ঈদ ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে যেসব সাবধানতা জরুরি

ফাইল ফটো

 

ঈদে প্রিয়জনদের কাছে ছোটেন প্রিয়জনেরা। আর তাই তো; শহর থেকে গ্রামে বা গ্রাম থেকে শহরে হাজারো বাধা উপেক্ষা করেই তারা ছোটেন নাড়ির টানে।

তবে এই মধুর যাত্রাপথ অনেকের জন্যই শুভ হয় না। দেখা যায়, ঈদে যাত্রাপথে সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকেই প্রাণ হারান। আবার কেউ কেউ গুরুতর আহত হন। অনেকেই আবার পঙ্গু হয়ে বাকিটা জীবন কাটান। এক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে সহজেই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক ঈদ ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে কী কী সতর্কতা মেনে চলবেন-

ভ্রমণ পথ ও গন্তব্যের ব্যাপারে যথাযথ তথ্য নেয়া

যেকোনো গন্তব্যে যাওয়া আগে তার ব্যাপারে যত বেশি জেনে নেয়া যায় ততই ভালো। প্রথমেই সেখানকার আবহাওয়া এবং আইনশৃঙ্খলার অবস্থা জেনে নিতে হবে। নিকটস্থ থানা, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর, আবাসিক হোটেল এবং ভ্রমণকারীর যে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে তার শাখা লোকেশন ও যোগাযোগ নম্বর মোবাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।

এছাড়া যে রুট ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌছবে সে রুটেও কোনো ঝামেলা চলছে কি-না আগে থেকেই যাচাই করে নিতে হবে। মোবাইলে নূন্যতম একদিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনে নেয়া যেতে পারে। এতে করে যাত্রাপথে যেকোনো জায়গায় নিকটস্থ অ্যাম্বুলেন্স ও থানার নম্বর খুঁজে বের করা যাবে।

 

নিকট বন্ধু ও আত্মীয়দের জানিয়ে রাখা

বাড়িতে বাবা-মার সঙ্গে ঈদ করার জন্য ঢাকার ছাড়ার সময় ঢাকার অন্তত একজন নিকট আত্মীয় বা বন্ধুকে প্রস্থানের বিষয়টি জানিয়ে রাখা উচিত। সেই সঙ্গে রওনা হওয়া সময়টিও জানাতে হবে গন্তব্যের লোকদের। বিশেষত পৌছতে গভীর রাত হয়ে গেলে তারা যেন গাড়ির ব্যবস্থা করতে সহায়তা করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় গ্রামের বাড়িটি বাস বা ট্রেন ষ্টেশন থেকে অনেক ভেতরে।

ওষুধপত্র ও ফার্স্ট এইড বক্স সঙ্গে রাখা

যাত্রাপথে বা গন্তব্যে পৌঁছে বিভিন্ন সময় ছোট-খাট দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই চট জলদি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট এইড কিট সঙ্গে রাখা জরুরি। জ্বর, বমি, মাথা ব্যথা, পেট খারাপের ওষুধ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক সঙ্গে রাখা জরুরি। সঙ্গে নেয়া যেতে পারে মশা নিরোধক ওডোমোস। সঙ্গে বাচ্চা থাকলে তাদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

 

খাবার পানীয় নেয়া

ভয়াবহ দাবদাহে ঈদ উৎসবে শক্ত সমর্থ থাকতে বিশুদ্ধ পানি পানের কোনো বিকল্প নেই। শুধু দীর্ঘ মেয়াদের ভ্রমণেই নয়; রোদের মধ্যে ঘন্টাখানেক হাটার ক্ষেত্রেও সঙ্গে পানি বা জুসের বোতল বহনে অভ্যস্ত হওয়া উচিত।

 

ভ্রমণের সময় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা

ভ্রমণের সময় খাবারের মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে খাবারটি কিভাবে প্রস্তুত হচ্ছে তা দেখা জরুরি। কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে খাবারটি যথেষ্ট রান্না হয়েছে কি-না সেদিকে নজর দিতে হবে। কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকলে সেটি সেখানকার বিখ্যাত খাবার হলেও এড়িয়ে যাওয়া উচিত। ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে থাকতে শুধুমাত্র যেগুলো খোসা ছাড়িয়ে খেতে হয় সে ফলগুলো খাওয়া যেতে পারে।

ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম

ভ্রমণের সময় দীর্ঘ দূরত্ব না থাকা সত্ত্বেও প্রায়ই যানজটের জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তাতেই কেটে যায়। এমতাবস্থায় শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে শক্তির যোগানের জন্য ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। এছাড়াও ট্রেনে মোশন সিকনেস থেকে রক্ষা পেতে যানবাহন চলাকালে অল্প কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ রাখা অথবা সম্ভব হলে ঘুমিয়ে নেয়া ভালো।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

শুধু এই ঈদের জন্য নয়; দেশের ভেতরে যেকোনো ভ্রমণকালে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকা উচিত। বর্তমানে কোভিড টিকা কার্ডও একটি অবিচ্ছেদ্য সংযোজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর প্রতিটির স্ক্যান কপি অনলাইনে তথা- ড্রপবক্স, গুগল ড্রাইভ, ওয়ান ড্রাইভ অথবা অফলাইনে মোবাইলের ফাইল ম্যানেজারে সংরক্ষণ করা উচিত, যেন মোবাইলের মাধ্যমে দ্রুত দেখা যায়।  সূএ:ডেইলি-বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দিচ্ছে সরকারের ভেতরের মহল : ফখরুল

» কাজী নজরুলের কবিতা দেশের মুক্তিকামী মানুষকে সাহস যুগিয়েছে : তারেক রহমান

» ডাকসু নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করলেন সানজিদা আহমেদ তন্বি

» মানুষ আর হাসিনা মার্কা নির্বাচন হতে দেবে না: সেলিম উদ্দিন

» প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে পুলিশের ধাওয়া, টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

» প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা দাবি-দাওয়ার প্রস্তাব দিলে সমাধান করে দেবো: জনপ্রশাসন সচিব

» কেউ ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করলে বরদাশত করা হবে না: প্রেস সচিব

» কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

» হত্যাচেষ্টা মামলায় ডাকসু ভিপি প্রার্থী জালাল গ্রেফতার

» তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঈদ ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে যেসব সাবধানতা জরুরি

ফাইল ফটো

 

ঈদে প্রিয়জনদের কাছে ছোটেন প্রিয়জনেরা। আর তাই তো; শহর থেকে গ্রামে বা গ্রাম থেকে শহরে হাজারো বাধা উপেক্ষা করেই তারা ছোটেন নাড়ির টানে।

তবে এই মধুর যাত্রাপথ অনেকের জন্যই শুভ হয় না। দেখা যায়, ঈদে যাত্রাপথে সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকেই প্রাণ হারান। আবার কেউ কেউ গুরুতর আহত হন। অনেকেই আবার পঙ্গু হয়ে বাকিটা জীবন কাটান। এক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে সহজেই দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক ঈদ ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে কী কী সতর্কতা মেনে চলবেন-

ভ্রমণ পথ ও গন্তব্যের ব্যাপারে যথাযথ তথ্য নেয়া

যেকোনো গন্তব্যে যাওয়া আগে তার ব্যাপারে যত বেশি জেনে নেয়া যায় ততই ভালো। প্রথমেই সেখানকার আবহাওয়া এবং আইনশৃঙ্খলার অবস্থা জেনে নিতে হবে। নিকটস্থ থানা, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর, আবাসিক হোটেল এবং ভ্রমণকারীর যে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে তার শাখা লোকেশন ও যোগাযোগ নম্বর মোবাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।

এছাড়া যে রুট ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌছবে সে রুটেও কোনো ঝামেলা চলছে কি-না আগে থেকেই যাচাই করে নিতে হবে। মোবাইলে নূন্যতম একদিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনে নেয়া যেতে পারে। এতে করে যাত্রাপথে যেকোনো জায়গায় নিকটস্থ অ্যাম্বুলেন্স ও থানার নম্বর খুঁজে বের করা যাবে।

 

নিকট বন্ধু ও আত্মীয়দের জানিয়ে রাখা

বাড়িতে বাবা-মার সঙ্গে ঈদ করার জন্য ঢাকার ছাড়ার সময় ঢাকার অন্তত একজন নিকট আত্মীয় বা বন্ধুকে প্রস্থানের বিষয়টি জানিয়ে রাখা উচিত। সেই সঙ্গে রওনা হওয়া সময়টিও জানাতে হবে গন্তব্যের লোকদের। বিশেষত পৌছতে গভীর রাত হয়ে গেলে তারা যেন গাড়ির ব্যবস্থা করতে সহায়তা করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় গ্রামের বাড়িটি বাস বা ট্রেন ষ্টেশন থেকে অনেক ভেতরে।

ওষুধপত্র ও ফার্স্ট এইড বক্স সঙ্গে রাখা

যাত্রাপথে বা গন্তব্যে পৌঁছে বিভিন্ন সময় ছোট-খাট দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই চট জলদি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট এইড কিট সঙ্গে রাখা জরুরি। জ্বর, বমি, মাথা ব্যথা, পেট খারাপের ওষুধ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক সঙ্গে রাখা জরুরি। সঙ্গে নেয়া যেতে পারে মশা নিরোধক ওডোমোস। সঙ্গে বাচ্চা থাকলে তাদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

 

খাবার পানীয় নেয়া

ভয়াবহ দাবদাহে ঈদ উৎসবে শক্ত সমর্থ থাকতে বিশুদ্ধ পানি পানের কোনো বিকল্প নেই। শুধু দীর্ঘ মেয়াদের ভ্রমণেই নয়; রোদের মধ্যে ঘন্টাখানেক হাটার ক্ষেত্রেও সঙ্গে পানি বা জুসের বোতল বহনে অভ্যস্ত হওয়া উচিত।

 

ভ্রমণের সময় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা

ভ্রমণের সময় খাবারের মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে খাবারটি কিভাবে প্রস্তুত হচ্ছে তা দেখা জরুরি। কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে খাবারটি যথেষ্ট রান্না হয়েছে কি-না সেদিকে নজর দিতে হবে। কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকলে সেটি সেখানকার বিখ্যাত খাবার হলেও এড়িয়ে যাওয়া উচিত। ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে থাকতে শুধুমাত্র যেগুলো খোসা ছাড়িয়ে খেতে হয় সে ফলগুলো খাওয়া যেতে পারে।

ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম

ভ্রমণের সময় দীর্ঘ দূরত্ব না থাকা সত্ত্বেও প্রায়ই যানজটের জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তাতেই কেটে যায়। এমতাবস্থায় শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে শক্তির যোগানের জন্য ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। এছাড়াও ট্রেনে মোশন সিকনেস থেকে রক্ষা পেতে যানবাহন চলাকালে অল্প কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ রাখা অথবা সম্ভব হলে ঘুমিয়ে নেয়া ভালো।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

শুধু এই ঈদের জন্য নয়; দেশের ভেতরে যেকোনো ভ্রমণকালে জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে থাকা উচিত। বর্তমানে কোভিড টিকা কার্ডও একটি অবিচ্ছেদ্য সংযোজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর প্রতিটির স্ক্যান কপি অনলাইনে তথা- ড্রপবক্স, গুগল ড্রাইভ, ওয়ান ড্রাইভ অথবা অফলাইনে মোবাইলের ফাইল ম্যানেজারে সংরক্ষণ করা উচিত, যেন মোবাইলের মাধ্যমে দ্রুত দেখা যায়।  সূএ:ডেইলি-বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com