শিশু সম্পদশালী হলে তার পক্ষ থেকে জাকাত আদায় করতে হবে?

ছবি সংগৃহীত

 

ইসলাম ডেস্ক  :অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে বা মেয়ের ওপর জাকাত ফরজ হয় না। তাই অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তার সম্পদের জাকাত আদায় করতে হয় না। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছেন,

لَيْسَ فِيْ مَالِ الْيَتِيْمِ زَكَاةٌ.

এতিমের সম্পদে জাকাত নেই। (কিতাবুল আছার: ২৯৪)

জাকাত ইসলামের ফরজ বিধান, ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক ও সম্পদশালী মুসলমান পুরুষ ও নারীর প্রতি বছর নিজের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দরিদ্র-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে জাকাত বলা হয়। শরিয়ত নির্ধারিত সীমার বেশি সম্পদ হিজরি ১ বছর ধরে কারো কাছে থাকলে তাকে সম্পদশালী গণ্য করা হয় এবং তার বর্ধনশীল সম্পদের ২.৫ শতাংশ বা ১/৪০ অংশ দান করতে হয়। কোরআনে জাকাত শব্দের উল্লেখ এসেছে ৩২ বার, নামাজের পর জাকাতের কথাই সবচেয়ে বেশি বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَمَا تُقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ تَجِدُوۡهُ عِنۡدَ اللّٰهِ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ

 

আর তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং যে নেক আমল তোমরা নিজদের জন্য আগে পাঠাবে, তা আল্লাহর নিকট পাবে। তোমরা যা করছ নিশ্চয় আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। (সুরা বাকারা: ১১০)

 

কেউ যদি এক বছর ধরে নেসাব পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পত্তি অর্থাৎ ৭ তোলা বা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা বা ৬১২.৩৫ গ্রাম রৌপ্যের মালিক থাকে অথবা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি স্বর্ণের মূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ তার কাছে থাকে, তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে সে সম্পদশালী ব্যক্তি গণ্য হবে এবং তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে। নগদ অর্থ, স্বর্ণ/ রৌপ্য বা ব্যবসায়ের সম্পদ যেদিন নেসাব পর্যায়ে পৌঁছাবে, সেদিন থেকেই জাকাতের বর্ষগণনা শুরু হবে। জাকাতের বর্ষ পূর্ণ হওয়ার দিনে ওই ব্যক্তির মালিকানায় যে পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পদ অর্থাৎ নগদ অর্থ, ব্যবসায়ের সম্পদ, স্বর্ণ বা রৌপ্য থাকবে, তার ৪০ ভাগের ১ ভাগ বা ২.৫ শতাংশ জাকাত হিসেবে দান করে দিতে হবে।

হিজরি ক্যালেন্ডার হিসেবে প্রতি বছর একবার জাকাতের হিসাব করতে হয়। আমাদের দেশে অনেকে রমজান মাসে জাকাতের হিসাব করে থাকেন। জাকাতের হিসাব করার পর সাথে সাথে পুরো অর্থ আদায় করা জরুরি নয়, বরং ওই অর্থ সারা বছরই অল্প অল্প করে আদায় করা যায়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাঁশতৈল ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি নিহত

» দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

» নারী পোশাককর্মীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্বামী আটক

» আমরা ক’জন সিডনি’র আয়োজনে বাংলা বর্ষবরণ

» সাবেক এনআইডি ডিজির এনআইডি ব্লক করার নির্দেশ

» ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

» যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে অটোরিকশার যাত্রী নিহত

» বিদ্যুৎ-মেট্রোরেল-সড়ক-রেলপথে যাত্রীসেবা বিঘ্নিত হলে টেলিভিশন স্ক্রলে দিতে হবে

» রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানি মামলায় খালাস পেলেন আমীর খসরু

» রোমে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উরুগুয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিশু সম্পদশালী হলে তার পক্ষ থেকে জাকাত আদায় করতে হবে?

ছবি সংগৃহীত

 

ইসলাম ডেস্ক  :অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে বা মেয়ের ওপর জাকাত ফরজ হয় না। তাই অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তার সম্পদের জাকাত আদায় করতে হয় না। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেছেন,

لَيْسَ فِيْ مَالِ الْيَتِيْمِ زَكَاةٌ.

এতিমের সম্পদে জাকাত নেই। (কিতাবুল আছার: ২৯৪)

জাকাত ইসলামের ফরজ বিধান, ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক ও সম্পদশালী মুসলমান পুরুষ ও নারীর প্রতি বছর নিজের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দরিদ্র-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে জাকাত বলা হয়। শরিয়ত নির্ধারিত সীমার বেশি সম্পদ হিজরি ১ বছর ধরে কারো কাছে থাকলে তাকে সম্পদশালী গণ্য করা হয় এবং তার বর্ধনশীল সম্পদের ২.৫ শতাংশ বা ১/৪০ অংশ দান করতে হয়। কোরআনে জাকাত শব্দের উল্লেখ এসেছে ৩২ বার, নামাজের পর জাকাতের কথাই সবচেয়ে বেশি বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَاٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَمَا تُقَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ مِّنۡ خَیۡرٍ تَجِدُوۡهُ عِنۡدَ اللّٰهِ اِنَّ اللّٰهَ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ بَصِیۡرٌ

 

আর তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং যে নেক আমল তোমরা নিজদের জন্য আগে পাঠাবে, তা আল্লাহর নিকট পাবে। তোমরা যা করছ নিশ্চয় আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা। (সুরা বাকারা: ১১০)

 

কেউ যদি এক বছর ধরে নেসাব পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পত্তি অর্থাৎ ৭ তোলা বা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা বা ৬১২.৩৫ গ্রাম রৌপ্যের মালিক থাকে অথবা ৮৭.৪৫ গ্রাম বা এর বেশি স্বর্ণের মূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ তার কাছে থাকে, তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে সে সম্পদশালী ব্যক্তি গণ্য হবে এবং তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে। নগদ অর্থ, স্বর্ণ/ রৌপ্য বা ব্যবসায়ের সম্পদ যেদিন নেসাব পর্যায়ে পৌঁছাবে, সেদিন থেকেই জাকাতের বর্ষগণনা শুরু হবে। জাকাতের বর্ষ পূর্ণ হওয়ার দিনে ওই ব্যক্তির মালিকানায় যে পরিমাণ বর্ধনশীল সম্পদ অর্থাৎ নগদ অর্থ, ব্যবসায়ের সম্পদ, স্বর্ণ বা রৌপ্য থাকবে, তার ৪০ ভাগের ১ ভাগ বা ২.৫ শতাংশ জাকাত হিসেবে দান করে দিতে হবে।

হিজরি ক্যালেন্ডার হিসেবে প্রতি বছর একবার জাকাতের হিসাব করতে হয়। আমাদের দেশে অনেকে রমজান মাসে জাকাতের হিসাব করে থাকেন। জাকাতের হিসাব করার পর সাথে সাথে পুরো অর্থ আদায় করা জরুরি নয়, বরং ওই অর্থ সারা বছরই অল্প অল্প করে আদায় করা যায়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com