জাকিরের ফাঁদে এমপি পুলিশ ব্যবসায়ী

শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেড়ে উঠেছেন কুয়েতে। পড়ালেখা শেষে সে দেশেই ব্যবসা শুরু করেন। কয়েক বছরে ব্যবসায় ভালো লাভ হয় তার। করোনা মহামারি শুরু হলে শফিকুল দেশে আসেন। গাড়ি কিনতে গিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি শোরুমে তার পরিচয় হয় কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ২ নম্বর মানিকাচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে। জাকিরের লোভনীয় প্রস্তাবে রাজি হয়ে শেষ পর্যন্ত ৫ কোটি টাকা খোয়ান শফিকুল। তার মতো জাকিরের ফাঁদে পা দিয়ে কোটি কোটি টাকা খোয়ানোর তালিকায় আছেন সংসদ সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা, ইউপি মেম্বার, ব্যবসায়ী।

 

২১ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিল্লার মেঘনা এলাকা থেকে দুটি মাইক্রোবাসসহ জাকিরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও  বিভাগ। ডিবি বলছে, জাকিরের বিরুদ্ধে তিন শতাধিক ভুক্তভোগীর হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা ও সুলভমূল্যে গাড়ি কেনাবেচার নামে ভয়ংকর প্রতারণায় জড়িত ছিলেন। প্রতারণার টাকায় তিনি গ্রামে আলিশান বাড়ি বানিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে একজনকে উপহার দেন প্রাডো গাড়ি। নির্বাচনে বিপুল টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান হন। ঢাকায় রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট-প্লট ও গাড়ি। ছেলেকে পাঠিয়েছেন আমেরিকায়। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত ক?মিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, জাকির চেয়ারম্যান প্রতারণার মাধ্যমে একটি গাড়ি ৩৭ জনের কাছে বিক্রি করেছেন। সম্প্রতি চার দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জাকিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। জাকিরের গাড়ি রয়েছে ২০-২৫টি। সে সব গাড়ি ঘুরেফিরে সবাইকে দেখাতেন। কয়েকজন এমপি ও প্রশাসনের লোকদের কাছ থেকেও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন জাকির। ডিবি প্রধান হারুন বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় জাকির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা করেন এক ভুক্তভোগী। মামলাটি ডিবির তেজগাঁও বিভাগ ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা যায়, পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলে জাকির বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এ ছাড়া তার কাছ থেকে কেনা গাড়ি আবার চুক্তির মাধ্যমে নিজেই রেন্ট-এ-কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়া নিতেন। একটি গাড়ি এভাবে একাধিক ব্যক্তির কাছে ভুয়া কাগজপত্র করে বিক্রি করতেন জাকির। একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গাড়ি একাধিক জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করতেন তিনি। আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারও সঙ্গে শুধু ইঞ্জিন নম্বর দিয়ে মাসিক কিস্তি পরিশোধের ভিত্তিতে কিছুদিন পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ করে পরবর্তীতে কিস্তি দেওয়া বন্ধ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করতেন। এ ছাড়াও আগের বিক্রি করা গাড়ি স্বল্পমূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জাকিরের ফাঁদে এমপি পুলিশ ব্যবসায়ী

শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেড়ে উঠেছেন কুয়েতে। পড়ালেখা শেষে সে দেশেই ব্যবসা শুরু করেন। কয়েক বছরে ব্যবসায় ভালো লাভ হয় তার। করোনা মহামারি শুরু হলে শফিকুল দেশে আসেন। গাড়ি কিনতে গিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি শোরুমে তার পরিচয় হয় কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ২ নম্বর মানিকাচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে। জাকিরের লোভনীয় প্রস্তাবে রাজি হয়ে শেষ পর্যন্ত ৫ কোটি টাকা খোয়ান শফিকুল। তার মতো জাকিরের ফাঁদে পা দিয়ে কোটি কোটি টাকা খোয়ানোর তালিকায় আছেন সংসদ সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা, ইউপি মেম্বার, ব্যবসায়ী।

 

২১ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিল্লার মেঘনা এলাকা থেকে দুটি মাইক্রোবাসসহ জাকিরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও  বিভাগ। ডিবি বলছে, জাকিরের বিরুদ্ধে তিন শতাধিক ভুক্তভোগীর হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি রেন্ট-এ-কারের ব্যবসা ও সুলভমূল্যে গাড়ি কেনাবেচার নামে ভয়ংকর প্রতারণায় জড়িত ছিলেন। প্রতারণার টাকায় তিনি গ্রামে আলিশান বাড়ি বানিয়েছেন। ইউপি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেতে একজনকে উপহার দেন প্রাডো গাড়ি। নির্বাচনে বিপুল টাকা খরচ করে চেয়ারম্যান হন। ঢাকায় রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট-প্লট ও গাড়ি। ছেলেকে পাঠিয়েছেন আমেরিকায়। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত ক?মিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, জাকির চেয়ারম্যান প্রতারণার মাধ্যমে একটি গাড়ি ৩৭ জনের কাছে বিক্রি করেছেন। সম্প্রতি চার দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে জাকিরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। জাকিরের গাড়ি রয়েছে ২০-২৫টি। সে সব গাড়ি ঘুরেফিরে সবাইকে দেখাতেন। কয়েকজন এমপি ও প্রশাসনের লোকদের কাছ থেকেও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন জাকির। ডিবি প্রধান হারুন বলেন, ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মুগদা থানায় জাকির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা করেন এক ভুক্তভোগী। মামলাটি ডিবির তেজগাঁও বিভাগ ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তে জানা যায়, পোর্ট থেকে স্বল্প দামে গাড়ি কিনে দেওয়ার কথা বলে জাকির বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এ ছাড়া তার কাছ থেকে কেনা গাড়ি আবার চুক্তির মাধ্যমে নিজেই রেন্ট-এ-কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়া নিতেন। একটি গাড়ি এভাবে একাধিক ব্যক্তির কাছে ভুয়া কাগজপত্র করে বিক্রি করতেন জাকির। একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের গাড়ি একাধিক জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রি করতেন তিনি। আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারও সঙ্গে শুধু ইঞ্জিন নম্বর দিয়ে মাসিক কিস্তি পরিশোধের ভিত্তিতে কিছুদিন পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ করে পরবর্তীতে কিস্তি দেওয়া বন্ধ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করতেন। এ ছাড়াও আগের বিক্রি করা গাড়ি স্বল্পমূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।

সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com