তেল খরচ কমানোর পদ্ধতি দেখতে হোটেলে ভিড়

সয়াবিন তেলের দাম নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে যাওয়ার কারণে ভোগান্তি বেড়েছে চরমে। তাই ঠাকুরগাঁওয়ের একটি হোটেলে সয়াবিন তেলের খরচ কিভাবে কমানো যায় তা দেখতে ভিড় জমিয়েছে মানুষ। আর এতে বেচা বিক্রি বেড়েছে হোটেল মালিক আব্দুল হামিদের।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, দোকান ভর্তি মানুষ। কেউ পরোটা খাচ্ছে কেউ আবার পরোটা ভাজা দেখছে। সবার চোখ দোকানের মাথার উপর থেকে কড়াই পর্যন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, হোটেলের চুলার কারিগরের মাথার উপর একটি বাঁশে সয়াবিনের তেল ঝুলে থাকতে। সেখান থেকে স্যালাইনের পাইপ বেয়ে পড়ছে তেল। দুই এক ফোটা করে তেল কড়াইয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। আর কারিগর তা দিয়ে পরোটা ভাজছে।

হোটেল মালিক আব্দুল হামিদ জানান, তেলের দাম বাড়ার কারণে খুব চিন্তা করছিলাম। গ্রামের দোকান কিভাবে কুলিয়ে উঠবো। পরে রুহুল নামের একজন কাস্টমার আমাকে এ বুদ্ধি দেয়। এখন গ্রামের প্রতিটি বাড়ির লোক এটি দেখতে আসছে। পরোটাও বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

 

পরোটা খেতে আসা তৌকির আহম্মেদ সিজান বলেন, তেলের দাম এত বেশি বাড়ার কারণে বাসায় আর পরোটা রান্না হয়না। রুহুল ভাইয়ের এমন আবিস্কার সমাজের জন্য কতটা স্বস্তির তা উপলব্ধি করছি।

 

আকাশ হোসেন বলেন, একদম সৃজনশীল একটি চিন্তা। সয়াবিনের উচ্চ দামের দিনে এমন চিন্তা প্রশংসনীয়, আমি আমার বাসাতেও এমন পদ্ধতি চালু করেছি।

রুহুল পন্ডিৎ বলেন, তেলের এমন সংকটের সময় হোটেল গুলোতে খুব তেল অপচয় হচ্ছে। তেলের অপচয় রোধ করতে এমন চিন্তা করেছি। নিজেরা স্থানীয় বাজার থেকে স্যালাইনের পাইপ কিনে এনে সেট করে দিয়েছি। এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসছে। অনেকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে। পদ্ধতিটা আরেকটু আধুনিক করলে হোটেল গুলোতে তেলের অপচয় কম হবে।

 

স্থানীয় শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ চলতে পারছেনা। তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম মানুষের দম আটকে গেছে। রুহুল একটা স্বস্তির বুদ্ধি এনেছে। তবে এটা সমাধান নয়। তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বাজার মনিটরিং করতে হবে, অসাধু ব্যবসায়ী ঠেকাতে হবে। আর তেল আমদানি করতে হবে সরকারকে।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করছে। সরকারের দেয়া নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি কেউ সয়াবিন তেল বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সময় তেলের অপচয় রোধে সকলকে আহ্বান জানান তিনি।

সূএ:বাংলাদেশ জার্নাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ধমক দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করতে চাইলে বিএনপি সহ্য করবে না : ফারুক

» পিআর ইস্যুতে যা বললেন মঈন খান

» ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণার পরিসর বাড়ানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

» আসিফের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দেশের স্বার্থে বন্দর ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

» বিশেষ অভিযানে মোট ১ হাজার ৩৫৩ জন গ্রেফতার

» হজ শেষে ফিরেছেন ৬০ হাজার ৫১৩ হাজি

» জামালপুরে নারী এগিয়ে চলা প্রকল্পের সভা অনুষ্ঠিত

» জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে  মোরেলগঞ্জে বিএনপির বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি

» ইসলামপুরে রহিম মেম্বার হত্যা সন্দেহে দুইজন আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

তেল খরচ কমানোর পদ্ধতি দেখতে হোটেলে ভিড়

সয়াবিন তেলের দাম নিম্ন আয়ের মানুষ ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে যাওয়ার কারণে ভোগান্তি বেড়েছে চরমে। তাই ঠাকুরগাঁওয়ের একটি হোটেলে সয়াবিন তেলের খরচ কিভাবে কমানো যায় তা দেখতে ভিড় জমিয়েছে মানুষ। আর এতে বেচা বিক্রি বেড়েছে হোটেল মালিক আব্দুল হামিদের।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, দোকান ভর্তি মানুষ। কেউ পরোটা খাচ্ছে কেউ আবার পরোটা ভাজা দেখছে। সবার চোখ দোকানের মাথার উপর থেকে কড়াই পর্যন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, হোটেলের চুলার কারিগরের মাথার উপর একটি বাঁশে সয়াবিনের তেল ঝুলে থাকতে। সেখান থেকে স্যালাইনের পাইপ বেয়ে পড়ছে তেল। দুই এক ফোটা করে তেল কড়াইয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। আর কারিগর তা দিয়ে পরোটা ভাজছে।

হোটেল মালিক আব্দুল হামিদ জানান, তেলের দাম বাড়ার কারণে খুব চিন্তা করছিলাম। গ্রামের দোকান কিভাবে কুলিয়ে উঠবো। পরে রুহুল নামের একজন কাস্টমার আমাকে এ বুদ্ধি দেয়। এখন গ্রামের প্রতিটি বাড়ির লোক এটি দেখতে আসছে। পরোটাও বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

 

পরোটা খেতে আসা তৌকির আহম্মেদ সিজান বলেন, তেলের দাম এত বেশি বাড়ার কারণে বাসায় আর পরোটা রান্না হয়না। রুহুল ভাইয়ের এমন আবিস্কার সমাজের জন্য কতটা স্বস্তির তা উপলব্ধি করছি।

 

আকাশ হোসেন বলেন, একদম সৃজনশীল একটি চিন্তা। সয়াবিনের উচ্চ দামের দিনে এমন চিন্তা প্রশংসনীয়, আমি আমার বাসাতেও এমন পদ্ধতি চালু করেছি।

রুহুল পন্ডিৎ বলেন, তেলের এমন সংকটের সময় হোটেল গুলোতে খুব তেল অপচয় হচ্ছে। তেলের অপচয় রোধ করতে এমন চিন্তা করেছি। নিজেরা স্থানীয় বাজার থেকে স্যালাইনের পাইপ কিনে এনে সেট করে দিয়েছি। এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসছে। অনেকে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে। পদ্ধতিটা আরেকটু আধুনিক করলে হোটেল গুলোতে তেলের অপচয় কম হবে।

 

স্থানীয় শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, খেটে খাওয়া মানুষ চলতে পারছেনা। তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম মানুষের দম আটকে গেছে। রুহুল একটা স্বস্তির বুদ্ধি এনেছে। তবে এটা সমাধান নয়। তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বাজার মনিটরিং করতে হবে, অসাধু ব্যবসায়ী ঠেকাতে হবে। আর তেল আমদানি করতে হবে সরকারকে।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করছে। সরকারের দেয়া নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি কেউ সয়াবিন তেল বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ সময় তেলের অপচয় রোধে সকলকে আহ্বান জানান তিনি।

সূএ:বাংলাদেশ জার্নাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com