এবার নতুন প্রক্টরের অপসারণ চান শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

দায়িত্ব নেওয়ার একদিন পরই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নবনিযুক্ত প্রক্টরের অপসারণ দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

 

বৃহস্পতিবার  বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন প্রক্টর হিসেবে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইশরাত ইবনে ইসমাইলের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীরকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে প্রক্টরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইশরাত ইবনে ইসমাইলকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি বিধি মোতাবেক দায়িত্ব ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ আদেশ তার যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

 

ইশরাত ইবনে ইসমাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত।

 

এদিকে নতুন প্রক্টরের অপসারণ দাবি করে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষামন্ত্রীর ক্যাম্পাস ত্যাগের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ইয়াসির সরকার।

 

তিনি বলেন, উনার সামনে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সে সময় ঘটনাটি প্রতিহত করার কোনো উদ্যোগ নেননি। ওই ঘটনাটি এখন তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়া অনুচিত হয়েছে।

শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে উপাচার্য বিরোধী চলমান আন্দোলন একদিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন শাবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৈঠক পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আগামীকাল শনিবার বিকেলে সব শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছেন তারা।

 

ইয়াসির সরকার বলেন, নতুন প্রক্টরকে অপসারণের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছেও দাবি জানিয়েছি। তিনি যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া আগামীতে প্রক্টর নিয়োগে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।

 

এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে টানা ২৬ দিন পর শুক্রবার নিজ বাসভবন থেকে বের হলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এদিন উপাচার্য কার্যালয়ে অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনার পর শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীসহ সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে উপাচার্যকে পরামর্শ দেন।

 

এক হল প্রভোস্টের অপসারণ দাবিতে উপাচার্যকে গত ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর বাসা থেকে বের হননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।

 

পুলিশি হামলা উপাচার্যের নির্দেশে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ওই রাত থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে অন্যদের প্রবেশ বন্ধ করে দেন তারা। এক দিনের জন্য ওই ভবনের বিদ্যুৎ-পানির লাইনও বিছিন্ন করে দেওয়া হয়।

 

২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙার পর উপাচার্যের বাসার সামনে থেকে অবস্থান ও ব্যারিকেড তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির লালবাগ উপশাখা উদ্বোধন

» পাঁচবিবিতে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

» বৃষ্টি কামনায় বায়তুল মোকাররমে ইসতিসকার নামাজ আদায়

» মেটার স্মার্ট সানগ্লাসে দিয়ে করা যাবে ভিডিও কল

» গরমে ট্রাফিক পুলিশ কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে?

» জিম্বাবুয়ে সিরিজের শুরু থেকে কেন খেলবেন না, জানালেন সাকিব

» পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলের চালক নিহত

» বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংর্ঘষে ইজিবাইক চালক নিহত,আহত ৩

» বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

» শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে আ.লীগের কর্মসূচি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

এবার নতুন প্রক্টরের অপসারণ চান শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

দায়িত্ব নেওয়ার একদিন পরই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নবনিযুক্ত প্রক্টরের অপসারণ দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

 

বৃহস্পতিবার  বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন প্রক্টর হিসেবে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইশরাত ইবনে ইসমাইলের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীরকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে প্রক্টরের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইশরাত ইবনে ইসমাইলকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনের জন্য তিনি বিধি মোতাবেক দায়িত্ব ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ আদেশ তার যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।

 

ইশরাত ইবনে ইসমাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্বরত।

 

এদিকে নতুন প্রক্টরের অপসারণ দাবি করে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষামন্ত্রীর ক্যাম্পাস ত্যাগের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ইয়াসির সরকার।

 

তিনি বলেন, উনার সামনে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সে সময় ঘটনাটি প্রতিহত করার কোনো উদ্যোগ নেননি। ওই ঘটনাটি এখন তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দেওয়া অনুচিত হয়েছে।

শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে উপাচার্য বিরোধী চলমান আন্দোলন একদিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন শাবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৈঠক পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আগামীকাল শনিবার বিকেলে সব শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসার কথা জানিয়েছেন তারা।

 

ইয়াসির সরকার বলেন, নতুন প্রক্টরকে অপসারণের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর কাছেও দাবি জানিয়েছি। তিনি যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া আগামীতে প্রক্টর নিয়োগে শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।

 

এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে টানা ২৬ দিন পর শুক্রবার নিজ বাসভবন থেকে বের হলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এদিন উপাচার্য কার্যালয়ে অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনার পর শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীসহ সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে উপাচার্যকে পরামর্শ দেন।

 

এক হল প্রভোস্টের অপসারণ দাবিতে উপাচার্যকে গত ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর বাসা থেকে বের হননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।

 

পুলিশি হামলা উপাচার্যের নির্দেশে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ওই রাত থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে অন্যদের প্রবেশ বন্ধ করে দেন তারা। এক দিনের জন্য ওই ভবনের বিদ্যুৎ-পানির লাইনও বিছিন্ন করে দেওয়া হয়।

 

২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙার পর উপাচার্যের বাসার সামনে থেকে অবস্থান ও ব্যারিকেড তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com