চাল-ডাল ধরাছোঁয়ার বাইরে, বেগুন-আলুতে হাত দিলে বৈদ্যুতিক শকড হয়: রিজভী

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চাল-ডাল-আটা-গুঁড়ো মসলা ও শাক-সবজি আজ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেগুন-আলু ও সবজির গায়ে হাত দিলে বৈদ্যুতিক শকড হয়। মানুষ একবেলা ও আধপেটা খেয়ে বেঁচে আছে।

 

তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির চড়া দামের কারণে মানুষ খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে। ওএমএসের যে লম্বা লাইন সেখানেও মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও স্বল্প আয়ের মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

রোববার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

রিজভী বলেন, চৈত্রের খরতাপের মধ্যে নিম্নআয়ের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু টিসিবি সারাদেশে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ পণ্য দিতে পারে। সারাদেশের মানুষ আজ চড়া দামে জিনিসপত্র কিনছে, এক বেলা বা আধপেটা খেয়ে জীবনযাপন করছে। অন্যদিকে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কী একটা ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্যে জীবনযাপন করছি। আজ আবারও সেই বায়াত্তর থেকে চুয়াত্তরের কথা আমরা শুনছি, যখন কি না বাসন্তী-দুর্গারা শাড়ি না পেয়ে মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছে। যারা ভাত-রুটি না পেয়ে আম গাছের পাতা কাঁঠাল গাছের পাতা চিবিয়ে খেয়েছে। এরই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে আজ বাংলার প্রান্তরে প্রান্তরে। দুর্ভিক্ষের ছায়া বিস্তার করেছে চতুর্দিকে।

 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দুর্ভিক্ষ, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, দেশের মানুষ আধপেটা খেয়ে থাকে আর উন্নয়নের নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়।

 

রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখন বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্যে দিন যাচ্ছে, রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা বসে আছেন তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই, এ কারণেই আকাশছোঁয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। আওয়ামী লীগের আমলে গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম ৮২ শতাংশ এবং পানির দাম ২৬৪ শতাংশ বাড়িয়েছে। যা পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক ও জনপ্রতিনিধিত্বমূলক দেশে হয় না।

 

নতুন নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, এ নির্বাচন কমিশনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা মনে করি অবৈধ সরকার অবৈধ আইনের মাধ্যমে এ কমিশন গঠন করেছে। সুতরাং পরবর্তী পর্যায়ে কী হবে সেটা আমাদের দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলে জানতে পারবেন।

 

তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী দুদিন আগে বলেছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বিএনপির অন্যায়-অবিচার একই বিষয়। আমি আইনমন্ত্রীকে বলছি, আপনি আপনার প্রধানমন্ত্রীকে বলুন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী এবং কত প্রকার? এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করতে গিয়ে মানুষ পুড়িয়েছেন, ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন, এ তত্ত্বাবধায়কের জন্য তিনি কী পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন।

 

এসময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারওয়ার, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু

» তীব্র গরমে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করলেন ইউএনও

» লালমনিরহাটে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু

» ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার চেষ্টা

» দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করুন, আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

» প্রতিক্রিয়াশীল চক্র গণতন্ত্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে : পরশ

» আগামীকাল ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» বন্দনা করা ছাড়া জাপার কোনো রাজনীতি নেই: ফিরোজ রশিদ

» বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের

» থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

চাল-ডাল ধরাছোঁয়ার বাইরে, বেগুন-আলুতে হাত দিলে বৈদ্যুতিক শকড হয়: রিজভী

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চাল-ডাল-আটা-গুঁড়ো মসলা ও শাক-সবজি আজ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেগুন-আলু ও সবজির গায়ে হাত দিলে বৈদ্যুতিক শকড হয়। মানুষ একবেলা ও আধপেটা খেয়ে বেঁচে আছে।

 

তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির চড়া দামের কারণে মানুষ খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে। ওএমএসের যে লম্বা লাইন সেখানেও মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও স্বল্প আয়ের মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে।

রোববার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

রিজভী বলেন, চৈত্রের খরতাপের মধ্যে নিম্নআয়ের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু টিসিবি সারাদেশে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ পণ্য দিতে পারে। সারাদেশের মানুষ আজ চড়া দামে জিনিসপত্র কিনছে, এক বেলা বা আধপেটা খেয়ে জীবনযাপন করছে। অন্যদিকে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কী একটা ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্যে জীবনযাপন করছি। আজ আবারও সেই বায়াত্তর থেকে চুয়াত্তরের কথা আমরা শুনছি, যখন কি না বাসন্তী-দুর্গারা শাড়ি না পেয়ে মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছে। যারা ভাত-রুটি না পেয়ে আম গাছের পাতা কাঁঠাল গাছের পাতা চিবিয়ে খেয়েছে। এরই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে আজ বাংলার প্রান্তরে প্রান্তরে। দুর্ভিক্ষের ছায়া বিস্তার করেছে চতুর্দিকে।

 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দুর্ভিক্ষ, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, দেশের মানুষ আধপেটা খেয়ে থাকে আর উন্নয়নের নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়।

 

রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখন বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্যে দিন যাচ্ছে, রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা বসে আছেন তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই, এ কারণেই আকাশছোঁয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। আওয়ামী লীগের আমলে গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম ৮২ শতাংশ এবং পানির দাম ২৬৪ শতাংশ বাড়িয়েছে। যা পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক ও জনপ্রতিনিধিত্বমূলক দেশে হয় না।

 

নতুন নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, এ নির্বাচন কমিশনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা মনে করি অবৈধ সরকার অবৈধ আইনের মাধ্যমে এ কমিশন গঠন করেছে। সুতরাং পরবর্তী পর্যায়ে কী হবে সেটা আমাদের দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলে জানতে পারবেন।

 

তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী দুদিন আগে বলেছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বিএনপির অন্যায়-অবিচার একই বিষয়। আমি আইনমন্ত্রীকে বলছি, আপনি আপনার প্রধানমন্ত্রীকে বলুন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী এবং কত প্রকার? এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করতে গিয়ে মানুষ পুড়িয়েছেন, ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন, এ তত্ত্বাবধায়কের জন্য তিনি কী পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন।

 

এসময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারওয়ার, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com