আলট্রাসনোগ্রাফির আগে গর্ভবতী নারী কি পান করবে, পানি না কমলার রস?

ছবি সংগৃহীত

 

হেলথ  ডেস্ক :আলট্রাসনোগ্রাফি বা ইউএসজি-র আগে তরল পান করে পেট ভরিয়ে নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে তো সকলেই অবগত। গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে অ্যাবডোমেনের স্পষ্ট ছবি পাওয়ার জন্য আধ ঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিট আগে পর্যন্ত বেশি পরিমাণে পানি পান করে পেট ভরিয়ে ফেলতে হয়, তবেই আলট্রাসাউন্ডের সাহায্যে স্পষ্ট ছবি পাওয়া যায়। তরল পান করলে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মূত্রাশয় ভরে যায়। ফলে জরায়ু খানিক উপরের দিকে উঠে আসে। আলট্রাসাউন্ড স্ক্যানের সময়ে তাতেই সুবিধা। যদিও গর্ভাবস্থার ১৫-১৬ সপ্তাহ পর থেকে আর আলাদা করে পানি পান করে ইউএসজি করানোর প্রয়োজন পড়ে না। এমনিতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে জরায়ু।

 

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার আগে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা কমলালেবুর রস পান করলে সেরা ফল পাওয়া যায়। ‘প্রেগন্যান্সি গাইড’-এর একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, “এক গ্লাস কমলালেবুর রস গর্ভস্থ শিশুকে বেশি সচল করে তুলতে পারে। এর ফলে আলট্রাসাউন্ডে পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায়।” তবে কি পানির থেকেও বেশি কার্যকরী কমলালেবুর রস?

কমলালেবুর রস নিয়ে এই দাবি কি আদৌ বিজ্ঞানসম্মত?

এ নিয়ে কলকাতার সোনোলজিস্ট নম্রতা চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘‘কেবল কমলালেবু নয়, হবু মায়েদের ক্ষেত্রে যে কোনও মিষ্টি খাবার বা পানীয়, যেমন গ্লুকোজের পানি বা চকোলেট খাওয়ার পরামর্শ দিই আমরা। মায়ের শরীরে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ভ্রূণে তার প্রভাব পড়ে। শিশুর নড়াচড়াকে উদ্দীপিত করতে পারে চিনি। আর আলট্রাসাউন্ডের সময় শিশুটি নড়লে আমাদের স্পষ্ট ছবি পেতে সুবিধা হয়। কখনও কখনও গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিকে দেখা যায়, শিশু খুব বেশি নড়াচড়া করছে না, তখন এক গ্লাস কমলালেবুর রস পান করিয়ে পরীক্ষা করলে সুবিধা হতে পারে। কারণ এতে দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি পায়। শিশু ঠিক মতো নড়াচড়া না করলে হয়তো অনেক সময় এনটি স্ক্যান, অ্যানোমালি স্ক্যানে ঠিকঠাক রিপোর্ট পাওয়া যায় না। এর ফলে অনেক রোগের ঝুঁকি হয়তো চোখেই পড়ে না।’’

 

ইউএসজি-র আগে গোটা ফল না খেয়ে ফলের রস খাওয়ানোর পক্ষপাতী চিকিৎসক। তার কারণ, গোটা ফলের তুলনায় জ্যুস অনেক দ্রুত হজম হয়। যত তাড়াতাড়ি হজম হবে, তত দ্রুত ভ্রুণের উপর চিনির প্রভাব পড়বে।

 

কাদের জন্য কমলালেবুর রস নিরাপদ নয়?

চিকিৎসকের মতে, কমলালেবুর রস খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। অনেকেরই অম্বলের সমস্যা হয় এই ধরনের জ্যুসে। সে ক্ষেত্রে শুধু পানিই কার্যকরী। শিশু নড়াচড়া না করলেই একমাত্র চিনির প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়া হবু মা যদি ডায়াবিটিক হন, সে ক্ষেত্রেও জ্যুস এড়িয়ে চলা উচিত।

 

সোনোলজিস্টের পরামর্শ, অন্তঃসত্ত্বা নারীর শারীরিক অবস্থা এবং শিশুর উপর নির্ভর করে, নড়াচড়াকে প্রভাবিত করতে পানি খাওয়ানো উচিত না কি কমলালেবু বা চিনিজাতীয় কিছুর রস। কিন্তু চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» শ্রমিক দিবসে ঢাকায় বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি

» ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধাবস্থা, বাংলাদেশেরও প্রস্তুতি থাকা দরকার’

» শিগগিরই শ্রম আইন সংশোধন করা হবে : শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা

» ঢাবি বাস ভাঙচুর ও শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় ৫ জন গ্রেফতার

» মিরাজ-সাকিবের জুটিতে ৪০০ পেরিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে বাংলাদেশ

» মাদকাসক্ত ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করল বাবা

» আজারবাইজানের সঙ্গে কানেক্টিভিটি বাড়াতে সম্মত প্রধান উপদেষ্টা

» অন্যস্বর টরন্টোর আয়োজনে ‘বৈশাখের পঙক্তিমালা’

» রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার হাইকোর্টের রায় ৮ মে

» সালমান-আনিসুল-মামুন ফের রিমান্ডে

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আলট্রাসনোগ্রাফির আগে গর্ভবতী নারী কি পান করবে, পানি না কমলার রস?

ছবি সংগৃহীত

 

হেলথ  ডেস্ক :আলট্রাসনোগ্রাফি বা ইউএসজি-র আগে তরল পান করে পেট ভরিয়ে নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে তো সকলেই অবগত। গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে অ্যাবডোমেনের স্পষ্ট ছবি পাওয়ার জন্য আধ ঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিট আগে পর্যন্ত বেশি পরিমাণে পানি পান করে পেট ভরিয়ে ফেলতে হয়, তবেই আলট্রাসাউন্ডের সাহায্যে স্পষ্ট ছবি পাওয়া যায়। তরল পান করলে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মূত্রাশয় ভরে যায়। ফলে জরায়ু খানিক উপরের দিকে উঠে আসে। আলট্রাসাউন্ড স্ক্যানের সময়ে তাতেই সুবিধা। যদিও গর্ভাবস্থার ১৫-১৬ সপ্তাহ পর থেকে আর আলাদা করে পানি পান করে ইউএসজি করানোর প্রয়োজন পড়ে না। এমনিতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে জরায়ু।

 

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার আগে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা কমলালেবুর রস পান করলে সেরা ফল পাওয়া যায়। ‘প্রেগন্যান্সি গাইড’-এর একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, “এক গ্লাস কমলালেবুর রস গর্ভস্থ শিশুকে বেশি সচল করে তুলতে পারে। এর ফলে আলট্রাসাউন্ডে পরিষ্কার ছবি পাওয়া যায়।” তবে কি পানির থেকেও বেশি কার্যকরী কমলালেবুর রস?

কমলালেবুর রস নিয়ে এই দাবি কি আদৌ বিজ্ঞানসম্মত?

এ নিয়ে কলকাতার সোনোলজিস্ট নম্রতা চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, ‘‘কেবল কমলালেবু নয়, হবু মায়েদের ক্ষেত্রে যে কোনও মিষ্টি খাবার বা পানীয়, যেমন গ্লুকোজের পানি বা চকোলেট খাওয়ার পরামর্শ দিই আমরা। মায়ের শরীরে চিনির পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ভ্রূণে তার প্রভাব পড়ে। শিশুর নড়াচড়াকে উদ্দীপিত করতে পারে চিনি। আর আলট্রাসাউন্ডের সময় শিশুটি নড়লে আমাদের স্পষ্ট ছবি পেতে সুবিধা হয়। কখনও কখনও গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিকে দেখা যায়, শিশু খুব বেশি নড়াচড়া করছে না, তখন এক গ্লাস কমলালেবুর রস পান করিয়ে পরীক্ষা করলে সুবিধা হতে পারে। কারণ এতে দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি পায়। শিশু ঠিক মতো নড়াচড়া না করলে হয়তো অনেক সময় এনটি স্ক্যান, অ্যানোমালি স্ক্যানে ঠিকঠাক রিপোর্ট পাওয়া যায় না। এর ফলে অনেক রোগের ঝুঁকি হয়তো চোখেই পড়ে না।’’

 

ইউএসজি-র আগে গোটা ফল না খেয়ে ফলের রস খাওয়ানোর পক্ষপাতী চিকিৎসক। তার কারণ, গোটা ফলের তুলনায় জ্যুস অনেক দ্রুত হজম হয়। যত তাড়াতাড়ি হজম হবে, তত দ্রুত ভ্রুণের উপর চিনির প্রভাব পড়বে।

 

কাদের জন্য কমলালেবুর রস নিরাপদ নয়?

চিকিৎসকের মতে, কমলালেবুর রস খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। অনেকেরই অম্বলের সমস্যা হয় এই ধরনের জ্যুসে। সে ক্ষেত্রে শুধু পানিই কার্যকরী। শিশু নড়াচড়া না করলেই একমাত্র চিনির প্রয়োজন পড়ে। এ ছাড়া হবু মা যদি ডায়াবিটিক হন, সে ক্ষেত্রেও জ্যুস এড়িয়ে চলা উচিত।

 

সোনোলজিস্টের পরামর্শ, অন্তঃসত্ত্বা নারীর শারীরিক অবস্থা এবং শিশুর উপর নির্ভর করে, নড়াচড়াকে প্রভাবিত করতে পানি খাওয়ানো উচিত না কি কমলালেবু বা চিনিজাতীয় কিছুর রস। কিন্তু চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com