কঠিন লড়াইয়ের পর অবশেষে জিতলেন নিপুণ আক্তার। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন সাধারণ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে এবারের নির্বাচনের জন্য গঠিত আপিল বোর্ড। একইসঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে অর্থাৎ টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।
শনিবার সন্ধ্যায় এফডিসিতে এক বৈঠক শেষে এই দুটি ঘোষণা দেন নির্বাচনে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা সোহানুর রহমান সোহান। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ নির্মাতার মুখে এমন ঘোষণা শোনার পর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি নিপুণ। কেঁদে ফেলেন তিনি। অনুভূতি জানান কাঁদতে কাঁদতে।
নিপুণ বলেন, ‘জায়েদ খানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে আমি অনেক জায়গায় গিয়েছি। দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনের কাছে প্রথমে গিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ আমাকে হেল্প করেনি। যাক শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হলো। এখন আমার প্রথম কাজ প্রধানমন্ত্রীকে এফডিসিতে আনার ব্যবস্থা করা। কথা দিচ্ছি, এই কাজটি আমি করবো।
গত ২৮ জানুয়ারি এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ফলাফল ঘোষণা হয় পরদিন ভোররাতে। জানা যায়, সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের কাছে ১৩ ভোটে হেরেছেন নিপুণ। কিন্তু এই ফলাফল মানেননি অভিনেত্রী। পরের দিন দুপুরে তিনি আপিল বোর্ডে লিখিত আবেদন করেন ফলাফল পুনরায় গুণনা করার জন্য।
ওই দিনই নিপুণের আবেদনের পর্যালোচনা এবং পুনরায় ভোট গণনার পর আপিল বোর্ড জানায়, নির্বাচন কমিশন থেকে ঘোষিত ফলাফল ঠিক আছে। জায়েদ খানই জিতেছেন। এর পরও নিজের পরাজয় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন নিপুণ। পরবর্তীতে তিনি লিখিত অভিযোগ জানান সামজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে, যেহেতু শিল্পী সমিতির এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধিত।
নিপুণ একই অভিযোগ তোলেন জায়েদদের প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে জয় পাওয়া চুন্নুর বিরুদ্ধেও। সেই অভিযোগ ও আবেদন আমলে নিয়ে জায়েদ ও চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিলের দিকনির্দেশনা চেয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান।
সেই চিঠি পাওয়ার পর গত বুধবার ঢাকা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রকনুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসারে নির্বাচনের আপিল বোর্ড চূড়ান্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত। অর্থাৎ আপিল বোর্ড যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এর পরই বৈঠক ডাকে আপিল বোর্ড।
শনিবার বিকাল চারটায় শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ওই বৈঠক। কিন্তু যথাসময়ে নিপুণ এফডিসিতে হাজির থাকলেও আসেননি জায়েদ খান ও চুন্নু। যার কারণে সন্ধ্যায় তাদেরকে ছাড়াই বৈঠকে বসে আপিল বোর্ড।
বৈঠক শেষে জায়েদ খান ও চুন্নুর বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক পদে বিপক্ষ প্যানেলের নিপুণ আক্তারকে এবং কার্যনির্বাহী পদে চুন্নুর জায়গায় নাদির খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া এদিনের বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আখ্যা দেন আপিল বোর্ড-এর চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। রবিবার বিকালে নির্বাচিত কমিটির শপথ অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি জানিয়ে দেন। সূএ:ঢাকাটাইমস ডটকম