ঢাকা এখন মোটরসাইকেলের শহর

পাশাপাশি ধনাঢ্য ব্যক্তির সন্তানদের ভরসাও এখন মোটরসাইকেল। স্টাইলের পাশাপাশি ফ্যাশনেও পরিণত হয়েছে এ যানবাহনটি। ঢাকার প্রতিটি ট্রাফিক সিগন্যালে মোটরসাইকেলের ব্যাপক উপস্থিতি। অন্য যানবাহনের জন্য রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মোটরসাইকেল। ঢাকায় মোটরসাইকেলের একচ্ছত্র আধিপত্য দিন দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বলছে, সারা দেশে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ লাখ ৭ হাজার ৮১৭টি মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯১২টির রেজিস্ট্রেশন করা হয়, অথচ ২০২১ সালে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৫২টি। বিআরটিএর এই পরিসংখ্যান থেকেই বুঝা যাচ্ছে কী পরিমাণ মোটরসাইকেল বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

দেখা গেছে, যেখানে সেখানে মোটরসাইকেল পার্কিং করছে। বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের চেয়ে চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহনকারী মোটরসাইকেলের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। ঢাকার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক সিগন্যালে গণপরিবহনের সঙ্গে শতাধিক মোটরসাইকেল অপেক্ষা করতে দেখা যায়। পাশাপাশি ছোটখাটো সিগন্যাল বা রাস্তার মোড়ে, অলিতে-গলিতে মোটরসাইকেলের উপস্থিতি লক্ষণীয়। দক্ষ চালকের পাশাপাশি অদক্ষ চালকের সংখ্যা কম নয়। সিগন্যাল অমান্য বা সিগন্যাল ছাড়লেই বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে এসব মোটরসাইকেল। অনেকে স্টাইল করে নিজের আধিপত্য জানান দিতে, কেউবা প্রেমিকা বা কাছের লোককে দেখাতে, কেউ দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে চালাচ্ছে মোটরসাইকেল। এতে অকালে প্রাণ ঝরছে অনেকের, আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে কেউ কেউ। রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেলের সংখ্যাও কম নয়। ঢাকা শহরের পাশাপাশি মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশের সড়ক ও মহাসড়কে। নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ছে। বেসরকারি তথ্য মতে, গত এক বছরে সারা দেশে ২ হাজার ৯৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯১ জন নিহত ও ২ হাজার ১৫৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী। যাদের বেশিরভাগই যুবক ও শিক্ষার্থী। তাই সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে শুধু ব্যবস্থা ও সিদ্ধান্ত নিলে হবে না, এর সঙ্গে কঠোর জবাবদিহিতা রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

 

তারা বলছেন, মোটরসাইকেল একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন। অন্য যানবাহনের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ গুণ বেশি। মানুষ নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ বাহনটির দিকেই আকৃষ্ট হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় সুযোগ পেলেই বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো কিংবা ফুটপাতের ওপর দিয়ে বা উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানো একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তীব্র যানজটের কারণে সবাই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহার করছে মোটরসাইকেল। এতে দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকিতে পড়ছে দেশ। এটা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করলে হতাহতের সংখ্যা কমে আসবে। ঢাকার প্রতিটি সড়কে দিন দিন বাড়ছে ব্যক্তিগত পরিবহন মোটরসাইকেলের সংখ্যা। ২০১৬-১৭ সালে মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হলে এর চাহিদা বেড়ে যায়। ঢাকা শহরে যানজটের মধ্যে দ্রুত চলাচলের জন্য এ যানবাহনটি ব্যবহার করেন নগরবাসী। টাকা আয়ের পথ হিসেবে অনেকে রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। কিন্তু রাইড শেয়ারিং ছাড়া এখন চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করছে বেশিরভাগ মোটরসাইকেল চালকরা।

 

অ্যাপসে মোটরসাইকেল চালকরা বলছেন, প্রতি মাসে গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু অ্যাপসে চলাচল করলে এত টাকা আয় হতো না। ঢাকায় যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। এখন অ্যাপস থেকে চুক্তিতে বেশি চলাচল হয়। বিভিন্ন সময় পুলিশ ধরে। মামলা দেয়। তখন টাকা দিয়ে ছাড়া পাই। কোথাও আবার পুলিশ দাঁড়াতে দেয় না। কখনো ধাওয়া দেয়। এভাবে আমাদের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলা চলছে। এটা সহ্য হয়ে গেছে। কারণ এটা এখন আমাদের পেশা।

 

গত কয়েক বছরে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, ২০২২ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৯৭৩টি, নিহত হয়েছেন ৩০৯১ জন এবং আহত ২১৫৪ জন। অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২১ দশমিক ২৬ শতাংশ, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২ দশমিক ২২ শতাংশ, মোটরসাইকেলে ভারি যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৪৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ৩৮ দশমিক ৩১ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেল চালক এককভাবে দায়ী ছিল। অপ্রাপ্ত বয়সের কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

 

এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, গণপরিবহনের স্বল্পতা ও যানজটের কারণে মোটরসাইকেলের দিকে ঝুঁকছেন নগরবাসী। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর ও যুবক। এদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা এবং না মানার বিষয়টি প্রবল। কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় পড়ছে এবং অন্যদেরও ফেলছে। মোটরসাইকেল চার চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আধুনিক, সাশ্রয়ী ও মানসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু এবং যানজট নিরসন করতে পারলে এটির ব্যবহার কমে আসবে। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের রোড সেফটি প্রকল্পের সমন্বয়কারী শারমিন রহমান বলেন, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের বাবা-মায়ের কাছে বড় ডিমান্ড থাকে মোটরসাইকেলের। আয়ের উৎস হিসেবে মোবাইল অ্যাপসকেন্দ্রিক এবং চুক্তিভিত্তিক মোটরসাইকেল চলাচল বেড়েছে। আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কেউ মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন না। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় উঠতি বয়সী ছেলেরা মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। তারা নিজেদের আধুনিক ও স্মার্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে এবং দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।  সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জুলাই-আগস্টের চেতনা হারিয়ে যাচ্ছে: উপদেষ্টা নাহিদ

» পূজায় অপ্রীতিকর ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: আইজিপি

» সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ : ইশরাক

» ধর্মের উপর আঘাত সহ্য করা হবে না

» কুচক্রী মহলের হীন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে : র‍্যাব মহাপরিচালক

» গণহত্যার বিচার শুরু হলে অনেক দ্বিধা-প্রশ্ন দূর হবে : আসিফ নজরুল

» ১৩ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

» মঙ্গলবার ফল প্রকাশ যেভাবে জানবেন এইচএসসি ও সমমানের রেজাল্ট

» জামালপুরে সেফটিক ট্যাংক থেকে নৈশ্যপ্রহরীর মরদেহ উদ্ধার

» এভারকেয়ার হসপিটালে কালেকশন সার্ভিস দেবে ব্র্যাক ব্যাংক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঢাকা এখন মোটরসাইকেলের শহর

পাশাপাশি ধনাঢ্য ব্যক্তির সন্তানদের ভরসাও এখন মোটরসাইকেল। স্টাইলের পাশাপাশি ফ্যাশনেও পরিণত হয়েছে এ যানবাহনটি। ঢাকার প্রতিটি ট্রাফিক সিগন্যালে মোটরসাইকেলের ব্যাপক উপস্থিতি। অন্য যানবাহনের জন্য রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মোটরসাইকেল। ঢাকায় মোটরসাইকেলের একচ্ছত্র আধিপত্য দিন দিন বেড়েই চলছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বলছে, সারা দেশে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ লাখ ৭ হাজার ৮১৭টি মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালে ৫ লাখ ৬ হাজার ৯১২টির রেজিস্ট্রেশন করা হয়, অথচ ২০২১ সালে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৫২টি। বিআরটিএর এই পরিসংখ্যান থেকেই বুঝা যাচ্ছে কী পরিমাণ মোটরসাইকেল বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

দেখা গেছে, যেখানে সেখানে মোটরসাইকেল পার্কিং করছে। বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের চেয়ে চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহনকারী মোটরসাইকেলের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। ঢাকার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক সিগন্যালে গণপরিবহনের সঙ্গে শতাধিক মোটরসাইকেল অপেক্ষা করতে দেখা যায়। পাশাপাশি ছোটখাটো সিগন্যাল বা রাস্তার মোড়ে, অলিতে-গলিতে মোটরসাইকেলের উপস্থিতি লক্ষণীয়। দক্ষ চালকের পাশাপাশি অদক্ষ চালকের সংখ্যা কম নয়। সিগন্যাল অমান্য বা সিগন্যাল ছাড়লেই বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে এসব মোটরসাইকেল। অনেকে স্টাইল করে নিজের আধিপত্য জানান দিতে, কেউবা প্রেমিকা বা কাছের লোককে দেখাতে, কেউ দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে চালাচ্ছে মোটরসাইকেল। এতে অকালে প্রাণ ঝরছে অনেকের, আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে কেউ কেউ। রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেলের সংখ্যাও কম নয়। ঢাকা শহরের পাশাপাশি মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশের সড়ক ও মহাসড়কে। নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বাড়ছে। বেসরকারি তথ্য মতে, গত এক বছরে সারা দেশে ২ হাজার ৯৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৯১ জন নিহত ও ২ হাজার ১৫৪ জন আহত হয়েছেন। নিহতের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী। যাদের বেশিরভাগই যুবক ও শিক্ষার্থী। তাই সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে শুধু ব্যবস্থা ও সিদ্ধান্ত নিলে হবে না, এর সঙ্গে কঠোর জবাবদিহিতা রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

 

তারা বলছেন, মোটরসাইকেল একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন। অন্য যানবাহনের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ গুণ বেশি। মানুষ নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ বাহনটির দিকেই আকৃষ্ট হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় সুযোগ পেলেই বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো কিংবা ফুটপাতের ওপর দিয়ে বা উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালানো একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তীব্র যানজটের কারণে সবাই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহার করছে মোটরসাইকেল। এতে দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকিতে পড়ছে দেশ। এটা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করলে হতাহতের সংখ্যা কমে আসবে। ঢাকার প্রতিটি সড়কে দিন দিন বাড়ছে ব্যক্তিগত পরিবহন মোটরসাইকেলের সংখ্যা। ২০১৬-১৭ সালে মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হলে এর চাহিদা বেড়ে যায়। ঢাকা শহরে যানজটের মধ্যে দ্রুত চলাচলের জন্য এ যানবাহনটি ব্যবহার করেন নগরবাসী। টাকা আয়ের পথ হিসেবে অনেকে রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। কিন্তু রাইড শেয়ারিং ছাড়া এখন চুক্তিভিত্তিক যাত্রী পরিবহন করছে বেশিরভাগ মোটরসাইকেল চালকরা।

 

অ্যাপসে মোটরসাইকেল চালকরা বলছেন, প্রতি মাসে গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু অ্যাপসে চলাচল করলে এত টাকা আয় হতো না। ঢাকায় যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। এখন অ্যাপস থেকে চুক্তিতে বেশি চলাচল হয়। বিভিন্ন সময় পুলিশ ধরে। মামলা দেয়। তখন টাকা দিয়ে ছাড়া পাই। কোথাও আবার পুলিশ দাঁড়াতে দেয় না। কখনো ধাওয়া দেয়। এভাবে আমাদের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলা চলছে। এটা সহ্য হয়ে গেছে। কারণ এটা এখন আমাদের পেশা।

 

গত কয়েক বছরে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, ২০২২ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৯৭৩টি, নিহত হয়েছেন ৩০৯১ জন এবং আহত ২১৫৪ জন। অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২১ দশমিক ২৬ শতাংশ, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২ দশমিক ২২ শতাংশ, মোটরসাইকেলে ভারি যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৪৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ৩৮ দশমিক ৩১ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেল চালক এককভাবে দায়ী ছিল। অপ্রাপ্ত বয়সের কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

 

এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, গণপরিবহনের স্বল্পতা ও যানজটের কারণে মোটরসাইকেলের দিকে ঝুঁকছেন নগরবাসী। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর ও যুবক। এদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা এবং না মানার বিষয়টি প্রবল। কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে নিজেরা দুর্ঘটনায় পড়ছে এবং অন্যদেরও ফেলছে। মোটরসাইকেল চার চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। আধুনিক, সাশ্রয়ী ও মানসম্মত গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু এবং যানজট নিরসন করতে পারলে এটির ব্যবহার কমে আসবে। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের রোড সেফটি প্রকল্পের সমন্বয়কারী শারমিন রহমান বলেন, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের বাবা-মায়ের কাছে বড় ডিমান্ড থাকে মোটরসাইকেলের। আয়ের উৎস হিসেবে মোবাইল অ্যাপসকেন্দ্রিক এবং চুক্তিভিত্তিক মোটরসাইকেল চলাচল বেড়েছে। আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে কেউ মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন না। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় উঠতি বয়সী ছেলেরা মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। তারা নিজেদের আধুনিক ও স্মার্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে এবং দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।  সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com