ডিজে নাঈমের ভয়ঙ্কর প্রতারণা

ডিজে নাঈম ওরফে টিকটক নাঈম। নাঈমের টার্গেট উঠতি বয়সী তরুণীরা। রয়েছে নিজস্ব একটি টিকটক এবং লাইকি চক্র। এসব টিকটকের ফলোয়ার এবং কমেন্টদাতাদেরকে ঘিরে চলছে ডিজে নাঈমের প্রতারণা ব্যবসা। টিকটক স্টার বানানোর কথা বলে কৌশলে উঠতি বয়সী তরুণীদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে পরবর্তীতে তা দেখিয়ে টাকা দাবি করতো ডিজে নাঈম। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগে ভুক্তভোগী এক তরুণীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ডিজে নাঈম এবং তার বন্ধু কামাল আলীকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিজে নাঈম ওরফে টিকটক নাইমের নিজস্ব একটি চক্র রয়েছে। চক্রটির সদস্য সংখ্যা চার জন।

চক্রটির কাজ হচ্ছে টিকটক এবং লাইকি ভিডিও বানানোর কথা বলে টার্গেটকৃত তরুণীদের ব্যক্তিগত এবং নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে অর্থ দাবি করে। ডিজে নাঈম বাবা-মায়ের সঙ্গে রাজধানীর নতুনবাজার বস্তিতে থাকে। তার বাবা চুক্তিভিত্তিক ময়লার ভ্যানগাড়ি চালায়। মা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করেন। নাঈম দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে আর নিয়মিত করেনি। টিনএজ তরুণীদেরকে টার্গেট করে নাঈম তাদের কাছে নিজেকে ব্যবসায়ীর ছেলে বলে পরিচয় দেয়। পরে দামি পোশাক। ব্যবহার করে ব্যয়বহুল মুঠোফোন। পরবর্তীতে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ভাড়া করে মোটরসাইকেল এনে তরুণীদেরকে প্রলুব্ধ করে। হাতিরঝিল, উত্তরার দিয়াবাড়ি, আশুলিয়াসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তরুণীদেরকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখানে লাইকি এবং টিকটক স্টার বানানোর কথা বলে নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে।

 

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তরুণীদেরকে কাছে ভিড়াতে তাদেরকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সরবরাহ করে থাকে নাঈম। নাঈম তার বাবা-মায়ের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে তাকে বাধা দিলে বাবা-মাকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কামাল আলী নামে গ্রেপ্তার হওয়া নাঈমের এই বন্ধুর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেও টিকটক বানায়। রাজধানীতে বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। টিকটক স্টার বানিয়ে দেয়ার কথা বলে রাজধানীতে স্কুলপড়ুয়া এক তরুণীর একাধিক নগ্ন ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করে নাঈম। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর পরিবার বাদী হয়ে সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করলে তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। তদন্তে উঠে আসে ডিজে নাঈমের অন্ধকার জীবন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নাঈমের কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা মূল্যের একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। তার ব্যবহৃত ফোনে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক তরুণীর নগ্ন ছবি এবং ভিডিও উদ্ধার করা হয়। সে ইতিমধ্যে একাধিক তরুণীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে স্বীকার করেছে।

 

এ বিষয়ে ডিবি’র সাইবার স্পেশাল ও সিরিয়াস ক্রাইমের উপ-পুলিশ কমিশনার শরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের বিষয়ে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। না হলে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এক্ষেত্রে বখে যাওয়া তরুণদেরকে সঠিক উপায়ে কাউন্সেলিং করতে পারলে তাদেরকে এই বিপথগামী পথ থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা রাখতে হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু

» তীব্র গরমে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করলেন ইউএনও

» লালমনিরহাটে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু

» ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার চেষ্টা

» দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করুন, আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

» প্রতিক্রিয়াশীল চক্র গণতন্ত্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে : পরশ

» আগামীকাল ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» বন্দনা করা ছাড়া জাপার কোনো রাজনীতি নেই: ফিরোজ রশিদ

» বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের

» থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ডিজে নাঈমের ভয়ঙ্কর প্রতারণা

ডিজে নাঈম ওরফে টিকটক নাঈম। নাঈমের টার্গেট উঠতি বয়সী তরুণীরা। রয়েছে নিজস্ব একটি টিকটক এবং লাইকি চক্র। এসব টিকটকের ফলোয়ার এবং কমেন্টদাতাদেরকে ঘিরে চলছে ডিজে নাঈমের প্রতারণা ব্যবসা। টিকটক স্টার বানানোর কথা বলে কৌশলে উঠতি বয়সী তরুণীদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে পরবর্তীতে তা দেখিয়ে টাকা দাবি করতো ডিজে নাঈম। সম্প্রতি ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগে ভুক্তভোগী এক তরুণীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ডিজে নাঈম এবং তার বন্ধু কামাল আলীকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডিজে নাঈম ওরফে টিকটক নাইমের নিজস্ব একটি চক্র রয়েছে। চক্রটির সদস্য সংখ্যা চার জন।

চক্রটির কাজ হচ্ছে টিকটক এবং লাইকি ভিডিও বানানোর কথা বলে টার্গেটকৃত তরুণীদের ব্যক্তিগত এবং নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে অর্থ দাবি করে। ডিজে নাঈম বাবা-মায়ের সঙ্গে রাজধানীর নতুনবাজার বস্তিতে থাকে। তার বাবা চুক্তিভিত্তিক ময়লার ভ্যানগাড়ি চালায়। মা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করেন। নাঈম দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে আর নিয়মিত করেনি। টিনএজ তরুণীদেরকে টার্গেট করে নাঈম তাদের কাছে নিজেকে ব্যবসায়ীর ছেলে বলে পরিচয় দেয়। পরে দামি পোশাক। ব্যবহার করে ব্যয়বহুল মুঠোফোন। পরবর্তীতে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ভাড়া করে মোটরসাইকেল এনে তরুণীদেরকে প্রলুব্ধ করে। হাতিরঝিল, উত্তরার দিয়াবাড়ি, আশুলিয়াসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তরুণীদেরকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখানে লাইকি এবং টিকটক স্টার বানানোর কথা বলে নগ্ন ছবি ও ভিডিও তৈরি করে।

 

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তরুণীদেরকে কাছে ভিড়াতে তাদেরকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সরবরাহ করে থাকে নাঈম। নাঈম তার বাবা-মায়ের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এ ধরনের অপরাধমূলক কাজে তাকে বাধা দিলে বাবা-মাকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কামাল আলী নামে গ্রেপ্তার হওয়া নাঈমের এই বন্ধুর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সেও টিকটক বানায়। রাজধানীতে বিভিন্ন ধরনের মাদক ব্যবসার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। টিকটক স্টার বানিয়ে দেয়ার কথা বলে রাজধানীতে স্কুলপড়ুয়া এক তরুণীর একাধিক নগ্ন ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করে নাঈম। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীর পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর পরিবার বাদী হয়ে সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করলে তদন্ত শুরু করে ঢাকা মহানগর সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। তদন্তে উঠে আসে ডিজে নাঈমের অন্ধকার জীবন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নাঈমের কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা মূল্যের একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। তার ব্যবহৃত ফোনে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক তরুণীর নগ্ন ছবি এবং ভিডিও উদ্ধার করা হয়। সে ইতিমধ্যে একাধিক তরুণীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে স্বীকার করেছে।

 

এ বিষয়ে ডিবি’র সাইবার স্পেশাল ও সিরিয়াস ক্রাইমের উপ-পুলিশ কমিশনার শরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের বিষয়ে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। না হলে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এক্ষেত্রে বখে যাওয়া তরুণদেরকে সঠিক উপায়ে কাউন্সেলিং করতে পারলে তাদেরকে এই বিপথগামী পথ থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা রাখতে হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com