ছবি সংগৃহীত
ঘুস দেওয়া-নেওয়া হারাম। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুসদাতা ও গ্রহিতাকে অভিশাপ দিয়েছেন। (সুনানে তিরমিজি: ১৩৩৭)
তাই ঘুস দিয়ে চাকরি নেওয়া জায়েজ নয়। এতে একদিকে ঘুস প্রদানের গুনাহ হয়, অন্যদিকে ঘুসদাতা অযোগ্য হলে অন্য চাকরিপ্রার্থীর হক নষ্ট করারও গুনাহ হয়। তাই এই কাজ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
তবে কেউ যদি প্রকৃতপক্ষে চাকরির যোগ্য হয় এবং ঘুস প্রদান হারাম হওয়া সত্ত্বেও ঘুস দিয়ে চাকরি নেয় আর পরবর্তীতে সে যথাযথভাবে দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়, তাহলে তার চাকরি নেওয়ার প্রক্রিয়া নাজায়েজ হলেও তার চাকরির বেতন হালাল হবে।
আর যদি সে তার কর্মক্ষেত্রে অযোগ্য হয় এবং যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার জন্য ওেই চাকরিতে থাকা জায়েজ হবে না, যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করে বেতন নেওয়াও জায়েজ হবে না।
উল্লেখ্য যে, ঘুসদাতা যদি নিজের কোনো ন্যায্য প্রাপ্য জিনিস বা অধিকার আদায়ের জন্য বা কারো জুলুম থেকে বাঁচার জন্য নিরুপায় হয়ে ঘুস দেয়, তাহলে সে গুনাহগার হবে না এবং ওপরে উল্লিখিত আল্লাহর রাসুলের (সা.) অভিশাপের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
কিন্তু ঘুস গ্রহণকারী সর্বাবস্থায় অভিশপ্ত ও মহাপাপী। দায়িত্বপূর্ণ সরকারি পদে থেকে গ্রহণ করা অনেক উপহারও ঘুস গণ্য হয়। আবু হুমাইদ আস-সায়েদী (রা.) বলেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার বনু আজদ গোত্রের ইবনুল-লুতবিয়া নামের এক ব্যক্তিকে জাকাত উশুল করার দায়িত্বে নিয়োগ করলেন। তিনি জাকাত উশুল করে ফিরে এসে বললেন, এগুলো (জাকাত) আপনাদের জন্য আর এগুলো আমাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
এ কথা শুনে নবিজি (সা.) উঠে দাঁড়ালেন এবং মিম্বরে আরোহণ করলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করে তিনি বললেন, আপনাদের কিছু লোককে আমি ওই সব কাজের জন্য নিয়োগ দিয়েছি যেসব কাজের জন্য আল্লাহ আমাকে শাসক বানিয়েছেন। এখন এক ব্যক্তি এসে বলছেন, এটা (জাকাত) আপনাদের জন্য, আর এটা উপহার; আমাকে দেওয়া হয়েছে। তিনি তার বাবা বা মায়ের বাড়িতে বসে থেকে দেখুন উপহারদাতারা তার বাড়িতে গিয়ে উপহার দিয়ে যায় কিনা!
ওই মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার জীবন! আপনাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ রকম উপহার হিসেবে কিছু গ্রহণ করবেন, তিনি তা কিয়ামতের দিন তার ঘাড়ে করে নিয়ে আসবেন; সেটা উট হলে ঘোঁৎ ঘোঁৎ করতে থাকবে, গরু হলে হাম্বা হাম্বা করতে থাকবে, ছাগল হলে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকবে। (সহিহ মুসলিম)
সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম