গরমে ঠান্ডা পানি পান করার প্রবণতা বেড়ে যায় সবার মধ্যেই। যদিও পানির কোনো বিকল্প নেই। ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিসিননের পরামর্শ অনুযায়ী, ১৯ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষদের দৈনিক ৩.৭ লিটার (১৫.৫ কাপ) ও ১৯ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীদের ২.৭ লিটার (১১.৫ কাপ) পানি পান করা জরুরি।
তবে ঠান্ডা পানি পান করা নিয়ে অনেকের মধ্যেই দ্বিধা কাজ করে। কারও মতে ঠান্ডা পানি পান করা ভালো না আবার কেউ বলেন এটি উপকারী, আসলে কোনটি সত্যি?
আসলে ঠান্ডা পানি পান করলে অনুনাসিক মিউকাস ঘন হয় ও শ্বাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। গবেষকরা দেখেছেন, চিকেন স্যুপ বা গরম পানি মানুষকে আরও সহজে শ্বাস নিতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি সর্দি বা কাশির সমস্যায় ভোগেন তাহলে ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
কিছু স্বাস্থ্যগত অবস্থা আছে যা ঠান্ডা পানি পান করলে আরও বাড়তে পারে। ২০০১ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, ঠান্ডা পানি পান করা মাইগ্রেনকে ট্রিগার করে। অর্থাৎ ঠান্ডা পানি পান করলেই মাথাব্যথা বাড়তে পারে। এমনকি অ্যাকলেসিয়ার সমস্যা আছে যাদের তারা যদি খাবারের সঙ্গে ঠান্ডা পানি পান করেন তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
ঐতিহ্যগত চীনা মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, গরম খাবারের সঙ্গে ঠান্ডা পানি পান করা ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। সাধারণত চীনা সংস্কৃতিতে খাবারের পরে গরম পানি বা গরম চা পরিবেশন করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে এই নিদর্শন প্রতিফলিত হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়ে দাঁতের ভেগাস নার্ভের উপর। এই ভেগাস স্নায়ু হলো স্নায়ুতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বেশি ঠান্ডা পানি খেলে ভেগাস স্নায়ু উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। ফলে হৃদগতি অনেকটাই কমে যায়।
হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে ঠান্ডা পানি পান করলে। এজন্য শরীরচর্চা বা ওয়ার্কআউটের পর ঠান্ডা পানি একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। কারণ ওয়ার্কআউটের পর দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যায়। এই সময় ঠান্ডা পানি খেলে শরীরের তাপমাত্রায় ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়।
এছাড়া অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়েও পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়ার পরে ঠান্ডা পানি খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। এর ফলে শ্বাসনালিতে শ্লেষ্মার অতিরিক্ত আস্তরণ তৈরি হয়, যা থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। সূত্র: জি নিউজ/হেলথলাইন