ম্যূরালের অবমুক্ত ঘটানো আমার জীবনে প্রথম। আজীবন তা স্মৃতি হয়ে থাকবে।

 

সাংস্কৃতিক সংগঠক গোলাম সারোয়ার হারুনের ব্যবস্থাপনায় পরবর্তীতে তাজমহল পার্টি হলে দুই কণ্ঠযোদ্ধা বাংলাদেশের গান পরিবেশন করেন। উপস্থিত সুধীজনের মধ্যথেকে অনেকেই এই ম্যুরালের আর্টিস্ট ও উদ্যোক্তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।

 

উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটিতে এটি হচ্ছে তৃতীয় ম্যুরাল। এর আগে জ্যাকসন হাইটসে ব্যস্ততম ৭৩ স্ট্রিটের একটি দেয়ালে জাতীয় স্মৃতিসোধ আঁকা হয়েছিল। সেটি এখন আর দেখা যায় না। দ্বিতীয় ম্যুরালটি হচ্ছে ব্রঙ্কসে এবং মাতৃভাষা দিবস ও বিজয় দিবস উপলক্ষে সকল অনুষ্ঠান সেই ম্যূরালের সামনে হচ্ছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com