সন্তানকে মারার আগে একশোবার ভাবুন

ছবি সংগৃহীত

 

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোনোভাবেই শিশুদের মারধর করা উচিত নয়। এতে বাচ্চাদের মধ্যে এক ধরনের ভয়ের সৃষ্টি হয়। তা শারীরিক হতে পারে বা মানসিক। আসলে শিশুদের ইমশোনাল মেমরি স্ট্রং। যা অনেকদিন পর্যন্ত থেকে যেতে পারে। যার ফলে বড় হয়েও কিছু করতে গেলে আগে সে ভয় পাবে। মারধর করলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে তা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

 

এক্ষেত্রে বাচ্চাদের কী কী সমস্যা হতে পারে: বিশেষজ্ঞের মতে, বাচ্চাদের মার-ধর করলে তারা খুব ভিরু হয়ে যায়। অবচেতন মনে এই কষ্টের স্মৃতি বার বার ঘুরে ফিরে আসতে পারে। আবার কারোর ক্ষেত্রে জেদ বেড়ে যায়। বাবা-মায়েরা যদি বাচ্চাকে আঘাত করে, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে প্রতিশোধ স্পৃহা বাড়তে শুরু করে।

 

বড় হয়ে সেও অন্যকে আঘাত করতে পারে। এমনটা নয় যে বাচ্চা সব সময় জেনে-বুঝেই আঘাত করবে। কারও কারও ক্ষেত্রে তো বড় হওয়ার পরেও এমন মানসিকতা থেকে যেতে পারে। তাই বুঝতেই পারছেন বাচ্চাকে মারলে তার একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে, যা উপেক্ষা করার নয়।

 

ডাক্তারবাবুর মতে, কোনও বাচ্চার মধ্যে যদি গট মাও বি-নামক জিন নিয়ে জন্মায় এবং ছোটবেলায় বারংবার বাবা-মার কাছ থেকে লাঞ্ছনা পেতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে অ্যান্টিশোসাল হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

 

বাচ্চারা দুষ্টমি করলে কী কোনো শাস্তি দেওয়া যাবে না: বাচ্চার জেদ বা ট্যানট্রাম সামলানোর জন্য মারধোর বা বকাবকির প্রয়োজন নেই। বাবা-মার ধৈর্য বা পেশেন্স সব সমস্যার সমাধান করে দেবে। চিকিৎসকের মতে, বাবা-মার উচিত নিরীহ উপায়ে শিশুকে শাস্তি দেওয়া।

 

এই উপায়েও শোধরানো যায়: চিকিৎসকের মতে, বাচ্চার সঙ্গে নানা চুক্তি করুন। সহজভাবে বললে, যেমন ধরুন এই কাজটি করলে তবেই প্রিয় খেলনাটি সে পাবে। নইলে তার থেকে তা নিয়ে নেয়া হবে। এমন করুন, তাতে ফল পাবেন।

 

টাইম আউট পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন। কী বিষয়টা? বাচ্চা দুষ্টুমি করলে তাকে ঘরের কোনে বসিয়ে রাখুন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এই সময়ে কেউ তার সঙ্গে কথা বলবেন না বা আদর করবেন না।

 

বাড়ির সবাই একসঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিন। বাচ্চা কথা না শুনলে তার সঙ্গে কেউই যেন কথা না বলে সে দিকে নজর দিন। এই সময় কেউ যদি তাকে আদর করে বা কথা বলে, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এক্ষেত্রে যিনি এই শাস্তি দিচ্ছেন তাকে হয়তো বাচ্চা অসম্মান করতে শুরু করতে পারে। তাই পরিবারের সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

দুষ্টুমি বা অন্যায় করলে বাবা-মা তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে সেকথা বুঝিয়ে দিন বাচ্চাকে। তবে যাই করুন গায়ে কখনোই হাত তুলবেন না।

সূত্র: এই সময়

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ

» রাজনৈতিক দলপন্থি না হয়ে আপনারা বাংলাদেশপন্থি পুলিশ হয়ে ওঠেন : হাসনা

» দেশের স্বার্থে সবচেয়ে বেশি ‘স্যাক্রিফাইস’ করেছে বিএনপি: তারেক রহমান

» রংপুরে ১৭ বছর পর ৪ জুলাই জামায়াতের সমাবেশ

» খুনিদের বিচার না হলে সব থানা পটিয়া হয়ে উঠবে: সারজিস

» ‘হাতপাখার সমাবেশ’ বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ : ফারুক

» নতুন বাংলাদেশে নতুন করে চাঁদাবাজ হতে দেওয়া যাবে না: হাসনাত

» কোনো স্বৈরাচার চিরকাল ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না: নাহিদ

» যখনই গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে, বিএনপি সোচ্চার হয়েছে: তারেক রহমান

» রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঠাল খেলেন নাহিদ-হাসনাত-সার্জিসরা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সন্তানকে মারার আগে একশোবার ভাবুন

ছবি সংগৃহীত

 

মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোনোভাবেই শিশুদের মারধর করা উচিত নয়। এতে বাচ্চাদের মধ্যে এক ধরনের ভয়ের সৃষ্টি হয়। তা শারীরিক হতে পারে বা মানসিক। আসলে শিশুদের ইমশোনাল মেমরি স্ট্রং। যা অনেকদিন পর্যন্ত থেকে যেতে পারে। যার ফলে বড় হয়েও কিছু করতে গেলে আগে সে ভয় পাবে। মারধর করলে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে তা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

 

এক্ষেত্রে বাচ্চাদের কী কী সমস্যা হতে পারে: বিশেষজ্ঞের মতে, বাচ্চাদের মার-ধর করলে তারা খুব ভিরু হয়ে যায়। অবচেতন মনে এই কষ্টের স্মৃতি বার বার ঘুরে ফিরে আসতে পারে। আবার কারোর ক্ষেত্রে জেদ বেড়ে যায়। বাবা-মায়েরা যদি বাচ্চাকে আঘাত করে, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে প্রতিশোধ স্পৃহা বাড়তে শুরু করে।

 

বড় হয়ে সেও অন্যকে আঘাত করতে পারে। এমনটা নয় যে বাচ্চা সব সময় জেনে-বুঝেই আঘাত করবে। কারও কারও ক্ষেত্রে তো বড় হওয়ার পরেও এমন মানসিকতা থেকে যেতে পারে। তাই বুঝতেই পারছেন বাচ্চাকে মারলে তার একটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে, যা উপেক্ষা করার নয়।

 

ডাক্তারবাবুর মতে, কোনও বাচ্চার মধ্যে যদি গট মাও বি-নামক জিন নিয়ে জন্মায় এবং ছোটবেলায় বারংবার বাবা-মার কাছ থেকে লাঞ্ছনা পেতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে অ্যান্টিশোসাল হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

 

বাচ্চারা দুষ্টমি করলে কী কোনো শাস্তি দেওয়া যাবে না: বাচ্চার জেদ বা ট্যানট্রাম সামলানোর জন্য মারধোর বা বকাবকির প্রয়োজন নেই। বাবা-মার ধৈর্য বা পেশেন্স সব সমস্যার সমাধান করে দেবে। চিকিৎসকের মতে, বাবা-মার উচিত নিরীহ উপায়ে শিশুকে শাস্তি দেওয়া।

 

এই উপায়েও শোধরানো যায়: চিকিৎসকের মতে, বাচ্চার সঙ্গে নানা চুক্তি করুন। সহজভাবে বললে, যেমন ধরুন এই কাজটি করলে তবেই প্রিয় খেলনাটি সে পাবে। নইলে তার থেকে তা নিয়ে নেয়া হবে। এমন করুন, তাতে ফল পাবেন।

 

টাইম আউট পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন। কী বিষয়টা? বাচ্চা দুষ্টুমি করলে তাকে ঘরের কোনে বসিয়ে রাখুন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। এই সময়ে কেউ তার সঙ্গে কথা বলবেন না বা আদর করবেন না।

 

বাড়ির সবাই একসঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিন। বাচ্চা কথা না শুনলে তার সঙ্গে কেউই যেন কথা না বলে সে দিকে নজর দিন। এই সময় কেউ যদি তাকে আদর করে বা কথা বলে, তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এক্ষেত্রে যিনি এই শাস্তি দিচ্ছেন তাকে হয়তো বাচ্চা অসম্মান করতে শুরু করতে পারে। তাই পরিবারের সবাইকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

দুষ্টুমি বা অন্যায় করলে বাবা-মা তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে সেকথা বুঝিয়ে দিন বাচ্চাকে। তবে যাই করুন গায়ে কখনোই হাত তুলবেন না।

সূত্র: এই সময়

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com