بسمِ اللَّهِ فِي أَوَّلِهِ وَآخِرِهِ
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি।’
অর্থ : ‘(খাওয়ার) শুরুতে ও (খাওয়ার) শেষে আল্লাহর নামে।’ (আবু দাউদ)
২. অন্য বর্ণনায় এসেছে, কেউ যদি খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায় তবে সে যেন বলে-
بِسْمِ اللهِ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু’
অর্থ : ‘(খাওয়ার) শুরুতে ও (খাওয়ার) শেষে আল্লাহর নামে।’
এমনকি কারো যদি খাওয়া সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর কিংবা সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ে তাহলেও ‘বিসমিল্লাহ’ বলা জায়েজ এবং বৈধ। কারণ এ প্রসঙ্গে কাশশাফুল কেনা গ্রন্থে এসেছে-
وَظاهِرَهُ وَلَوْ بَعْدَ فَرَاغَهُ مِنَ الْأكْلِ
অর্থাৎ খাবার শেষ করার পরও যদি তা স্বরণ হয় তাহলেও এ দোয়াটি- (বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি) পাঠ করা যাবে।’ (কাশশাফুল কেনা)
৩. খাওয়ার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা প্রসঙ্গে একটি চমৎকার উপমা তুলে ধরে নিহায়াতুল মুহতাজ গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে-
‘(অজুর শুরুতে ’বিসমিল্লাহ’ বলতে ভুলে গেলে তা) শেষ করার পর ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে না। কিন্তু খাবার খাওয়ার সময়ের ব্যাপারটি পুরো ব্যতিক্রম। এ ক্ষেত্রে খাওয়া শেষ করার পর হলেও ‘বিসমিল্লাহি’ (তথা বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি) বলবে।’ (নিহায়াতুল মুহতাজ)
মনে রাখতে হবে
খাওয়ার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত আমল। তাই খাওয়ার শুরুতে বা শেষ করার কিছুক্ষণ পর মনে হলেও ‘বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু’ অথবা ‘বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি’ বলে সুন্নাতের উপর আমল করা। খাওয়ার আগে এটি না পড়লেও এ আমলকে কোনোভাবে অস্বীকার করা যাবে না। আবার ইচ্ছাকৃতভাবে তা পরিত্যাগ করাও উচিত নয়।
সুতরাং যারা খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায়; দুই/এক লোকমা খাওয়ার পর স্মরণ হওয় কিংবা খাওয়া শেষ হওয়ার পর স্মরণ হয়; তাদের উচিত, সে সময়ে বিসমিল্লাহ বলা। আর তাতেই ‘বিসমিল্লাহ’ বলার সুন্নাত আমল কবুল হয়ে যাবে।
আমলটি স্মরণ রাখার উপায়
কী করলে খাওয়ার আগে বিসমিল্লাহ বলার এ আমলটি স্মরণে থাকবে। কখনো বলতে ভুলবে না; তাহলো-
১. খাবার সামনে এলেই আল্লাহর নেয়ামতের কথা স্বরণ করা এবং তারপর আল্লাহর নামে খাওয়া শুরু করা।
২. ‘বিসমিল্লাহ’ বলাকে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করা। কিছু দিন চেষ্টা করলে পরে আর ভুল হবে না ইনশাআল্লাহ। এরপরও কেউ ভুলে গেলে বিকল্প দোয়া পড়ে নেওয়া।
৩. যেখানে বসে খাবার খাওয়া হয়; সেখানে চোখে পড়ার মত জায়গায় খাবার শুরু ও শেষ করার সংক্ষিপ্ত দোয়া লিখে ঝুলিয়ে রাখা। তাহলে সে দিকে চোখ পড়লেই স্বরণ হয়ে যাবে।
৪. প্রতিবার খাওয়া বা পান করার শুরুতে একটু আওয়াজ করে ‘বিসমিল্লাহ’ বলার চেষ্টা করা। তাহলে এভাবে নিজের উচ্চারণ নিজের কানে শুনতে শুনতে মন-মস্তিষ্কে তার প্রভাব পড়বে। ফলে তা স্বরণ রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ।
৫. স্ত্রী এবং বাচ্চাদেরও খাওয়ার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে অভ্যস্ত করানো এবং তারাও যেন একটু আওয়াজ করে বলে।
৬. পরিবারে লোকজন একসঙ্গে খেতে বসলে যার ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে মনে থাকে সে খাওয়ার শুরুতে অন্যদেরকে স্বরণ করিয়ে দেবে। এ জন্য আগে থেকে বিষয়টি তাদের কাছে বলে রাখতে হবে।
এভাবে চর্চা করলে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে খাবার খাওয়ার সময় সুন্নাত এ আমলটি সবার জন্য সহজ হয়ে যাবে। এটি প্রত্যেকের অভ্যাসে পরিণত হবে। ইন শা আল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে খাবার শুরুতে গুরুত্বপূর্ণ এ সুন্নাত আমলটি যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম