তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে বুধবার হারের পর বাংলাদেশের কাছে তিন বিভাগেই পরাস্ত হওয়ার কথা অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে বাভুমা বলেন, ‘আমার মতে, বাংলাদেশই ভালো ছিল। তারা দেখিয়েছে কীভাবে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং করতে হবে। তারা প্রথম ওয়ানডেতে কী নিখুঁত ব্যাটিং করেছে সবাই দেখেছি। তাদের সেই একাগ্রতাটা ছিল। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে অনেক কাজ করতে হবে। এই সিরিজে আমরা পাত্তাই পাইনি।
ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে ভারতকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এসময় তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ভারতকে হারাতে পারলেও বাংলাদেশকে কেন পারলেন না? উত্তরে বলেন, ‘এই প্রশ্নটি আমি নিজেও নিজেকে করছি। এই সিরিজে অবশ্যই আমরা যথেষ্ট ভালো ছিলাম না। আমার মতে, ভারতের বিপক্ষে আমরা যে মানের ক্রিকেট খেলেছি, তা অন্যপর্যায়ের ছিল। কিন্তু এই সিরিজে আমরা তেমন ভালো ছিলাম না।’
আজ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বিশাল জয় পায় তামিম ইকবালের দল। এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের বোলিং তোপের মুখে মাত্র ১৫৪ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ দল ৯ উইকেট হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়।
এদিন লিটন-তামিম জুটি প্রোটিয়াদের বিপক্ষে নিজেদের করা ৯৫ রানের পার্টনারশিপের রেকর্ড ভেঙে গড়লেন ১২৭ রানের পার্টনারশিপের রেকর্ড। লিটন দাস ব্যক্তিগত ৪৮ রানে সাজঘরে ফিরলেও টাইগার অধিনায়ক তামিম সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে খেলা শেষ করে মাঠ ছাড়েন। এর আগে ৮২ বল খেলে ১৪টা চারের মারে ৮৭ রান করেন। অপরপ্রান্তে সাকিব করেন ১৮ রান। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। একই সাথে সিরিজ সেরাও হন তিনি।
এদিন আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। মালান ডি ককের শুরুটা ভালোই ছিল। তবে মেহেদী মিরাজ আগের ম্যাচের ম্যাজিকাল ডি কককে সেঞ্চুরিয়নে সুবিধা করতে দেননি। তারপর এগিয়ে আসেন বাংলাদেশর পেস বিপ্লবের অগ্রনায়ক তাসকিন আহমেদ, ধারাবাহিক আঘাতে কোণঠাসা প্রোটিয়ারা।
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় পাঁচ উইকেটের মাইলফলকে তাসকিন। সাকিবও থাকলেন দারুণ কিপটে মুডে, সাথে দুই উইকেট। শরীফুলও চোখে পড়ার মতো ভালো বল করেছেন। সবমিলিয়ে প্রথম ওয়ানডের মতো শেষ ওয়ানডেতেও দারুণ টিমওয়ার্ক বোলিংয়ে। পেস-স্পিন মেলবন্ধন। দশেমিলে করা কাজের ফলটাও হলো দারুণ, ১৫৪ রানের বেশি যাওয়া হলো না প্রোটিয়াদের।
পরের গল্প কেবল স্বর্গীয়! সেঞ্চুরিয়নে নেমে এলো এক রূপকথার রাত, প্রোটিয়া ডেরায় রচনা হলো টাইগারদের স্বর্গীয় নীড়। যে নীড় গড়তে সাকিব পরিবারের চার সদস্য অসুস্থ থাকার পরও দেশে ফেরেননি, তাসকিন যে ম্যাচে খেলেছেন আইপিএলে খেলার মতো লোভনীয় প্রস্তাব হেলায় ফিরিয়ে।