জুমার দিন ইমামের কাছাকাছি বসার ফজিলত

মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (স.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪)

 

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)

 

 

জুমার দিনের বিশেষ আমলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- আগেভাগে মসজিদে গিয়ে ইমামের পাশে বসা। এতে করে চুপচাপ খুতবা শুনতে সুবিধা হয় এবং এর অনেক ফজিলতও রয়েছে।

 

মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ..।’ (সুরা জুমা: ৯)

 

জুমার দিন তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যখন জুমার দিন উপস্থিত হয় ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ  দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি: ৮৮২)

 

হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)

 

সুতরাং মুসল্লিদের উচিত- আগেভাগে জুমার নামাজের জন্য মসজিদে উপস্থিত হওয়া এবং মনোযোগ ও গুরুত্বের সঙ্গে জুমার খুতবা শোনা। পাশে কেউ কথা বললে তাকে ‘চুপ করো’ বলতেও নিষেধাজ্ঞা এসেছে হাদিসে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, জুমার দিন খুতবা চলা অবস্থায় যদি তোমার পাশের সাথীকে বলো- চুপ করো, তাহলে তুমি একটি অনর্থক কাজ করলে। (সহিহ বুখারি: ৯৩৪, সহিহ মুসলিম: ৯৩১)

 

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কোরআন-হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আগেভাগে মসজিদে যাওয়া, খুতবা শোনা ও জুমার নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নরসিংদী পলাশে ছাত্রদলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

» সেনাপ্রধানের সঙ্গে ইউএস আর্মি অফিসারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

» আলোচনা ছাড়া স্ট্যাটাস দিতেও ‘মানা’ এনসিপি নেতাদের

» চাঁদাবাজির জন্ম দিয়েছে আওয়ামী লীগ : টুকু

» গণঅভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে ওয়েবসাইট উদ্বোধন

» প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ

» চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক শুক্রবার

» অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» ফ্যাসিবাদের পতনে গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করার সুযোগ এসেছে : তারেক রহমান

» জামালপুরে পুলিশের দোয়া ও ইফতার মাহফিল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জুমার দিন ইমামের কাছাকাছি বসার ফজিলত

মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুল (স.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪)

 

আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)

 

 

জুমার দিনের বিশেষ আমলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- আগেভাগে মসজিদে গিয়ে ইমামের পাশে বসা। এতে করে চুপচাপ খুতবা শুনতে সুবিধা হয় এবং এর অনেক ফজিলতও রয়েছে।

 

মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিন যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে এসো এবং বেচাকেনা বন্ধ করো, এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝ..।’ (সুরা জুমা: ৯)

 

জুমার দিন তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যখন জুমার দিন উপস্থিত হয় ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ  দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বুখারি: ৮৮২)

 

হজরত আউস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করাবে এবং নিজেও গোসল করবে অথবা উত্তমরূপে গোসল করবে এরপর ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে আসবে, আসার সময় হেঁটে আসবে, কোনো বাহনে চড়বে না, ইমামের কাছাকাছি বসবে, এরপর দুটি খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং (খুতবার সময়) কোনো অনর্থক কাজকর্ম করবে না, সে মসজিদে আসার প্রতিটি পদক্ষেপে একবছর নফল রোজা ও একবছর নফল নামাজের সওয়াব পাবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৫)

 

সুতরাং মুসল্লিদের উচিত- আগেভাগে জুমার নামাজের জন্য মসজিদে উপস্থিত হওয়া এবং মনোযোগ ও গুরুত্বের সঙ্গে জুমার খুতবা শোনা। পাশে কেউ কথা বললে তাকে ‘চুপ করো’ বলতেও নিষেধাজ্ঞা এসেছে হাদিসে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, জুমার দিন খুতবা চলা অবস্থায় যদি তোমার পাশের সাথীকে বলো- চুপ করো, তাহলে তুমি একটি অনর্থক কাজ করলে। (সহিহ বুখারি: ৯৩৪, সহিহ মুসলিম: ৯৩১)

 

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কোরআন-হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আগেভাগে মসজিদে যাওয়া, খুতবা শোনা ও জুমার নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন। সূএ: ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com