দেশে পেট্রল ও অকটেনের মজুত নিয়ে মঙ্গলবার রাত থেকে সামাজিক মাধ্যমে গুজব রটানো হলেও বুধবার সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। পেট্রল পাম্পে জ্বালানি নিয়ে আসা সাধারণ মানুষরা বলছেন, নিজেদের চাহিদা মতো আগের মতোই কিনে নিচ্ছেন তারা।
পেট্রল পাম্প সংশ্লিষ্টরাও জানান, সরবরাহ লাইনে আগের মতোই রয়েছে জ্বালানি পণ্য দুটির চাহিদা।
পেট্রল পাম্পে আসা ক্রেতারা জানান, জ্বালানি তেলের কোনো সমস্যা নেই, যতটুক চাওয়া হচ্ছে তারা সেটাই দিচ্ছেন। তেল নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো সীমাবাধা নেই। আপনার যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই নিতে পারছেন। জ্বালানি নেই এসব কথা গুজব।
বিপিসি জানিয়েছে, দেশের জ্বালানি তেলের সরবরাহ ও মজুতের কোনো ঘাটতি নেই।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, দেশে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকা ডিজেলের মজুত আছে এক মাসের বেশি। অকটেন ও পেট্রলের মজুতও পর্যাপ্ত রয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আছে আমদানি করা ডিজেল।
এছাড়া ইস্টার্ন রিফাইনারি এবং দেশীয় বেসরকারি প্ল্যান্টগুলোতে অকটেন ও পেট্রল উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। মূলত দেশেই রিফাইন করে পেট্রল ও অকটেন সরবরাহের কারণে নির্ভর করতে হয় না আমদানির ওপর। তাই বৈশ্বিক জ্বালানি পরিস্থিতি টালমাটাল হলেও পেট্রল ও অকটেন নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে জানান নীতিনির্ধারকরা।
জ্বালানি তেল আমদানি প্রসঙ্গে বিপিসির পরিচালক (অপারেশন ও বাণিজ্য) খালিদ আহম্মেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিপিসির চুক্তি অনুযায়ী জ্বালানি তেলের সরবরাহ লাইন এখনও স্বাভাবিক আছে। সরকার চাইছে দেশে জ্বালানি তেলের ব্যবহার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমাতে। এ লক্ষ্যে আমরা (বিপিসি) কাজ করছি। ইতোমধ্যে সরকার বিদ্যুৎ সেক্টরে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমিয়েছে। পরিবহন সেক্টরেও জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমানোর পরিকল্পনা আছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ পেট্রল ও অকটেন আমদানি করে না বললেই চলে। পেট্রলে এদেশ আত্মনির্ভরশীল। অকটেন কিছু পরিমাণ আমদানি করতে হয়, সেটা বুষ্টার হিসেবে। আমাদের গ্যাস ফিল্ডের কনডেনসেট থেকেই দেশের চাহিদার সবটুকু উৎপাদন করা হয়। দেশে অকটেন ও পেট্রলের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। এ ছাড়া দেশে অকটেন ও পেট্রলের পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও কিছু নামধারী মিডিয়া দেশকে শ্রীলংকা বানানোর অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনমনে ভীতি তৈরির উদ্দেশ্য নিয়েই এসব গুজব ছড়াচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম সময় সংবাদকে বলেন, পেট্রল ও অকটেনের মজুত নিয়ে বিপিসি ভালো বলতে পারবে। তবে দেশ শ্রীলংকার মতো হওয়ার কোনো আশঙ্কাই নেই। তাদের আসল সমস্যা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ। তাদের কোনো ডলার নেই। তারা ঋণখেলাপি হয়ে গেছে। আমাদের তো সেসব সমস্যা নেই। আমাদের পর্যাপ্ত মজুত আছে। আমাদের ইন্টারনাল রিজার্ভ অনেক শক্তিশালী। বিশেষ করে সঞ্চয়পত্রসহ অন্যান্য বিষয়ে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি। আমরা আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকসহ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করছি।