ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজেই দেখা যেতে পারে বাংলাদেশের নতুন ওপেনিং জুটি। যদি তাই হয় তাহলে নবাগত মুনিম শাহরিয়ারের সঙ্গী হবেন এনামুল হক বিজয়।
শনিবার উইন্ডসর পার্কে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় শুরু হবে টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ।
সিরিজ শুরুর আগে ওপেনিংয়ে এই জুটিকে নিয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছেন খোদ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এ ছাড়া যে খুব একটা বিকল্পও নেই।
ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ ব্যাটিং অর্ডার। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কারণে তীরে এসেও হারতে হয় প্রায় ম্যাচ। এই ব্যর্থতা থেকে পরিত্রাণ পেতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেই পারে টিম ম্যানেজম্যান্ট।
২০২১ সালে টানা খেলা নাঈম শেখ বাদ পড়ছেন অফ ফর্মের কারণে। টি-২০ বিশ্বকাপের পর লিটন দাস বাদ পড়লেও আবার ফিরেছেন দলে। এ ছাড়া দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল আদৌ টি-২০ খেলবেন কিনা অনিশ্চিত। তিনি এখনও ৬ মাসের বিরতিতে। তাই বাংলাদেশের সামনে ওপেনিং জুটি শানিয়ে দেখার সেরা সময় এটি।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘মুনিম এখনও দলে নতুন। বিজয় অনেকদিন পর মাত্র আসলো। ওদেরকে ভালো সময় দিতে হবে। ওরা যেন নিশ্চিন্তে খেলতে পারে এই নিশ্চয়তা দেওয়া টিম ম্যানেজমেন্ট ও আমার দায়িত্ব। সঠিকভাবে যেন সুযোগ পায়। এটা নিশ্চিত করা জরুরি।
শুধু তাই নয়, তাদের যথেষ্ট সময় দিয়েই প্রস্তুত করতে চান মাহমুদউল্লাহ। ‘আমার তরফ থেকে আমি এটা চেষ্টা করব। ঠিকভাবে সুযোগ পেয়ে যেন নিজেদের গেমটা খেলতে পারে। আশা করি ওরা সুযোগ পাবে ও ভালো করবে’- যোগ করেন টি-২০ অধিনায়ক।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দারুণ খেলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ দলে জায়গা করে নিয়েছেন মুনিম। দুই ম্যাচে অবশ্য ২১ রানের বেশি করতে পারেননি। মুনিমের জন্যও এই সিরিজটি চ্যালেঞ্জিং বটে। অন্যদিক ঘরোয়া ধারাবাহিক এনামুল পুরস্কার পেয়েছেন দলে ডাক পেয়ে। চলতি বছর ঘরোয়া ক্রিকেটের সবগুলো আসরেই তার ব্যাটে ছুটেছিল রানের ফোয়ারা।
এছাড়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে সব রেকর্ড ভেঙে গড়েছিলেন নতুন রেকর্ড। মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৮১৪ রান করেন তিনি। এর মধ্যে ঢাকা লিগেই তার ব্যাট থেকে আসে ১১৩৮ রান! বাংলাদেশেই নয় শুধু, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি বিশ্ব রেকর্ড।
এনামুল সবশেষ টি-২০ খেলেছেন ৭ বছর আগে ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ১৩ ম্যাচে ৩২.২৭ গড়ে করেছেন ৩৫৫ রান। একমাত্র ফিফটিতে সর্বোচ্চ ৫৮। মুনিম-এনামুল যদি ওপেনিং করেন তাহলে ব্যাটিং অর্ডারে আসতে পারে পরিবর্তন। লিটন দাসকে নামতে হতে পারে তিন নম্বরে। এ ছাড়া মুশফিকুর রহিম না থাকায় তার পরিবর্তে দেখা যেতে পারে নুরুল হাসান সোহানকে।
মাহমুদউল্লাহর বার্তা, তরুণ কিংবা অনভিজ্ঞদের পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে চান। যাতে তারা মানিয়ে নিতে পারেন। ‘হোম কন্ডিশনে আমরা অনেক বেশি ধারাবাহিক। অ্যাওয়ে ম্যাচে উন্নতির ঘাটতি এখনও আছে। এখানে আরো ভালো হতে হবে, এটা আমি স্বীকার করি। বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আছে যারা এখনও তরুণ, অনভিজ্ঞ। ওদেরকে সময় দিতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আমরা আরো ১০-১২টি ম্যাচ খেলব। ওরা যেন যথেষ্ট সুযোগ পায়। ওরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ওদের জন্যও ভালো, দলের জন্যও ভালো।’
উইন্ডিজ সফর নিজেকে প্রমাণের সুযোগ মুনিমের সামনে। অন্যদিকে অভিজ্ঞ এনামুলের জন্য এটি হতে পারে পুনর্জন্মের সফর। ভালো খেলতে পারলে খুলে যাবে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের দরজা। তার সঙ্গে ব্যাটিংয়ে মাথা ব্যথাটাও কমবে টিম ম্যানেজম্যান্টের।