কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা সম্পর্কে যা বলে ইসলাম

ছবি সংগৃহীত

 

কোরবানির পর পশুর গোশত কী করবেন; কিংবা কতদিন জমা রেখে খাবেন। এ সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনাই বা কী? কেননা কোরবানি আল্লাহর নৈকট্য লাভে আত্মত্যাগের অনন্য ইবাদত। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হিজরতের প্রতি বছর কোরবানি করেছেন। তিনি কখনো কোরবানি পরিত্যাগ করেননি; বরং কোরবানি পরিত্যাগকারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোরবানি করল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে।’

কোরবানি যেহেতু আত্মত্যাগের অন্যতম ইবাদত, সেহেতু কোরবানির গোশত সম্পর্কেও রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা। এ সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। যেমন- কেউ কেউ বলে থাকেন, ‘কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না।’ আবার অনেকে বলেন, ‘কোরবানি করে গোশত সাদকা করে দিতে হয়।’ কারো কারো ধারণা- ‘৩ দিনের বেশি কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না।’

কোরবানির গোশত সম্পর্কে উল্লেখিত ধারণাগুলো ভুল। কোরবানির গোশত নিজেরা খেতে পারবে, অন্যকে হাদিয়া দেওয়া যাবে এবং সংরক্ষণ করা যাবে। এ ব্যাপারে হাদিসে পাকে দিক-নির্দেশনা রয়েছে-

হজরত সালামা ইবনে আকওয়া (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের যে লোক কোরবানি করেছে, সে যেন তৃতীয় দিনে এমন অবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কোরবানির গোশতের কিছু থেকে যায়।’ পরবর্তী বছর সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তেমন করব, যেমন গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন- ‘তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ। কারণ গত বছর মানুষের মধ্যে ছিল অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম, তোমরা তাদের সহযোগিতা করো।’ (বুখারি, মুসলিম)

উল্লেখিত হাদিসে অন্যকে আহার করাও বলতে সমাজের গরিব অসহায়দের দান এবং ধনিদের উপহার দেওয়াকে বোঝানো হয়েছে।

আর কী পরিমাণ গোশত অন্যকে দান-সাদকা বা হাদিয়া দেওয়া যাবে সে সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম একটি মতামত পেশ করেছেন। তা হলো- কোরবানির পশুর গোশত তিন ভাগ করে নিজেদের জন্য এক ভাগ রাখা; গরিব-অসহায়দের মাঝে এক ভাগ দান করা এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে এক ভাগ বণ্টন করা মোস্তাহাব।

ওলামায়ে কেরামের এ নির্দেশনা অনুযায়ী, কোরবানির গোশত বণ্টন করা উত্তম। অতঃপর হাদিস অনুযায়ী, দুর্ভিক্ষ কিংবা অভাব-অনটন না থাকলে যতদিন ইচ্ছা ততদিন কোরবানির গোশত সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে।

হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্নিত অন্য হাদিসে এসেছে। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমরা মদিনায় ফিরে আসা পর্যন্ত কোরবানির গোশত সঞ্চয় করে রাখতাম।’ (বুখারি)  সূএ :ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও থামছে আওয়ামী লীগ: কার্যক্রম স্থগিতে বিটিআরসির প্রস্তুতি

» গেজেট প্রকাশের পরই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত : সিইসি

» আ. লীগের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমরা কোনও প্রতিকূল আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া আশা করি না : শফিকুল আলম

» নিজামীর ফাঁসির রাতেই আ. লীগের ‘পতন’!

» তিন দাবিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আহতরা শাহবাগে

» ঢাকার প্রতিটি থানা হবে জনগণের: ডিআইজি রেজাউল

» রাজধানীতে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক নিহত

» আওয়ামী লীগের কার্যক্রম কেবল নিষিদ্ধ করে থেমে গেলে চলবে না : ইশরাক

» আপনারা কেউ রাজপথ ছাড়বেন না: হাসনাত আবদুল্লাহ

» বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে অভিনন্দন : নাহিদ ইসলাম

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা সম্পর্কে যা বলে ইসলাম

ছবি সংগৃহীত

 

কোরবানির পর পশুর গোশত কী করবেন; কিংবা কতদিন জমা রেখে খাবেন। এ সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনাই বা কী? কেননা কোরবানি আল্লাহর নৈকট্য লাভে আত্মত্যাগের অনন্য ইবাদত। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হিজরতের প্রতি বছর কোরবানি করেছেন। তিনি কখনো কোরবানি পরিত্যাগ করেননি; বরং কোরবানি পরিত্যাগকারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি কোরবানি করল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে।’

কোরবানি যেহেতু আত্মত্যাগের অন্যতম ইবাদত, সেহেতু কোরবানির গোশত সম্পর্কেও রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা। এ সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। যেমন- কেউ কেউ বলে থাকেন, ‘কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না।’ আবার অনেকে বলেন, ‘কোরবানি করে গোশত সাদকা করে দিতে হয়।’ কারো কারো ধারণা- ‘৩ দিনের বেশি কোরবানির গোশত জমিয়ে রাখা যাবে না।’

কোরবানির গোশত সম্পর্কে উল্লেখিত ধারণাগুলো ভুল। কোরবানির গোশত নিজেরা খেতে পারবে, অন্যকে হাদিয়া দেওয়া যাবে এবং সংরক্ষণ করা যাবে। এ ব্যাপারে হাদিসে পাকে দিক-নির্দেশনা রয়েছে-

হজরত সালামা ইবনে আকওয়া (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের যে লোক কোরবানি করেছে, সে যেন তৃতীয় দিনে এমন অবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কোরবানির গোশতের কিছু থেকে যায়।’ পরবর্তী বছর সাহাবিগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তেমন করব, যেমন গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন- ‘তোমরা নিজেরা খাও, অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ। কারণ গত বছর মানুষের মধ্যে ছিল অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম, তোমরা তাদের সহযোগিতা করো।’ (বুখারি, মুসলিম)

উল্লেখিত হাদিসে অন্যকে আহার করাও বলতে সমাজের গরিব অসহায়দের দান এবং ধনিদের উপহার দেওয়াকে বোঝানো হয়েছে।

আর কী পরিমাণ গোশত অন্যকে দান-সাদকা বা হাদিয়া দেওয়া যাবে সে সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম একটি মতামত পেশ করেছেন। তা হলো- কোরবানির পশুর গোশত তিন ভাগ করে নিজেদের জন্য এক ভাগ রাখা; গরিব-অসহায়দের মাঝে এক ভাগ দান করা এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে এক ভাগ বণ্টন করা মোস্তাহাব।

ওলামায়ে কেরামের এ নির্দেশনা অনুযায়ী, কোরবানির গোশত বণ্টন করা উত্তম। অতঃপর হাদিস অনুযায়ী, দুর্ভিক্ষ কিংবা অভাব-অনটন না থাকলে যতদিন ইচ্ছা ততদিন কোরবানির গোশত সংরক্ষণ করে খাওয়া যাবে।

হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ থেকে বর্নিত অন্য হাদিসে এসেছে। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আমরা মদিনায় ফিরে আসা পর্যন্ত কোরবানির গোশত সঞ্চয় করে রাখতাম।’ (বুখারি)  সূএ :ডেইলি-বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com