ডায়মন্ড আসল না-কি নকল যেভাবে চিনবেন

চকচক করলেই সোনা হয় না। ঠিক তেমনি যেকোনো উজ্জ্বল-চকচকে পাথর মানেই কিন্তু ডায়মন্ড বা হীরা নয়। কিন্তু কি করে চিনবেন আসল হীরা? এর সঠিক উত্তর দিতে পারেন কেবল মাত্র একজন রত্নবিশেষজ্ঞ বা জেমোলজিস্ট।

 

সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বিখ্যাত রত্নবিশেষজ্ঞ রেনি হির্চ জানিয়েছেন আসল ডায়মন্ড বা হীরা চেনার কিছু কৌশল। অনেকেই ডায়মন্ডের গয়না কেনেন। সব সময় নামী ব্র্যান্ডের দোকান থেকে কেনা না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আসল ডায়মন্ড চেনার এই কৌশলগুলো জানা থাকলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কৌশলগুলো-

শিরিষ কাজগ দিয়ে ঘষা

এটা খুব সহজ একটি পদ্ধতি। ডায়মন্ড বিশ্বের সবচেয়ে শক্ত বস্তু। কোনো কিছু দিয়েই একে ঘষে মসৃণ করা যাবে না। কিন্তু যদি কৃত্রিম হীরা হয় তাহলে এতে শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষলেই তাতে দাগ পড়বে।

আলোর প্রতিফলন দেখা

আসল ডায়মন্ড যেভাবে আলোর প্রতিফলন ঘটায় তা সত্যিই অপূর্ব! ডায়মন্ডে আলো ফেললে এর ভেতরে ধূসর ও ছাই রংয়ের আলোর ছটা দেখা যাবে যাকে বলা হয় ‘ব্রিলিয়ান্স’। আর বাইরের দিকে প্রতিফলিত হবে রামধনুর রঙের, যাকে বলা হয় ‘ফায়ার’। কিন্তু নকল ডায়মন্ডের ক্ষেত্রে পাথরের ভেতরেই রামধনু রং দেখতে পাওয়া যাবে। মানুষের একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, ডায়মন্ড রামধনু রং প্রতিফলিত করে। কিন্তু খাঁটি ডায়মন্ডের প্রতিফলনে বেশির ভাগই ধূসর ভাব থাকে।

 

এর প্রতিসরণের বৈশিষ্ট্য

ডায়মন্ডর এত চকচকে হওয়ার কারণ হলো, এর প্রতিসরণের বৈশিষ্ট্য। এই পাথরটি যে পরিমাণ আলো ধরে রাখতে পারে, তা কাঁচ, কোয়ার্টজ বা ত্রিকোণাকৃতি জিরকোনিয়ামও করতে পারে না। একটি আসল ডায়মন্ড যদি পত্রিকার ওপর রাখেন, তবে এর ভেতরে পত্রিকার কালো রংয়ের লিখার কোনো প্রতিসরণ ঘটবে না। কিন্তু ডায়মন্ড যদি নকল হয়, সেক্ষেত্রে তার মধ্যে কালো লেখার কোনো অক্ষর দেখা যেতে পারে।

নিঃশ্বাসের পরীক্ষা

পাথরটিতে মুখের গরম বাতাস দিন। দেখবেন সেটি কুয়াশাচ্ছন্ন (ঝাপসা) হয়ে পড়েছে (বাথরুমের আয়নায় নাক-মুখের নিঃশ্বাস ফেললে আয়নার কাঁচ যেমন ঝাপসা হয়ে যায়)। ডায়মন্ডটি যদি নকল হয়, তবে খুব দ্রুত ঝাপসা ভাবটি চলে যাবে। কিন্তু আসল ডায়মন্ডের ঝাপসা ভাব কাটতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। কারণ, আসল ডায়মন্ড একেবারেই তাপ ধরে রাখে না, তাই বাষ্প খুব দ্রুত উবে যাবে।

লোপের ভেতর দিয়ে দেখুন

লোপ হলো বিশেষ এক ধরনের ম্যাগনিফায়িং গ্লাস (আতস কাঁচ)। এটি দিয়ে ডায়মন্ড বা অন্যান্য পাথর পরীক্ষা করা হয়। লোপের মাধ্যমে যখন কয়েকটি ডায়মন্ড দেখবেন, তখন কয়েক ধরনের চেহারা দেখতে পারেন। কিছু পাবেন যেগুলো মোটেও নিখুঁতভাবে মসৃণ করা নয়। এগুলো দেখলে মনে হবে যে, একেবারে প্রাকৃতিক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এগুলোই আসল ডায়মন্ড। কিন্তু ভুয়া ডায়মন্ড একেবারে নিখুঁত ও মসৃণ হবে। দ্বিতীয়ত, সূক্ষ্মভাবে ডায়মন্ডের ধারগুলো দেখুন। লোপের মাধ্যমে যখন দেখবেন, তখন এর ধারগুলো বেশ ধারালো বলেই মনে হবে। কিন্তু নকল ডায়মন্ডের ধারগুলো গোলাকার বা মসৃণ হয়।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» থাইল্যান্ডে দাউ দাউ করে জ্বলছে পুরো পাহাড়

» বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ৪৯ জন আটক

» আদালতে নেওয়া হয়েছে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে

» এবারের আইপিএলে যত নতুন নিয়ম

» জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চিত্র প্রদর্শনীতে একাত্তরের গণহত্যার উপাখ্যান

» উরফিকে নিয়ে এবার মুখ খুললেন কারিনা

» ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৮ জন আটক

» ধারালো অস্ত্রসহ ছিনতাইকারী গ্রেফতার

» জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের পল্লী চিকিৎসককে কুপিয়ে গণপিটুনি খেলেন যুবলীগ নেতা

» কক্সবাজার সৈকত ভেসে আসছে অসংখ্য মৃত জেলিফিশ

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ডায়মন্ড আসল না-কি নকল যেভাবে চিনবেন

চকচক করলেই সোনা হয় না। ঠিক তেমনি যেকোনো উজ্জ্বল-চকচকে পাথর মানেই কিন্তু ডায়মন্ড বা হীরা নয়। কিন্তু কি করে চিনবেন আসল হীরা? এর সঠিক উত্তর দিতে পারেন কেবল মাত্র একজন রত্নবিশেষজ্ঞ বা জেমোলজিস্ট।

 

সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বিখ্যাত রত্নবিশেষজ্ঞ রেনি হির্চ জানিয়েছেন আসল ডায়মন্ড বা হীরা চেনার কিছু কৌশল। অনেকেই ডায়মন্ডের গয়না কেনেন। সব সময় নামী ব্র্যান্ডের দোকান থেকে কেনা না-ও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আসল ডায়মন্ড চেনার এই কৌশলগুলো জানা থাকলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কৌশলগুলো-

শিরিষ কাজগ দিয়ে ঘষা

এটা খুব সহজ একটি পদ্ধতি। ডায়মন্ড বিশ্বের সবচেয়ে শক্ত বস্তু। কোনো কিছু দিয়েই একে ঘষে মসৃণ করা যাবে না। কিন্তু যদি কৃত্রিম হীরা হয় তাহলে এতে শিরিষ কাগজ দিয়ে ঘষলেই তাতে দাগ পড়বে।

আলোর প্রতিফলন দেখা

আসল ডায়মন্ড যেভাবে আলোর প্রতিফলন ঘটায় তা সত্যিই অপূর্ব! ডায়মন্ডে আলো ফেললে এর ভেতরে ধূসর ও ছাই রংয়ের আলোর ছটা দেখা যাবে যাকে বলা হয় ‘ব্রিলিয়ান্স’। আর বাইরের দিকে প্রতিফলিত হবে রামধনুর রঙের, যাকে বলা হয় ‘ফায়ার’। কিন্তু নকল ডায়মন্ডের ক্ষেত্রে পাথরের ভেতরেই রামধনু রং দেখতে পাওয়া যাবে। মানুষের একটি ভুল ধারণা রয়েছে যে, ডায়মন্ড রামধনু রং প্রতিফলিত করে। কিন্তু খাঁটি ডায়মন্ডের প্রতিফলনে বেশির ভাগই ধূসর ভাব থাকে।

 

এর প্রতিসরণের বৈশিষ্ট্য

ডায়মন্ডর এত চকচকে হওয়ার কারণ হলো, এর প্রতিসরণের বৈশিষ্ট্য। এই পাথরটি যে পরিমাণ আলো ধরে রাখতে পারে, তা কাঁচ, কোয়ার্টজ বা ত্রিকোণাকৃতি জিরকোনিয়ামও করতে পারে না। একটি আসল ডায়মন্ড যদি পত্রিকার ওপর রাখেন, তবে এর ভেতরে পত্রিকার কালো রংয়ের লিখার কোনো প্রতিসরণ ঘটবে না। কিন্তু ডায়মন্ড যদি নকল হয়, সেক্ষেত্রে তার মধ্যে কালো লেখার কোনো অক্ষর দেখা যেতে পারে।

নিঃশ্বাসের পরীক্ষা

পাথরটিতে মুখের গরম বাতাস দিন। দেখবেন সেটি কুয়াশাচ্ছন্ন (ঝাপসা) হয়ে পড়েছে (বাথরুমের আয়নায় নাক-মুখের নিঃশ্বাস ফেললে আয়নার কাঁচ যেমন ঝাপসা হয়ে যায়)। ডায়মন্ডটি যদি নকল হয়, তবে খুব দ্রুত ঝাপসা ভাবটি চলে যাবে। কিন্তু আসল ডায়মন্ডের ঝাপসা ভাব কাটতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। কারণ, আসল ডায়মন্ড একেবারেই তাপ ধরে রাখে না, তাই বাষ্প খুব দ্রুত উবে যাবে।

লোপের ভেতর দিয়ে দেখুন

লোপ হলো বিশেষ এক ধরনের ম্যাগনিফায়িং গ্লাস (আতস কাঁচ)। এটি দিয়ে ডায়মন্ড বা অন্যান্য পাথর পরীক্ষা করা হয়। লোপের মাধ্যমে যখন কয়েকটি ডায়মন্ড দেখবেন, তখন কয়েক ধরনের চেহারা দেখতে পারেন। কিছু পাবেন যেগুলো মোটেও নিখুঁতভাবে মসৃণ করা নয়। এগুলো দেখলে মনে হবে যে, একেবারে প্রাকৃতিক অবস্থায় রাখা হয়েছে। এগুলোই আসল ডায়মন্ড। কিন্তু ভুয়া ডায়মন্ড একেবারে নিখুঁত ও মসৃণ হবে। দ্বিতীয়ত, সূক্ষ্মভাবে ডায়মন্ডের ধারগুলো দেখুন। লোপের মাধ্যমে যখন দেখবেন, তখন এর ধারগুলো বেশ ধারালো বলেই মনে হবে। কিন্তু নকল ডায়মন্ডের ধারগুলো গোলাকার বা মসৃণ হয়।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :

Design & Developed BY ThemesBazar.Com