ছবি সংগৃহীত
ইসলামি শরিয়তে জানাজা, কাফন-দাফন ইত্যাদি জীবিত মুসলমানদের ওপর মৃতদের অধিকার। জানাজা বহন করা ও তার অনুসরণ করা ফরজে কেফায়া। এই বিধান পুরুষদের জন্য। তাই নারীরা জানাজা বহন ও অনুসরণ করবে না। জানাজার খাটিয়া বহন করার সময় ধারাবাহিকভাবে খাটিয়ার চারদিক ধরে বহন করা মোস্তাহাব।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- إذَا كَانَ أَحَدُكُمْ فِي جِنَازَةٍ فَلْيَحْمِلْ بِجَوَانِبِ السَّرِيرِ كُلِّهِ، فَإِنَّهُ مِنَ السُّنَّةِ، ثم لِيَتَطَوَّعَ، أَو لِيَدَعَ ‘তোমাদের মধ্যে কেউ যখন জানাজার সাথে থাকে, সে যেন (ধারাবাহিকভাবে) খাটিয়ার চারদিক ধরে তা বহন করে। কারণ এটা সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১১৩৯৭)
জানাজার খাটিয়া চারদিক ধরে বহন করার পদ্ধতি হলো- প্রথমে খাটিয়ার বাম পাশের (মৃত ব্যক্তি হিসেবে ডান পাশের) সামনের হাতল ডান কাঁধে রাখবে। এরপর বরাবর পেছনের হাতল, তারপর ডানপাশের (মৃত ব্যক্তি হিসাবে বাম পাশের) সামনের হাতল বাম কাঁধে রাখবে। অতঃপর বরাবর পেছনের হাতল। এটাই সুন্নাহসমর্থিত নিয়ম।
জানাজার খাটিয়া বহনের সময় রাসুলুল্লাহ (স.) ও সাহাবায়ে কেরাম চুপ থাকতেন। আখেরাতের বিষয়ে চিন্তামগ্ন থাকতেন। ইবনু জুরাইজ (রহ.) বলেন- أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ كَانَ إِذَا تَبِعَ الْجِنَازَةَ أَكْثَرَ السّكُاتَ، وَأَكْثَرَ حَدِيثَ نَفْسِهِ ‘নবী কারিম (স.) যখন জানাজার পেছনে চলতেন তখন অধিক চুপ থাকতেন এবং চিন্তায় খুব মগ্ন থাকতেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক: ৬২৮২; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ১১৩১৫)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (স.) ইরশাদ করেন- لَا تُتْبَعُ الْجَنَازَةُ بِصَوْتٍ، وَلَا نَارٍ ‘জানাজার পেছনে যেন শব্দ না করা হয় এবং আগুন না নেওয়া হয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৩১৬৩; মুসনাদে আহমদ: ৯৫১৫)
সুনানে কুবরা বায়হাকি ও ইবনুল মুনজিরের আলআওসাতের এক বর্ণনা থেকে জানা যায়, সাহাবায়ে কেরামের আমল ব্যাপকভাবে এমনি ছিল; তাঁরা জানাজার পেছনে যাওয়ার সময় কোনো আওয়াজ করতেন না। (সুনানে কুবরা, বায়হাকি: ৪/৭৪; আল আওসাত, ইবনুল মুনজির: ৫/৪২২ (৩০৩৪)
উল্লেখিত হাদিস ও আছারের আলোকে ফকিহগণ বলেছেন, জানাজার পেছনে চলার সময় মূল কাজ হলো আখেরাতের ফিকিরে থাকা। জিকির করতে চাইলে তা হবে অনুচ্চ স্বরে। এক্ষেত্রে জিকির করতে গিয়ে আওয়াজ উঁচু করা মাকরুহ। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/৪৬; তাতারখানিয়া: ৩/৩৭; মুখতারাতুন নাওয়াজিল: ১/৪০৮; ফাতহুল কাদির: ২/৯৭; ইমদাদুল ফাত্তাহ পৃ. ৬৩৮) সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম