নবীজি যাদের জাহান্নামে দেখেছেন

ছবি:সংগৃহীত

 

আল্লাহ তাআলা নবী (স.)-কে বিভিন্ন সময়ে কিছু পাপের শাস্তি দেখিয়েছেন। সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, এসব শাস্তি তাঁকে দেখানো হয়েছে মেরাজের রাতে, স্বপ্নযোগে এবং কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময়। তিনি ওসব পাপীদের যেমন জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হতে দেখেছেন, তেমনি অন্য শাস্তি ভোগ করতেও দেখেছেন। নবীজির দেখা এমন কিছু পাপীর পরিচয় নিচে তুলে ধরা হলো—

 

১. পরনিন্দাকারী
‘তিনি জাহান্নামে একদল লোক দেখলেন, যারা তামার তৈরি নখ দিয়ে অনবরত নিজেদের মুখমণ্ডল ও বুকে আঁচড় মারছে। জিব্রাইল (আ.) বললেন, এরা মানুষের গোশত খেতো (গিবত ও পরনিন্দা করত)। (আবু দাউদ: ৪৮৭৮, মুসনাদে আহমদ: ৩/২২৪, তাফসিরে ইবনে কাসির: ৫/৯)

 

২. আমলহীন বক্তা
মেরাজের পবিত্র ভ্রমণে রাসুলুল্লাহ (স.) এমন কিছু লোকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন, যাদের জিহ্বা ও ঠোঁট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছিল। জিব্রাইল (আ.) বলেন, এরা আপনার উম্মতের স্বার্থপূজারি উপদেশদাতা, যারা অন্যকে সৎ কাজের নির্দেশ দিত, কিন্তু নিজের খবর রাখত না। (মারেফুল কোরআন: ৩৭, মুসনাদে আহমদ: ১২২১১)

 

৩. নামাজে অলস ও কোরআন ত্যাগকারী
অতঃপর এমন এক সম্প্রদায়কে দেখলেন, পাথর দিয়ে যাদের মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করা হচ্ছে। জিব্রাইল (আ.) বলেন, তারা নামাজে অলসতা করত। (ফাতহুল বারি: ৭/২০০)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসুল (স.) তাঁর সফরসঙ্গী ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী অপরাধে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে? উত্তরে ফেরেশতা বললেন, এরা কোরআন শিক্ষা করেছিল। কিন্তু কোরআন অনুযায়ী আমল করেনি এবং ফরজ সালাতের সময় ঘুমিয়ে থাকত। কেয়ামত পর্যন্ত তাদের এভাবে শাস্তি দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

৪. সুদখোর
রাসুলুল্লাহ (স.) সুদখোরের যে শাস্তি দেখেছেন, তা হাদিসে এসেছে এভাবে—‘আমরা চলতে লাগলাম এবং একটি নদীর কাছে গিয়ে পৌঁছলাম। নদীটি ছিল রক্তের মতো লাল। আর দেখলাম, সেই নদীতে এক ব্যক্তি সাঁতার কাটছে। আর নদীর তীরে অন্য এক ব্যক্তি আছে এবং সে তার কাছে অনেক পাথর একত্র করে রেখেছে। আর ওই সাঁতাররত ব্যক্তি বেশ কিছুক্ষণ সাঁতার কাটার পর সেই ব্যক্তির কাছে ফিরে আসছে, যে তার কাছে পাথর একত্র করে রেখেছে। সেখানে এসে সে তার সামনে মুখ খুলে দিচ্ছে এবং ওই ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তারপর সে চলে গিয়ে আবার সাঁতার কাটছে এবং আবার তার কাছে ফিরে আসছে। আর যখনই ফিরে আসছে তখনই ওই ব্যক্তি তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে।.. সে হলো সুদখোর। (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

অন্য বর্ণনায় আছে, শবে মেরাজে নবীজি এমন লোকদের দেখলেন, যাদের পেট ছিল একেকটি গৃহের মতো। পেটের ভেতরটা সাপে ভর্তি, যা বাইরে থেকেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। প্রশ্ন করা হলে জিব্রাইল (আ.) জানালেন, এরা সুদখোর। (আহমদ: ২/৩৫৩)

 

৫. প্রাণীকে কষ্ট দিয়ে হত্যাকারী
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘..এছাড়া জাহান্নামের মধ্যে ওই নারীকেও দেখতে পেলাম, যে একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখেছিল। এরপর এটাকে আহারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করতে পারত। শেষ পর্যন্ত বিড়ালটি ক্ষুধায় ছটফট করে মারা গেল।’ (সহিহ মুসলিম: ৯০৪)

 

ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে সে মারা গিয়েছিল, পরিণতিতে মহিলা তারই কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করল। সে যখন তাকে বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও দিত না যে, সে কীট-পতঙ্গ ধরে খাবে।’ (বুখারি ও মুসলিম, রিয়াজুস সালেহিন: ১৬০৮)

 

৬. যে নারী সন্তানকে দুধ পান করায় না
হাদিসে এসেছে, নবীজি বলেছেন, ‘..আমি এমন এক দল নারীর কাছে এলাম, সাপ যাদের স্তনে দংশন করছে। আমি বললাম, এদের কী হয়েছে? তিনি (ফেরেশতা) বললেন, এসব নারী তাদের সন্তানদের দুধ পান করতে বাধা দিত।’ (মুসতাদরাক হাকিম: ২৮৩৭)

 

৭. ব্যভিচারী নারী-পুরুষ
মহানবী (স.) বলেন, ‘..আমরা চলতে চলতে (তন্দুর) চুলার মতো একটি গর্তের কাছে পৌঁছলাম। সেখানে শোরগোল ও নানা শব্দ ছিল। আমরা তাতে উঁকি মেরে দেখলাম, তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী-পুরুষ আছে। আর নিচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদের স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদের স্পর্শ করছে, তখনই তারা উচ্চরবে চিৎকার করে উঠছে।..তারা হলো ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণীর দল। (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

অন্য বর্ণনায় আছে, নবী (স.) মেরাজের রাতে একদল লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলেন, তাদের সামনে একটি পাত্রে গোশত রান্না করে রাখা হয়েছে। অদূরেই অন্য এক পাত্রে রয়েছে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা গোশত। লোকদেরকে রান্না করে রাখা গোশত থেকে বিরত রেখে পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত, কাঁচা গোশত খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা চিৎকার করছে এবং একান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও তা থেকে ভক্ষণ করছে। নবী (স.) জিব্রাইল ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করলেন, এরা কোন শ্রেণির লোক? জিব্রাইল (আ.) বললেন, এরা আপনার উম্মতের ওই সমস্ত পুরুষ, যারা নিজেদের ঘরে পবিত্র এবং হালাল স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও অপবিত্র ও খারাপ মহিলাদের সঙ্গে রাত্রি যাপন করত। (আল-খুতাবুল মিম্বারিয়াহ, ড. সালেহ ফাওযান)

 

৮. মিথ্যুক ও গুজব রটনাকারী
মহানবী (স.) বলেন, ‘..তারপর চিত হয়ে শোয়া এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছলাম। এখানে দেখলাম এক ব্যক্তি লোহার আঁকড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে এর দ্বারা তার কশ থেকে মাথার পেছনের দিক পর্যন্ত এবং একইভাবে নাকের ছিদ্র থেকে মাথার পেছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে চোখ থেকে মাথার পেছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে। তারপর লোকটি শোয়া ব্যক্তির অপর দিকে যাচ্ছে এবং প্রথম দিকের সঙ্গে যেরূপ আচরণ করেছে অনুরূপ আচরণ অন্য দিকের সঙ্গেও করছে। ওই দিক থেকে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি আগের মতো ভালো হয়ে যাচ্ছে। তারপর আবার প্রথমবারের মতো আচরণ করছে। …সে হলো ওই ব্যক্তি যে সকালে আপন ঘর থেকে বের হয়ে এমন মিথ্যা বলে, যা চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়ে।’ (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত কঠিন গুনাহগুলো থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর আদেশ ও রাসুলুল্লাহ (স.)-এর আদর্শমতো জীবন গঠনের তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিন ডিএমপির বিশেষ নির্দেশনা

» ‘শিখতে আসিনি, জিততে এসেছি’, নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সোহান

» পাকিস্তানে জ্বালানি ট্যাংকার বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

» দেশের পথে খালেদা জিয়া

» মাকে বিদায় জানালেন তারেক রহমান

» কেউ যেন হাসিনা হয়ে উঠতে না পারে সে জন্য বিচার আবশ্যক : সারজিস

» লন্ডনের বাসা থেকে বের হয়ে বিমানবন্দের উদ্দেশে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

» বাংলাদেশে এখনো ফ্যাসিস্ট শক্তি আছে বলেই হাসনাতের উপর আক্রমণ: মাহমুদুর রহমান

» বাংলাদেশ থেকে আরও জনশক্তি নিতে আগ্রহী ইতালি

» হাসনাতের ওপর হামলার মতো ঘটনা ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নবীজি যাদের জাহান্নামে দেখেছেন

ছবি:সংগৃহীত

 

আল্লাহ তাআলা নবী (স.)-কে বিভিন্ন সময়ে কিছু পাপের শাস্তি দেখিয়েছেন। সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, এসব শাস্তি তাঁকে দেখানো হয়েছে মেরাজের রাতে, স্বপ্নযোগে এবং কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময়। তিনি ওসব পাপীদের যেমন জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হতে দেখেছেন, তেমনি অন্য শাস্তি ভোগ করতেও দেখেছেন। নবীজির দেখা এমন কিছু পাপীর পরিচয় নিচে তুলে ধরা হলো—

 

১. পরনিন্দাকারী
‘তিনি জাহান্নামে একদল লোক দেখলেন, যারা তামার তৈরি নখ দিয়ে অনবরত নিজেদের মুখমণ্ডল ও বুকে আঁচড় মারছে। জিব্রাইল (আ.) বললেন, এরা মানুষের গোশত খেতো (গিবত ও পরনিন্দা করত)। (আবু দাউদ: ৪৮৭৮, মুসনাদে আহমদ: ৩/২২৪, তাফসিরে ইবনে কাসির: ৫/৯)

 

২. আমলহীন বক্তা
মেরাজের পবিত্র ভ্রমণে রাসুলুল্লাহ (স.) এমন কিছু লোকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন, যাদের জিহ্বা ও ঠোঁট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছিল। জিব্রাইল (আ.) বলেন, এরা আপনার উম্মতের স্বার্থপূজারি উপদেশদাতা, যারা অন্যকে সৎ কাজের নির্দেশ দিত, কিন্তু নিজের খবর রাখত না। (মারেফুল কোরআন: ৩৭, মুসনাদে আহমদ: ১২২১১)

 

৩. নামাজে অলস ও কোরআন ত্যাগকারী
অতঃপর এমন এক সম্প্রদায়কে দেখলেন, পাথর দিয়ে যাদের মাথা চূর্ণবিচূর্ণ করা হচ্ছে। জিব্রাইল (আ.) বলেন, তারা নামাজে অলসতা করত। (ফাতহুল বারি: ৭/২০০)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসুল (স.) তাঁর সফরসঙ্গী ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী অপরাধে তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে? উত্তরে ফেরেশতা বললেন, এরা কোরআন শিক্ষা করেছিল। কিন্তু কোরআন অনুযায়ী আমল করেনি এবং ফরজ সালাতের সময় ঘুমিয়ে থাকত। কেয়ামত পর্যন্ত তাদের এভাবে শাস্তি দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

৪. সুদখোর
রাসুলুল্লাহ (স.) সুদখোরের যে শাস্তি দেখেছেন, তা হাদিসে এসেছে এভাবে—‘আমরা চলতে লাগলাম এবং একটি নদীর কাছে গিয়ে পৌঁছলাম। নদীটি ছিল রক্তের মতো লাল। আর দেখলাম, সেই নদীতে এক ব্যক্তি সাঁতার কাটছে। আর নদীর তীরে অন্য এক ব্যক্তি আছে এবং সে তার কাছে অনেক পাথর একত্র করে রেখেছে। আর ওই সাঁতাররত ব্যক্তি বেশ কিছুক্ষণ সাঁতার কাটার পর সেই ব্যক্তির কাছে ফিরে আসছে, যে তার কাছে পাথর একত্র করে রেখেছে। সেখানে এসে সে তার সামনে মুখ খুলে দিচ্ছে এবং ওই ব্যক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে। তারপর সে চলে গিয়ে আবার সাঁতার কাটছে এবং আবার তার কাছে ফিরে আসছে। আর যখনই ফিরে আসছে তখনই ওই ব্যক্তি তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দিচ্ছে।.. সে হলো সুদখোর। (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

অন্য বর্ণনায় আছে, শবে মেরাজে নবীজি এমন লোকদের দেখলেন, যাদের পেট ছিল একেকটি গৃহের মতো। পেটের ভেতরটা সাপে ভর্তি, যা বাইরে থেকেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। প্রশ্ন করা হলে জিব্রাইল (আ.) জানালেন, এরা সুদখোর। (আহমদ: ২/৩৫৩)

 

৫. প্রাণীকে কষ্ট দিয়ে হত্যাকারী
জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘..এছাড়া জাহান্নামের মধ্যে ওই নারীকেও দেখতে পেলাম, যে একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখেছিল। এরপর এটাকে আহারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করতে পারত। শেষ পর্যন্ত বিড়ালটি ক্ষুধায় ছটফট করে মারা গেল।’ (সহিহ মুসলিম: ৯০৪)

 

ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল এবং অবশেষে সে মারা গিয়েছিল, পরিণতিতে মহিলা তারই কারণে জাহান্নামে প্রবেশ করল। সে যখন তাকে বেঁধে রেখেছিল, তখন তাকে আহার ও পানি দিত না এবং তাকে ছেড়েও দিত না যে, সে কীট-পতঙ্গ ধরে খাবে।’ (বুখারি ও মুসলিম, রিয়াজুস সালেহিন: ১৬০৮)

 

৬. যে নারী সন্তানকে দুধ পান করায় না
হাদিসে এসেছে, নবীজি বলেছেন, ‘..আমি এমন এক দল নারীর কাছে এলাম, সাপ যাদের স্তনে দংশন করছে। আমি বললাম, এদের কী হয়েছে? তিনি (ফেরেশতা) বললেন, এসব নারী তাদের সন্তানদের দুধ পান করতে বাধা দিত।’ (মুসতাদরাক হাকিম: ২৮৩৭)

 

৭. ব্যভিচারী নারী-পুরুষ
মহানবী (স.) বলেন, ‘..আমরা চলতে চলতে (তন্দুর) চুলার মতো একটি গর্তের কাছে পৌঁছলাম। সেখানে শোরগোল ও নানা শব্দ ছিল। আমরা তাতে উঁকি মেরে দেখলাম, তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী-পুরুষ আছে। আর নিচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদের স্পর্শ করছে। যখনই লেলিহান শিখা তাদের স্পর্শ করছে, তখনই তারা উচ্চরবে চিৎকার করে উঠছে।..তারা হলো ব্যভিচারী-ব্যভিচারিণীর দল। (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

অন্য বর্ণনায় আছে, নবী (স.) মেরাজের রাতে একদল লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলেন, তাদের সামনে একটি পাত্রে গোশত রান্না করে রাখা হয়েছে। অদূরেই অন্য এক পাত্রে রয়েছে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত কাঁচা গোশত। লোকদেরকে রান্না করে রাখা গোশত থেকে বিরত রেখে পঁচা ও দুর্গন্ধযুক্ত, কাঁচা গোশত খেতে বাধ্য করা হচ্ছে। তারা চিৎকার করছে এবং একান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও তা থেকে ভক্ষণ করছে। নবী (স.) জিব্রাইল ফেরেশতাকে জিজ্ঞেস করলেন, এরা কোন শ্রেণির লোক? জিব্রাইল (আ.) বললেন, এরা আপনার উম্মতের ওই সমস্ত পুরুষ, যারা নিজেদের ঘরে পবিত্র এবং হালাল স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও অপবিত্র ও খারাপ মহিলাদের সঙ্গে রাত্রি যাপন করত। (আল-খুতাবুল মিম্বারিয়াহ, ড. সালেহ ফাওযান)

 

৮. মিথ্যুক ও গুজব রটনাকারী
মহানবী (স.) বলেন, ‘..তারপর চিত হয়ে শোয়া এক ব্যক্তির কাছে পৌঁছলাম। এখানে দেখলাম এক ব্যক্তি লোহার আঁকড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে এর দ্বারা তার কশ থেকে মাথার পেছনের দিক পর্যন্ত এবং একইভাবে নাকের ছিদ্র থেকে মাথার পেছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে চোখ থেকে মাথার পেছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে। তারপর লোকটি শোয়া ব্যক্তির অপর দিকে যাচ্ছে এবং প্রথম দিকের সঙ্গে যেরূপ আচরণ করেছে অনুরূপ আচরণ অন্য দিকের সঙ্গেও করছে। ওই দিক থেকে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি আগের মতো ভালো হয়ে যাচ্ছে। তারপর আবার প্রথমবারের মতো আচরণ করছে। …সে হলো ওই ব্যক্তি যে সকালে আপন ঘর থেকে বের হয়ে এমন মিথ্যা বলে, যা চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়ে।’ (সহিহ বুখারি: ৭০৪৭)

 

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত কঠিন গুনাহগুলো থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর আদেশ ও রাসুলুল্লাহ (স.)-এর আদর্শমতো জীবন গঠনের তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com