মৃতব্যক্তিকে কবরে সকাল-সন্ধ্যায় যা দেখানো হয়

সংগৃহীত ছবি

 

ধর্ম ডেস্ক :মৃত্যুর পর থেকে কেয়ামত পর্যন্ত সময় হলো কবর বা বরজখ। এই সময়টাকে আখেরাতের প্রথম মনজিল বলা হয়। এখানেই শুরু হয়ে যাবে ছোট কেয়ামত। কবরস্থ ব্যক্তিকে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তার ঠিকানা দেখানো হয়। জান্নাতি হলে তার কবরকে প্রশস্থ করে দেওয়া হয়। জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করা হয়, ওখান দিয়ে জান্নাতের স্নিগ্ধকর হওয়া ও সুঘ্রাণ আসতে থাকে। উত্থান দিবস পর্যন্ত তাকে এভাবে সুখ-শান্তিতে রাখা হয়।

 

আর জাহান্নামিকে কবরে সকাল-সন্ধ্যায় তার জাহান্নামের আবাস দেখানো হয়। কবরকে সংকুচিত করে দেওয়া হয়। হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এভাবে শাস্তির মধ্যে থাকতে হয় জাহান্নামি ব্যক্তিকে।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কোনো ব্যক্তি মারা যায়, তখন সকাল-সন্ধ্যায় তার পরকালের আবাসস্থল তার নিকট পেশ করা হয়। যদি সে জান্নাতবাসী হয়, তবে তাকে জান্নাতবাসীর আবাস স্থান আর যদি সে জাহান্নামবাসী হয়, তবে তাকে জাহান্নামবাসীর আবাস স্থান দেখানো হয়। (সহিহ বুখারি: ৩২৪০)

 

অন্য হাদিসের বর্ণনামতে, জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দেওয়া হবে জান্নাতির কবরে এবং তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া তার জন্য জান্নাতের দিকে একটা দরজা খুলে দেওয়া হবে, যা দিয়ে জান্নাতের স্নিগ্ধকর হাওয়া ও সুগন্ধি বইতে থাকবে। ওই দরজা তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করা হবে।

 

আর জাহান্নামি ব্যক্তির কবরে জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দেওয়া হবে এবং তাকে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটা দরজা খুলে দেওয়া হবে, যে দরজা দিয়ে তার দিকে জাহান্নামের উত্তপ্ত বাতাস আসতে থাকবে। এ ছাড়া তার জন্য তার কবরকে সংকীর্ণ করে দেওয়া হবে, ফলে তার এক দিকের পাঁজর অপর দিকের পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যাবে। অতঃপর তার জন্য এক অন্ধ ও বধির ফেরেশতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার সঙ্গে একটি লোহার হাতুড়ি থাকে, যদি এ দ্বারা পাহাড়কে আঘাত করা হয় তাহলে তা ধুলায় পরিণত হয়ে যাবে।

 

সে তাকে হাতুড়ি দিয়ে সজোরে আঘাত করতে থাকে, এতে সে বিকট শব্দে চিৎকার করতে থাকে, যা মানুষ ও জ্বিন ছাড়া পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সব সৃষ্টি জীব শুনতে পায়। আঘাতের ফলে সে মাটিতে মিশে যায়। অতঃপর (শাস্তি অব্যাহত রাখার জন্য) পুনরায় তাতে রুহ ফেরত দেওয়া হয়। (আবু দাউদ: ৪৭৫৩)

 

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মজবুত ঈমান ও অফুরন্ত নেক আমলের মাধ্যমে জান্নাতিদের কাতারে শামিল হওয়ার তাওফিক দান করুন। কবরের শাস্তি ও জাহান্নাম থেকে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমিন।  সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» এই মুহূর্তে নির্বাচন দরকার : সেলিমা রহমান

» দেশের মানুষ বিএনপির দিকেই তাকিয়ে আছে : তারেক রহমান

» ইয়াবা পাচারের সময় যুবক আটক

» আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমা

» ভিকির সিনেমায় মুগ্ধ ক্যাটরিনা

» হোয়াটসঅ্যাপ অডিও-ভিডিও কলে নতুন সুবিধা

» জন্ম নিবন্ধনের কোনো মা-বাপ আছে বলে মনে হয় না: প্রধান উপদেষ্টা

» জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠন চেয়ে রিট

» তিন দিনের সফরে কুয়েত যাচ্ছেন সেনাপ্রধান

» দেশকে যা রক্ষা করে, তা অবৈধ নয় : ট্রাম্প

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মৃতব্যক্তিকে কবরে সকাল-সন্ধ্যায় যা দেখানো হয়

সংগৃহীত ছবি

 

ধর্ম ডেস্ক :মৃত্যুর পর থেকে কেয়ামত পর্যন্ত সময় হলো কবর বা বরজখ। এই সময়টাকে আখেরাতের প্রথম মনজিল বলা হয়। এখানেই শুরু হয়ে যাবে ছোট কেয়ামত। কবরস্থ ব্যক্তিকে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় তার ঠিকানা দেখানো হয়। জান্নাতি হলে তার কবরকে প্রশস্থ করে দেওয়া হয়। জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করা হয়, ওখান দিয়ে জান্নাতের স্নিগ্ধকর হওয়া ও সুঘ্রাণ আসতে থাকে। উত্থান দিবস পর্যন্ত তাকে এভাবে সুখ-শান্তিতে রাখা হয়।

 

আর জাহান্নামিকে কবরে সকাল-সন্ধ্যায় তার জাহান্নামের আবাস দেখানো হয়। কবরকে সংকুচিত করে দেওয়া হয়। হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। এভাবে শাস্তির মধ্যে থাকতে হয় জাহান্নামি ব্যক্তিকে।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কোনো ব্যক্তি মারা যায়, তখন সকাল-সন্ধ্যায় তার পরকালের আবাসস্থল তার নিকট পেশ করা হয়। যদি সে জান্নাতবাসী হয়, তবে তাকে জান্নাতবাসীর আবাস স্থান আর যদি সে জাহান্নামবাসী হয়, তবে তাকে জাহান্নামবাসীর আবাস স্থান দেখানো হয়। (সহিহ বুখারি: ৩২৪০)

 

অন্য হাদিসের বর্ণনামতে, জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দেওয়া হবে জান্নাতির কবরে এবং তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া তার জন্য জান্নাতের দিকে একটা দরজা খুলে দেওয়া হবে, যা দিয়ে জান্নাতের স্নিগ্ধকর হাওয়া ও সুগন্ধি বইতে থাকবে। ওই দরজা তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করা হবে।

 

আর জাহান্নামি ব্যক্তির কবরে জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দেওয়া হবে এবং তাকে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটা দরজা খুলে দেওয়া হবে, যে দরজা দিয়ে তার দিকে জাহান্নামের উত্তপ্ত বাতাস আসতে থাকবে। এ ছাড়া তার জন্য তার কবরকে সংকীর্ণ করে দেওয়া হবে, ফলে তার এক দিকের পাঁজর অপর দিকের পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যাবে। অতঃপর তার জন্য এক অন্ধ ও বধির ফেরেশতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার সঙ্গে একটি লোহার হাতুড়ি থাকে, যদি এ দ্বারা পাহাড়কে আঘাত করা হয় তাহলে তা ধুলায় পরিণত হয়ে যাবে।

 

সে তাকে হাতুড়ি দিয়ে সজোরে আঘাত করতে থাকে, এতে সে বিকট শব্দে চিৎকার করতে থাকে, যা মানুষ ও জ্বিন ছাড়া পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত সব সৃষ্টি জীব শুনতে পায়। আঘাতের ফলে সে মাটিতে মিশে যায়। অতঃপর (শাস্তি অব্যাহত রাখার জন্য) পুনরায় তাতে রুহ ফেরত দেওয়া হয়। (আবু দাউদ: ৪৭৫৩)

 

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে মজবুত ঈমান ও অফুরন্ত নেক আমলের মাধ্যমে জান্নাতিদের কাতারে শামিল হওয়ার তাওফিক দান করুন। কবরের শাস্তি ও জাহান্নাম থেকে আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন। আমিন।  সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com