পদ্মা সেতুর দুর্নীতি আড়াল করতেই ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্বে’ সরকার: রিজভী

পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ও সমালোচনা আড়াল করতেই সরকার ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ সাজিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

 

তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি পাগলা ঘোড়ার মতো বেসামাল হয়ে পড়েছে। মানুষের সমালোচনাকে বাকরুদ্ধ করার জন্যই দমননীতি কার্যকর করা হচ্ছে।

আজ রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা আসলেই আমাদের সমাজের অভ্যন্তরে অঘোষিত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার ক্ষমতা অজেয় ও তার কর্তৃত্ব অনতিক্রম্য। কদিন আগে তিনি আরও বেশি ক্ষমতা চান বলে জানিয়েছেন। এ মনোবৃত্তি হিটলার-মুসোলিনীর মতো।

 

তিনি বলেন, বর্তমানে শেখ হাসিনার যেটুকু ক্ষমতা তাতেই গণতন্ত্র, নির্বাচন, বাক-স্বাধীনতা দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও বেশি ক্ষমতার অধিকারী হলে দেশটাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে তা চিন্তা করতেও গা শিউরে ওঠে। আর্তনাদ আর হাহাকারে দেশ ভরে উঠবে। শুরু হবে অন্ধকার প্রতিক্রিয়া ও দাসত্বের বাতাবরণ। শেখ হাসিনা আরও বেশি ক্ষমতার অধিকারী হলে জনগণের বিবেক ও চিন্তার স্বাধীনতা এবং আলো ও অগ্রগতি চিরতরে ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে।

 

বিএনপির এ অন্যতম মুখপাত্র বলেন, গত শনিবার (১৮ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ইউট্যাবের একটি ঘরোয়া দাওয়াতে আমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও তিনজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলাম। আমন্ত্রিত অতিথিসহ সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ জন ছিলেন। এখানে যদি নাশকতার কোনো পরিকল্পনা করা হতো, তাহলে সিসিটিভির ক্যামেরার আওতার মধ্যে কিভাবে আমরা ডাইনিং কক্ষে গিয়ে বসলাম। সেখানে অনেকেই সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। এটিকেই এখন ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং তাদের দলদাস কিছু শিক্ষক।

তিনি বলেন, আসলে এক দেশে দুই আইন। ক্লাবসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের অভয়ারণ্য। অনেক রাত পর্যন্ত তারা ক্লাবে আড্ডা দেয় এবং লনটেনিস খেলাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালায়। তাদের জন্য সাত খুন মাফ। অথচ কোনো শিক্ষকের আমন্ত্রণে বিরোধী দলের কোনো নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সময়ের অবস্থান করলেই সেখানে নাশকতার গন্ধ পায় সরকার।

 

রিজভী বলেন, এমনকি অন্য দেশের অনেক শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীকে অহরহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেটিতে অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অগোচরে ব্যক্তিগত বা বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা দিব্যি সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপিয়ে বেড়ান। মূলত, সরকার তাদের সমালোচনাকারীদের কড়া নজরদারিতে রেখেছে। এখন বাংলাদেশের মানুষের দেহ ও মন সার্বক্ষণিক নজরদারিতে।

 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নতুন মায়েরা সকালে এই ৫ সুপারফুড খান

» হার্ট অ্যাটাক পরবর্তী ১ থেকে ২ ঘণ্টা কেন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

» বিশ্বের সবচেয়ে দামি খাবার ক্যাভিয়ার আসলে কী?

» এশিয়া কাপ থেকে বিদায় বাংলাদেশ, ফাইনালে ভারত

» মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্কুলশিক্ষক নিহত

» সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা ও আয়ের ব্যবস্থা করবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

» সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল

» অলিম্পিক উদ্বোধনের আগে ফ্রান্সের রেল নেটওয়ার্কে ভয়াবহ হামলা

» যুবলীগ কর্মী জুয়েলকে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে রাখে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা

» কেন বিষাক্ত মানুষদের ছেঁটে ফেলতে বললেন পরিণীতি?

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পদ্মা সেতুর দুর্নীতি আড়াল করতেই ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্বে’ সরকার: রিজভী

পদ্মা সেতুর দুর্নীতি ও সমালোচনা আড়াল করতেই সরকার ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ সাজিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

 

তিনি বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি পাগলা ঘোড়ার মতো বেসামাল হয়ে পড়েছে। মানুষের সমালোচনাকে বাকরুদ্ধ করার জন্যই দমননীতি কার্যকর করা হচ্ছে।

আজ রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা আসলেই আমাদের সমাজের অভ্যন্তরে অঘোষিত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার ক্ষমতা অজেয় ও তার কর্তৃত্ব অনতিক্রম্য। কদিন আগে তিনি আরও বেশি ক্ষমতা চান বলে জানিয়েছেন। এ মনোবৃত্তি হিটলার-মুসোলিনীর মতো।

 

তিনি বলেন, বর্তমানে শেখ হাসিনার যেটুকু ক্ষমতা তাতেই গণতন্ত্র, নির্বাচন, বাক-স্বাধীনতা দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এরপর আরও বেশি ক্ষমতার অধিকারী হলে দেশটাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে তা চিন্তা করতেও গা শিউরে ওঠে। আর্তনাদ আর হাহাকারে দেশ ভরে উঠবে। শুরু হবে অন্ধকার প্রতিক্রিয়া ও দাসত্বের বাতাবরণ। শেখ হাসিনা আরও বেশি ক্ষমতার অধিকারী হলে জনগণের বিবেক ও চিন্তার স্বাধীনতা এবং আলো ও অগ্রগতি চিরতরে ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে।

 

বিএনপির এ অন্যতম মুখপাত্র বলেন, গত শনিবার (১৮ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ইউট্যাবের একটি ঘরোয়া দাওয়াতে আমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও তিনজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলাম। আমন্ত্রিত অতিথিসহ সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ জন ছিলেন। এখানে যদি নাশকতার কোনো পরিকল্পনা করা হতো, তাহলে সিসিটিভির ক্যামেরার আওতার মধ্যে কিভাবে আমরা ডাইনিং কক্ষে গিয়ে বসলাম। সেখানে অনেকেই সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। এটিকেই এখন ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং তাদের দলদাস কিছু শিক্ষক।

তিনি বলেন, আসলে এক দেশে দুই আইন। ক্লাবসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের অভয়ারণ্য। অনেক রাত পর্যন্ত তারা ক্লাবে আড্ডা দেয় এবং লনটেনিস খেলাসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালায়। তাদের জন্য সাত খুন মাফ। অথচ কোনো শিক্ষকের আমন্ত্রণে বিরোধী দলের কোনো নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সময়ের অবস্থান করলেই সেখানে নাশকতার গন্ধ পায় সরকার।

 

রিজভী বলেন, এমনকি অন্য দেশের অনেক শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীকে অহরহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেটিতে অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অগোচরে ব্যক্তিগত বা বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা দিব্যি সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপিয়ে বেড়ান। মূলত, সরকার তাদের সমালোচনাকারীদের কড়া নজরদারিতে রেখেছে। এখন বাংলাদেশের মানুষের দেহ ও মন সার্বক্ষণিক নজরদারিতে।

 

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com