আজানের মতো ইকামতেরও কি জবাব দিতে হয়?

ছবি সংগৃহীত

 

ইসলাম ডেস্ক :  আজানের জবাব দেওয়া যেমন সুন্নত, ইকামতের জবাব দেওয়াও সুন্নত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন আপনারা নামাজের দিকে আহ্বান শুনবেন, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তাই বলবেন। (সহিহ মুসলিম: ৩৮৩)

 

এই হাদিসে ‘নামাজের আহ্বান’ বলে ব্যাপকভাবে আজান ও ইকামত উভয়টিই বোঝানো হয়েছে।

 

ইকামতের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি হলো, তাকবির, শাহাদাত ইত্যাদি সব বাক্যের ক্ষেত্রে মুয়াজ্জিন যা বলে তাই বলে যাওয়া। শুধু ‘হাইয়া আলাস-সালাহ’ ও হাইয়া আলাল ফালাহ’ শুনে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ বলা এবং ‘কাদ কামাতিস-সালাহ’ শুনে ‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’ বলা।

 

আবু উমামাহ (রা.) বলেন, একবার বিলাল (রা.) ইকামত দিতে শুরু করলেন। তিনি যখন ‘কাদ কামাতিস সালাহ’ (নামাজা শুরু হচ্ছে) বললেন, তখন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘আকামাহা-ল্লাহু ওয়া আদামাহা’ (আল্লাহ নামাজকে প্রতিষ্ঠিত ও চিরস্থায়ী করুন)। বাকি সব বাক্যের জবাবে ওমরের (রা.) বর্ণিত হাদিসে আজানের উত্তরে যেমন উল্লেখ রয়েছে তেমনই বললেন। (সুনানে আবু দাউদ)

এ হাদিসে হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত আজানের বিস্তারিত জবাব সম্বলিত হাদিসটির কথা বলা হচ্ছে। ওমরের (রা.) বর্ণিত হাদিসটিতে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কেউ যদি মুয়াজ্জিনের ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’-এর জাওয়াবে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ বলে, ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলে, ‘হাইয়্যা আলাস্-সলাহ’-এর জওয়াবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলে, ‘হাইয়্যা আলাল-ফালাহ’-এর জওয়াবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলে, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’-এর জওয়াবে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ এবং ‘লা-ইলাহা ইল্লল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘লা-ইলাহা ইল্লল্লাহ’ বলে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহিহ মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ)

ইকামতে যা বলা হয়

ধারাবাহিকভাবে ইকামতের বাক্যসমূহ এবং সেগুলোর অর্থ এখানে উল্লেখ করা হলো:

আল্লাহু আকবার অর্থাৎ আল্লাহ মহান (৪ বার)

আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই (২ বার)

আশহাদু আন্না মোহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল (২ বার)

হাইয়া আল্লাস সালাহ অর্থাৎ নামাজের দিকে আসুন (২ বার)

হাইয়া আলাল ফালাহ অর্থাৎ কল্যাণের দিকে আসুন (২ বার)

কাদ কামাতিস সালাহ অর্থাৎ নামাজ শুরু হচ্ছে (২ বার)

আল্লাহু আকবার অর্থাৎ আল্লাহ মহান (২ বার)

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই (১ বার)

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দূর করার দায়িত্ব সরকারের : জয়নুল আবদিন ফারুক

» ন্যুনতম খাবারও দেওয়া হচ্ছে না ফিলিস্তিনি বন্দিদের

» ঘুম থেকে উঠে দেখি ফেসবুক আইডি ডিজেবল: ভিপি প্রার্থী আবিদ

» সুপ্রভাত বিষন্নতা

» প্রয়োজন ৩০ বিলিয়ন ডলার, ২ বিলিয়ন আনতেই ‘জান বের হয়ে যায়’

» পরাজয়ের আশঙ্কা থেকে একটি গোষ্ঠী সাইবার অ্যাটাক দিচ্ছে : ছাত্রদল

» শ্বাসকষ্ট বেড়েছে নুরের, হাসপাতালে ভিড় না করার অনুরোধ

» বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৬৭৭ জন গ্রেফতার

» ট্রাম্পের ‘শেষ সতর্কবার্তার’ পর আলোচনায় আগ্রহী হামাস

» ডাকসু নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই: ডিএমপি

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আজানের মতো ইকামতেরও কি জবাব দিতে হয়?

ছবি সংগৃহীত

 

ইসলাম ডেস্ক :  আজানের জবাব দেওয়া যেমন সুন্নত, ইকামতের জবাব দেওয়াও সুন্নত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যখন আপনারা নামাজের দিকে আহ্বান শুনবেন, তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তাই বলবেন। (সহিহ মুসলিম: ৩৮৩)

 

এই হাদিসে ‘নামাজের আহ্বান’ বলে ব্যাপকভাবে আজান ও ইকামত উভয়টিই বোঝানো হয়েছে।

 

ইকামতের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি হলো, তাকবির, শাহাদাত ইত্যাদি সব বাক্যের ক্ষেত্রে মুয়াজ্জিন যা বলে তাই বলে যাওয়া। শুধু ‘হাইয়া আলাস-সালাহ’ ও হাইয়া আলাল ফালাহ’ শুনে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ বলা এবং ‘কাদ কামাতিস-সালাহ’ শুনে ‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’ বলা।

 

আবু উমামাহ (রা.) বলেন, একবার বিলাল (রা.) ইকামত দিতে শুরু করলেন। তিনি যখন ‘কাদ কামাতিস সালাহ’ (নামাজা শুরু হচ্ছে) বললেন, তখন আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘আকামাহা-ল্লাহু ওয়া আদামাহা’ (আল্লাহ নামাজকে প্রতিষ্ঠিত ও চিরস্থায়ী করুন)। বাকি সব বাক্যের জবাবে ওমরের (রা.) বর্ণিত হাদিসে আজানের উত্তরে যেমন উল্লেখ রয়েছে তেমনই বললেন। (সুনানে আবু দাউদ)

এ হাদিসে হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত আজানের বিস্তারিত জবাব সম্বলিত হাদিসটির কথা বলা হচ্ছে। ওমরের (রা.) বর্ণিত হাদিসটিতে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, কেউ যদি মুয়াজ্জিনের ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’-এর জাওয়াবে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ বলে, ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে, ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ বলে, ‘হাইয়্যা আলাস্-সলাহ’-এর জওয়াবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলে, ‘হাইয়্যা আলাল-ফালাহ’-এর জওয়াবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলে, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’-এর জওয়াবে ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ এবং ‘লা-ইলাহা ইল্লল্লাহ’-এর জওয়াবে ‘লা-ইলাহা ইল্লল্লাহ’ বলে তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহিহ মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ)

ইকামতে যা বলা হয়

ধারাবাহিকভাবে ইকামতের বাক্যসমূহ এবং সেগুলোর অর্থ এখানে উল্লেখ করা হলো:

আল্লাহু আকবার অর্থাৎ আল্লাহ মহান (৪ বার)

আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই (২ বার)

আশহাদু আন্না মোহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল (২ বার)

হাইয়া আল্লাস সালাহ অর্থাৎ নামাজের দিকে আসুন (২ বার)

হাইয়া আলাল ফালাহ অর্থাৎ কল্যাণের দিকে আসুন (২ বার)

কাদ কামাতিস সালাহ অর্থাৎ নামাজ শুরু হচ্ছে (২ বার)

আল্লাহু আকবার অর্থাৎ আল্লাহ মহান (২ বার)

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই (১ বার)

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com