নগরবাসীর জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় নববর্ষের উপহার হিসেবে সাতটি পার্ক ও মাঠ উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো। এগুলো আপনাদেরই পার্ক। আপনাদেরই এসব পার্ক ও মাঠকে দেখে রাখতে হবে। মাঠগুলোকে আপনারা সন্তানের মতো ভালোবাসবেন, এটা আমার অনুরোধ।’
শনিবার রাজধানীর শ্যামলী পার্কে উন্নয়নকৃত ‘সাতটি পার্ক ও মাঠের শুভ উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উন্মুক্ত স্থানগুলোর আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও সবুজায়ন প্রকল্পের আওতায় এসব পার্ক ও মাঠের উন্নয়ন করা হয়েছে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেছেন, ‘শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ— সব বয়সের মানুষ এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষসহ সবার সুবিধার কথা বিবেচনা করেই এসব পার্ক ও মাঠের নকশা করা হয়েছে। মাঠে আছে শিশু ও বড়দের আলাদা খেলার জায়গা, নারীদের বসার সুব্যবস্থা, খেলা উপভোগ করার জন্য গ্যালারি। আমরা এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে তাদের চাহিদার ভিত্তিতেই পার্ক ও মাঠের নকশা প্রণয়ন করেছি।
তিনি বলেন, ‘এই মাঠে কখনো যেন পানি না জমে, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে ক্রিকেট ও ফুটবল দুটিই খেলা যাবে। বহুমুখী উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই মাঠের নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে।
ডেভেলপার কোম্পানিগুলোকে তিনি বলেন, ‘আপনারা জনগণের খাল ও নদী বালু দিয়ে ভরাট করে বেদখল করবেন না। আপনারা নকশা অনুমোদনের সময় যে খেলার মাঠ, পার্ক, কবরস্থান দেখিয়েছেন, সেগুলো নগরবাসীকে ফিরিয়ে দিন। সেগুলো ফিরিয়ে না দিলে জনগণের সাথে প্রতারণা করা হবে। এগুলো ফিরিয়ে না দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদেরকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য খেলার মাঠ, পার্ক, খাল এগুলো উদ্ধার করে দিতেই হবে। তাদের প্রতি এটা আমাদের দায়িত্ব। মহানগর জরিপ অনুযায়ী ৬০ ফিট খালকে ৬ ফিট বানিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দখল করা যাবে না। সিএস এবং আরএস অনুযায়ী যেটি বেশি, সে অনুযায়ী খালের সীমানা নির্ধারণ করা হবে।
ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে এসব পার্ক ও মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটি করার নির্দেশনা দেন মেয়র।
সাতটি পার্ক ও খেলার মাঠ হলো—শ্যামলী পার্ক, ইকবাল রোড পার্ক, হুমায়ুন রোড পার্ক, বনানী ব্লক-সি পার্ক, বারিধারা পার্ক, বনানী ব্লক-এফ পার্ক, রায়ের বাজার বৈশাখী খেলার মাঠ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা- ১৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাদেক খান। সাতটি পার্ক ও মাঠের উন্নয়নকাজ সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ডিএনসিসি মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য এই পার্ক ও মাঠগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক সুবিধাসম্বলিত পার্ক ও মাঠগুলো পেয়ে আমরা সত্যি আনন্দিত। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা সব সময় ডিএনসিসির পাশে আছি।’
৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি স্থপতি ইকবাল হাবিব, ডিএনসিসির কাউন্সিলর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।