গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনবিরোধী: জিএম কাদের

করোনাকালে গ্যাসের মূল্য না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, এসময় জ্বালানি গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হবে জনবিরোধী ও হটকারী সিদ্ধান্ত।

 

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এমন সিদ্ধান্ত নিলে প্রমাণ হবে দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোনো দরদ নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশের গ্যাস উৎপাদন কোম্পানিগুলো বর্তমান মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়িয়ে গ্যাসের মূল্য পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে।

 

আরও জানানো হয়, বর্তমানে পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসে দুই চুলার জন্য গ্রাহককে মাসে ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাতে দুই চুলার মাসিক বিল বেড়ে দাঁড়াবে ২ হাজার ১শ টাকা। একই সঙ্গে আবাসিক গ্রাহকদের ঘন মিটার প্রতি ৯ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার সার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে হোটেল রেস্তোরাঁয় ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজিতে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে বর্তমান পেক্ষাপটে মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে।

 

জিএম কাদের বলেন, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মূল্যবৃদ্ধির এই অর্থ দেশের প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হবে। যা মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে।

তিনি বলেন, গ্যাসের বিল পরিশোধ করার পরও রান্নার জন্য লাইনে গ্যাস পায় না সাধারণ মানুষ। সেজন্য নিয়মিত গ্যাসের বিল দেওয়ার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক চুলা ব্যবহার করছে অনেকে। কেউ কেউ অতিরিক্ত খরচ করে কাঠের চুলাও ব্যবহার করছে রান্নার জন্য।

 

করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ইতোপূর্বে তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য দিন দিন আকাশচুম্বি হয়ে উঠেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমতাবস্থায় গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হলে জীবন বাঁচাতে মানুষের মাঝে হাহাকার উঠবে।

 

গ্যসের দাম বাড়লে রপ্তানি পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে জানিয়ে জিএম কাদের আরও বলেন, এর ফলে হুমকির মুখে পড়তে পারে দেশের গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বায়িং প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ ফেরাতে পারে বাংলাদেশ থেকে। যা মহা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।

জিএম কাদের মেগা প্রজেক্টের বিপুল ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও এ মুহূর্তে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।,

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু

» তীব্র গরমে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করলেন ইউএনও

» লালমনিরহাটে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু

» ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার চেষ্টা

» দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করুন, আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

» প্রতিক্রিয়াশীল চক্র গণতন্ত্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে : পরশ

» আগামীকাল ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» বন্দনা করা ছাড়া জাপার কোনো রাজনীতি নেই: ফিরোজ রশিদ

» বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের

» থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জনবিরোধী: জিএম কাদের

করোনাকালে গ্যাসের মূল্য না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, এসময় জ্বালানি গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হবে জনবিরোধী ও হটকারী সিদ্ধান্ত।

 

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এমন সিদ্ধান্ত নিলে প্রমাণ হবে দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোনো দরদ নেই।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশের গ্যাস উৎপাদন কোম্পানিগুলো বর্তমান মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়িয়ে গ্যাসের মূল্য পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে।

 

আরও জানানো হয়, বর্তমানে পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসে দুই চুলার জন্য গ্রাহককে মাসে ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাতে দুই চুলার মাসিক বিল বেড়ে দাঁড়াবে ২ হাজার ১শ টাকা। একই সঙ্গে আবাসিক গ্রাহকদের ঘন মিটার প্রতি ৯ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার সার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে হোটেল রেস্তোরাঁয় ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজিতে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে বর্তমান পেক্ষাপটে মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে।

 

জিএম কাদের বলেন, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মূল্যবৃদ্ধির এই অর্থ দেশের প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হবে। যা মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে।

তিনি বলেন, গ্যাসের বিল পরিশোধ করার পরও রান্নার জন্য লাইনে গ্যাস পায় না সাধারণ মানুষ। সেজন্য নিয়মিত গ্যাসের বিল দেওয়ার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক চুলা ব্যবহার করছে অনেকে। কেউ কেউ অতিরিক্ত খরচ করে কাঠের চুলাও ব্যবহার করছে রান্নার জন্য।

 

করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, ইতোপূর্বে তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য দিন দিন আকাশচুম্বি হয়ে উঠেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমতাবস্থায় গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হলে জীবন বাঁচাতে মানুষের মাঝে হাহাকার উঠবে।

 

গ্যসের দাম বাড়লে রপ্তানি পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে জানিয়ে জিএম কাদের আরও বলেন, এর ফলে হুমকির মুখে পড়তে পারে দেশের গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বায়িং প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ ফেরাতে পারে বাংলাদেশ থেকে। যা মহা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।

জিএম কাদের মেগা প্রজেক্টের বিপুল ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও এ মুহূর্তে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।,

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com