এক বা দুই বছর নয়, ৫০০ বছরেও বাড়ি ভাড়া বাড়েনি যে শহরে

জ্যাকব ফিউগার নামক একজন সম্ভ্রান্ত ধনী ব্যক্তি এটি নির্মাণ করেন, ষোড়শ শতকে অবস্থাপন্ন হিসেবে সমাজে নাম-ডাক ছিল তার। দারিদ্রসীমার নিচে বাস করেন, এমন সুবিধাবঞ্চিতদের কথা ভেবেই হাউজিং কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেন তিনি।

 

শুধু ভাড়াই নয়, সেখানে থাকার জন্য আবেদন করার নিয়মেও আসেনি একচুল পরিবর্তন। আবেদনের জন্য তাদের কেবল আর্থিক অবস্থার প্রমাণ দেখাতে হবে এবং কোনো ঋণ থাকা যাবে না।

 

কমপ্লেক্সটি ৬৭টি ঘর নিয়ে গঠিত যা ১৪৭টি অ্যাপার্টমেন্টে বিভক্ত। ১৬ শতকে মধ্যযুগীয় ব্যাভারিয়ান বাড়িগুলো কেমন দেখতে ছিল, তা উপস্থাপনের জন্য এখনও একটি বাড়িকে সংস্কার না করে অবিকল সেভাবেই রেখে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কমপ্লেক্সে বসবাসকারীরা বেশিরভাগই বয়সে প্রবীণ, যাদের সামান্য কিছু ভাতা রয়েছে। গত পাঁচ শতকে সংঘটিত নানা যুদ্ধ কিংবা দুর্যোগে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও কীভাবে এখনও এই হাউজিং আগের ভাড়াই বহাল রেখেছে, তা ভাবলে সত্যিই বিস্ময় জাগে!

 

তিনবার এই কমপ্লেক্সটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়, বোমা হামলায় এর প্রায় ৭০ শতাংশ জ্বলে যায়। তবু এরপর যতোবার এটি পুনর্নির্মিত হয়েছে, অনুসরণ করা হয়েছে সেই একই শৈলী এবং স্থাপত্য। হ্যাঁ, সময়ের সাথে অ্যাপার্টমেন্টগুলোর ভেতরে সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে, কিন্তু বাইরের অংশ রয়ে গেছে আগের রূপেই।

হাউজিং কমপ্লেক্স

হাউজিং কমপ্লেক্স

আমরা যদি রুটির কথাই ধরি, ৫০০ বছর আগে দেশটিতে রুটি কিনতে লাগত দুই সেন্টের মতো। মূল্যস্ফীতির জোয়ারে পাঁচ শতক পর এসে সেই রুটির দাম এসে ঠেকেছে এক মার্কিন ডলারে। কমপ্লেক্সটি ঘুরে দেখতে প্রবেশমূল্য হিসেবে ব্যয় করতে হবে ৫ ডলার, অথচ এই পরিমাণ অর্থে সেখানে পাঁচ বছর কাটিয়ে দেয়া যাবে! আজ হয়তো অনেকে এই হাউজিং কমপ্লেক্সের নামই জানে না, কিন্তু  সমসাময়িক যুগে এর বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। এখানে অবস্থান করা সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তি বোধহয় সুরকার মোৎজার্টের দাদা।

 

কমপ্লেক্সটির অন্যতম বিশেষত্ব, এখানকার সম্প্রদায় ভীষণ পরোপকারী। তারা সব সময় একে অপরকে সাহায্য করে আর পর্যটকদের স্বাগত জানায় (যতক্ষণ পর্যন্ত তারা কমপ্লেক্সের আইন ও নিয়মকে সম্মান করে থাকে)।  সূত্র: হিস্ট্রি অফ ইয়েস্টারডে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু

» তীব্র গরমে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করলেন ইউএনও

» লালমনিরহাটে হিট স্ট্রোকে অটোচালকের মৃত্যু

» ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার চেষ্টা

» দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করুন, আ.লীগ নেতাকর্মীদের প্রধানমন্ত্রী

» প্রতিক্রিয়াশীল চক্র গণতন্ত্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে : পরশ

» আগামীকাল ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

» বন্দনা করা ছাড়া জাপার কোনো রাজনীতি নেই: ফিরোজ রশিদ

» বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের

» থাই পিএমও-তে প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

এক বা দুই বছর নয়, ৫০০ বছরেও বাড়ি ভাড়া বাড়েনি যে শহরে

জ্যাকব ফিউগার নামক একজন সম্ভ্রান্ত ধনী ব্যক্তি এটি নির্মাণ করেন, ষোড়শ শতকে অবস্থাপন্ন হিসেবে সমাজে নাম-ডাক ছিল তার। দারিদ্রসীমার নিচে বাস করেন, এমন সুবিধাবঞ্চিতদের কথা ভেবেই হাউজিং কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেন তিনি।

 

শুধু ভাড়াই নয়, সেখানে থাকার জন্য আবেদন করার নিয়মেও আসেনি একচুল পরিবর্তন। আবেদনের জন্য তাদের কেবল আর্থিক অবস্থার প্রমাণ দেখাতে হবে এবং কোনো ঋণ থাকা যাবে না।

 

কমপ্লেক্সটি ৬৭টি ঘর নিয়ে গঠিত যা ১৪৭টি অ্যাপার্টমেন্টে বিভক্ত। ১৬ শতকে মধ্যযুগীয় ব্যাভারিয়ান বাড়িগুলো কেমন দেখতে ছিল, তা উপস্থাপনের জন্য এখনও একটি বাড়িকে সংস্কার না করে অবিকল সেভাবেই রেখে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কমপ্লেক্সে বসবাসকারীরা বেশিরভাগই বয়সে প্রবীণ, যাদের সামান্য কিছু ভাতা রয়েছে। গত পাঁচ শতকে সংঘটিত নানা যুদ্ধ কিংবা দুর্যোগে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও কীভাবে এখনও এই হাউজিং আগের ভাড়াই বহাল রেখেছে, তা ভাবলে সত্যিই বিস্ময় জাগে!

 

তিনবার এই কমপ্লেক্সটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়, বোমা হামলায় এর প্রায় ৭০ শতাংশ জ্বলে যায়। তবু এরপর যতোবার এটি পুনর্নির্মিত হয়েছে, অনুসরণ করা হয়েছে সেই একই শৈলী এবং স্থাপত্য। হ্যাঁ, সময়ের সাথে অ্যাপার্টমেন্টগুলোর ভেতরে সংস্কারের ছোঁয়া লেগেছে, কিন্তু বাইরের অংশ রয়ে গেছে আগের রূপেই।

হাউজিং কমপ্লেক্স

হাউজিং কমপ্লেক্স

আমরা যদি রুটির কথাই ধরি, ৫০০ বছর আগে দেশটিতে রুটি কিনতে লাগত দুই সেন্টের মতো। মূল্যস্ফীতির জোয়ারে পাঁচ শতক পর এসে সেই রুটির দাম এসে ঠেকেছে এক মার্কিন ডলারে। কমপ্লেক্সটি ঘুরে দেখতে প্রবেশমূল্য হিসেবে ব্যয় করতে হবে ৫ ডলার, অথচ এই পরিমাণ অর্থে সেখানে পাঁচ বছর কাটিয়ে দেয়া যাবে! আজ হয়তো অনেকে এই হাউজিং কমপ্লেক্সের নামই জানে না, কিন্তু  সমসাময়িক যুগে এর বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। এখানে অবস্থান করা সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তি বোধহয় সুরকার মোৎজার্টের দাদা।

 

কমপ্লেক্সটির অন্যতম বিশেষত্ব, এখানকার সম্প্রদায় ভীষণ পরোপকারী। তারা সব সময় একে অপরকে সাহায্য করে আর পর্যটকদের স্বাগত জানায় (যতক্ষণ পর্যন্ত তারা কমপ্লেক্সের আইন ও নিয়মকে সম্মান করে থাকে)।  সূত্র: হিস্ট্রি অফ ইয়েস্টারডে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com