কালকূট: এক দৌড়বিদ পাখির কথা

প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি লেখক ছিলেন সমরেশ বসু। কালকূট ছিল তার ছদ্মনাম। এর মানে তীব্র বিষ। তবে আজকের প্রসঙ্গ কালকূট নামক একটি পাখি। সাদা ঠোঁটের কালো রঙের একটি পাখি কালকূট। কালকুঁচও বলে এদের। তাকে বলা হয় দৌড়বিদ পাখি।

 

কালকূট পাখির ইংরেজি নাম Common Coot। বৈজ্ঞানিক নাম Fulica atra। শরীরের মাপ ৪০ সেন্টিমিটার। লেজ খুবই ছোট।

কালকূট মূলত পানির পাখি। নিরিবিলি বিলি-ঝিল, জলাশয় ও হাওর-বাওড়ই বেশি পছন্দ এদের।

 

এরা দলবেঁধে থাকে, চরে বেড়ায়। পানির অন্য পাখিদের সঙ্গে সহজে মিলেমিশে থাকে। ভালো সাঁতার জানে। ডুব দিতেও ওস্তাদ।

 

এরা হাঁসের মতো ডুব দিয়ে উল্টে গিয়ে পানির নিচে খাবার খুঁজতে পারে। বেশ সাহসী, বুদ্ধিমান ও চালাক পাখি। পানির উপরে শাপলা-শালুকে-পদ্মে পা ফেলে বা শুধু পানিতে এরা যত দ্রুত দৌড়াতে পারে, সম্ভবত আর কোনো পাখি এমনটা পারে না।

কালকূটের খাদ্যতলিকায় আছে পানির নিচের উদ্ভিদ-গুল্মের কচি অংশ, ছোট ছোট মাছ, ব্যাঙ ও জলজ পোকামাকড়। ডাঙায় উঠেও হাঁটতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে। বাসা বাঁধার জন্য এরা পছন্দ করে হাওর-বাওড় বা মরা নদীর উদ্ভিদ-গুল্ম বা ঘাসবন। দুজন মিলেই বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৫-৯টি।

 

বরফরঙা ডিম, তাতে বাদামি ছিটছোপ থাকে। দুজন মিলে পালা করে ডিমে তা দেয়। ২০/২২ দিনে বাচ্চা ফোটে। বাচ্চারা উড়তে শেখে ২৫-২৮ দিনে। জন্মের ২-১ দিনের মধ্যে মায়ের সঙ্গে পানিতে নেমে পড়ে।

 

এদের দেখা যায় মূলত শীতকালে। অন্য দেশ থেকে আসা পরিযায়ীদের সঙ্গে তখন মিশে যায়। অনেকে আবার এদেশেই থেকে যায়। শীতে বহু হাটবাজারে এদের বিক্রি হতে দেখা যায়, আইন অনুযায়ী যা নিষিদ্ধ। এমন অপরাধের বিরুদ্ধে সবাই রুখে দাঁড়ালে রক্ষা পাবে কালকূটের মতো পাখিরা।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু

» তীব্র গরমে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করলেন ইউএনও

» লালমনিরহাটে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু

» ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার চেষ্টা

» দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করুন, আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

» প্রতিক্রিয়াশীল চক্র গণতন্ত্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে : পরশ

» আগামীকাল ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» বন্দনা করা ছাড়া জাপার কোনো রাজনীতি নেই: ফিরোজ রশিদ

» বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের

» থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কালকূট: এক দৌড়বিদ পাখির কথা

প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি লেখক ছিলেন সমরেশ বসু। কালকূট ছিল তার ছদ্মনাম। এর মানে তীব্র বিষ। তবে আজকের প্রসঙ্গ কালকূট নামক একটি পাখি। সাদা ঠোঁটের কালো রঙের একটি পাখি কালকূট। কালকুঁচও বলে এদের। তাকে বলা হয় দৌড়বিদ পাখি।

 

কালকূট পাখির ইংরেজি নাম Common Coot। বৈজ্ঞানিক নাম Fulica atra। শরীরের মাপ ৪০ সেন্টিমিটার। লেজ খুবই ছোট।

কালকূট মূলত পানির পাখি। নিরিবিলি বিলি-ঝিল, জলাশয় ও হাওর-বাওড়ই বেশি পছন্দ এদের।

 

এরা দলবেঁধে থাকে, চরে বেড়ায়। পানির অন্য পাখিদের সঙ্গে সহজে মিলেমিশে থাকে। ভালো সাঁতার জানে। ডুব দিতেও ওস্তাদ।

 

এরা হাঁসের মতো ডুব দিয়ে উল্টে গিয়ে পানির নিচে খাবার খুঁজতে পারে। বেশ সাহসী, বুদ্ধিমান ও চালাক পাখি। পানির উপরে শাপলা-শালুকে-পদ্মে পা ফেলে বা শুধু পানিতে এরা যত দ্রুত দৌড়াতে পারে, সম্ভবত আর কোনো পাখি এমনটা পারে না।

কালকূটের খাদ্যতলিকায় আছে পানির নিচের উদ্ভিদ-গুল্মের কচি অংশ, ছোট ছোট মাছ, ব্যাঙ ও জলজ পোকামাকড়। ডাঙায় উঠেও হাঁটতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে। বাসা বাঁধার জন্য এরা পছন্দ করে হাওর-বাওড় বা মরা নদীর উদ্ভিদ-গুল্ম বা ঘাসবন। দুজন মিলেই বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে ৫-৯টি।

 

বরফরঙা ডিম, তাতে বাদামি ছিটছোপ থাকে। দুজন মিলে পালা করে ডিমে তা দেয়। ২০/২২ দিনে বাচ্চা ফোটে। বাচ্চারা উড়তে শেখে ২৫-২৮ দিনে। জন্মের ২-১ দিনের মধ্যে মায়ের সঙ্গে পানিতে নেমে পড়ে।

 

এদের দেখা যায় মূলত শীতকালে। অন্য দেশ থেকে আসা পরিযায়ীদের সঙ্গে তখন মিশে যায়। অনেকে আবার এদেশেই থেকে যায়। শীতে বহু হাটবাজারে এদের বিক্রি হতে দেখা যায়, আইন অনুযায়ী যা নিষিদ্ধ। এমন অপরাধের বিরুদ্ধে সবাই রুখে দাঁড়ালে রক্ষা পাবে কালকূটের মতো পাখিরা।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com