কানাডায় প্রবাসীদের জন্য ইফতারের ভিন্ন আয়োজন

মাল্টিকালচারালিজমের দেশ কানাডায় বিভিন্ন দেশের লোক স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। এর মধ্যে প্রচুর সংখ্যক মুসলমানও রয়েছেন। দেশটিতে গত দুই বছরের তুলনায় এবার ইফতারের ব্যাপক আয়োজন লক্ষ্য করা গেছে। কানাডার আলবার্টায় করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের ওপর বাধ্যতামূলক শিথিল করায় পুরো আলবার্টা যেন নতুন করে জেগে উঠেছে। শুধু আলবার্টা নয়, এ চিত্র এখন পুরো কানাডার।

 

এরই মধ্যে মসজিদ, মন্দির ও গির্জাসহ ধর্মীয় উপসানালয় গুলোতে প্রচুর সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটেছে। দীর্ঘদিনের না দেখে থাকার বিরতি বিচ্যুতি ঘটাতে পারেনি পারস্পরিক সম্পর্কের। একে অপরের সান্নিধ্যে এগিয়ে আসছে বিনিময় করছেন কুশলাদি।

এদিকে, ক্যালগেরির গ্রোসারির দোকানগুলোতে প্রবেশপথেই ইফতারের জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার, জুস, ছোলা বেসনসহ নানা দেশের খাবার সমৃদ্ধি প্রস্তুতি দেখা গেছে।

 

বরফাচ্ছন্ন কানাডার প্রায় ৮ মাসই বরফে আচ্ছাদিত থাকে। এ বছরও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। কখনো কখনো প্রচণ্ড বৈরি আবহাওয়ায় ম্লান করতে পারেনি প্রবাসী বাঙালিদের ইফতারের প্রস্তুতি। রমজান মাসে বাংলাদেশের মতো এখানেও বাঙালিরা ছোলা মুড়ি মেখে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনির অপেক্ষায় থাকে। ইফতারের আয়োজনে থাকে পেঁয়াজি, কলা, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর, চিকেন হালিম আর শরবত। বিশেষ খাবার হিসেবে কমলা, আঙুর, আপেলসহ নানা দেশের বৈচিত্র্যময় ফল। বাংলাদেশি হোটেলগুলোতেও ইফতারিসহ খিচুড়ি ও বিরিয়ানির বেচাকেনা চলে জমজমাটভাবে।

এ বছর মুসুল্লিরা সবাই মসজিদে বসে একত্রে ইফতারি করছেন। মসজিদ কমিটির অনেকেই ইফতারির জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন।

 

প্রবাস জীবনের যান্ত্রিকতাময় দিনগুলোতে ইফতার আর তারাবি নামাজ শেষে প্রবাসী বাঙালিরা যখন মিলিত হয় একে অপরের সঙ্গে। পুরো পরিবেশ পরিণত হয় এক ভিন্ন আমেজের। ক্যালগেরির বাংলাদেশি অধ্যুষিত এশিয়ান এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে সবাই যখন মসজিদে মিলিত হয়, তখন মনে হয় যেন একখণ্ড বাংলাদেশ।

 

কানাডার টরেন্টো প্রবাসী বাঙালি এ আলী তালুকদার জানান, গত দুবছর বন্দি থাকার এবার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে ইফতার করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র রমজান মাসে সারা বিশ্বের উম্মাহর যেন হেদায়েত দান করেন। আগের মতো রমজান পালন করার তৌফিক দান করেন।

 

ক্যালগেরির উৎসব সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী ইরফান আরিফ জানান, আমাদের রেস্টুরেন্টে ইফতার আইটেমসহ সব ধরণের আইটেম রয়েছে। রমজান মাসে ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। যেন সবাই সুন্দরভাবে ইফতার করতে পারে।

 

ক্যালগেরির ‘বারাকা এ্যপায়ারেল’র স্বত্বাধিকারী আরিফা রব্বানি বলেন, আমরা ইফতারিতে বাংলাদেশের স্টাইলে শাহী হালিম, শাহী জিলাপি, বেগুনি, পিয়াজু, আলুর চপ, ছোলাসহ বাহারি রকমের ফল ও শরবতের ব্যবস্থা রাখি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সবাই মিলে যখন ইফতারি করি তখন বাবা-মাসহ শৈশবের সেই ইফতারির দিন গুলোকে খুব মিস করি।

 

সিয়াম সাধনার মাসে সংযম আর আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে যাবতীয় ভোগ-বিলাস, অন্যায়, অপরাধ, হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত পরিহার করে ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনে বয়ে নিয়ে আসবে শান্তির বার্তা কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের এমনটাই প্রত্যাশা।সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ

» রাজনৈতিক দলপন্থি না হয়ে আপনারা বাংলাদেশপন্থি পুলিশ হয়ে ওঠেন : হাসনা

» দেশের স্বার্থে সবচেয়ে বেশি ‘স্যাক্রিফাইস’ করেছে বিএনপি: তারেক রহমান

» রংপুরে ১৭ বছর পর ৪ জুলাই জামায়াতের সমাবেশ

» খুনিদের বিচার না হলে সব থানা পটিয়া হয়ে উঠবে: সারজিস

» ‘হাতপাখার সমাবেশ’ বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ : ফারুক

» নতুন বাংলাদেশে নতুন করে চাঁদাবাজ হতে দেওয়া যাবে না: হাসনাত

» কোনো স্বৈরাচার চিরকাল ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না: নাহিদ

» যখনই গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে, বিএনপি সোচ্চার হয়েছে: তারেক রহমান

» রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঠাল খেলেন নাহিদ-হাসনাত-সার্জিসরা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কানাডায় প্রবাসীদের জন্য ইফতারের ভিন্ন আয়োজন

মাল্টিকালচারালিজমের দেশ কানাডায় বিভিন্ন দেশের লোক স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। এর মধ্যে প্রচুর সংখ্যক মুসলমানও রয়েছেন। দেশটিতে গত দুই বছরের তুলনায় এবার ইফতারের ব্যাপক আয়োজন লক্ষ্য করা গেছে। কানাডার আলবার্টায় করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের ওপর বাধ্যতামূলক শিথিল করায় পুরো আলবার্টা যেন নতুন করে জেগে উঠেছে। শুধু আলবার্টা নয়, এ চিত্র এখন পুরো কানাডার।

 

এরই মধ্যে মসজিদ, মন্দির ও গির্জাসহ ধর্মীয় উপসানালয় গুলোতে প্রচুর সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটেছে। দীর্ঘদিনের না দেখে থাকার বিরতি বিচ্যুতি ঘটাতে পারেনি পারস্পরিক সম্পর্কের। একে অপরের সান্নিধ্যে এগিয়ে আসছে বিনিময় করছেন কুশলাদি।

এদিকে, ক্যালগেরির গ্রোসারির দোকানগুলোতে প্রবেশপথেই ইফতারের জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার, জুস, ছোলা বেসনসহ নানা দেশের খাবার সমৃদ্ধি প্রস্তুতি দেখা গেছে।

 

বরফাচ্ছন্ন কানাডার প্রায় ৮ মাসই বরফে আচ্ছাদিত থাকে। এ বছরও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। কখনো কখনো প্রচণ্ড বৈরি আবহাওয়ায় ম্লান করতে পারেনি প্রবাসী বাঙালিদের ইফতারের প্রস্তুতি। রমজান মাসে বাংলাদেশের মতো এখানেও বাঙালিরা ছোলা মুড়ি মেখে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনির অপেক্ষায় থাকে। ইফতারের আয়োজনে থাকে পেঁয়াজি, কলা, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর, চিকেন হালিম আর শরবত। বিশেষ খাবার হিসেবে কমলা, আঙুর, আপেলসহ নানা দেশের বৈচিত্র্যময় ফল। বাংলাদেশি হোটেলগুলোতেও ইফতারিসহ খিচুড়ি ও বিরিয়ানির বেচাকেনা চলে জমজমাটভাবে।

এ বছর মুসুল্লিরা সবাই মসজিদে বসে একত্রে ইফতারি করছেন। মসজিদ কমিটির অনেকেই ইফতারির জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন।

 

প্রবাস জীবনের যান্ত্রিকতাময় দিনগুলোতে ইফতার আর তারাবি নামাজ শেষে প্রবাসী বাঙালিরা যখন মিলিত হয় একে অপরের সঙ্গে। পুরো পরিবেশ পরিণত হয় এক ভিন্ন আমেজের। ক্যালগেরির বাংলাদেশি অধ্যুষিত এশিয়ান এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে সবাই যখন মসজিদে মিলিত হয়, তখন মনে হয় যেন একখণ্ড বাংলাদেশ।

 

কানাডার টরেন্টো প্রবাসী বাঙালি এ আলী তালুকদার জানান, গত দুবছর বন্দি থাকার এবার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে ইফতার করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র রমজান মাসে সারা বিশ্বের উম্মাহর যেন হেদায়েত দান করেন। আগের মতো রমজান পালন করার তৌফিক দান করেন।

 

ক্যালগেরির উৎসব সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী ইরফান আরিফ জানান, আমাদের রেস্টুরেন্টে ইফতার আইটেমসহ সব ধরণের আইটেম রয়েছে। রমজান মাসে ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। যেন সবাই সুন্দরভাবে ইফতার করতে পারে।

 

ক্যালগেরির ‘বারাকা এ্যপায়ারেল’র স্বত্বাধিকারী আরিফা রব্বানি বলেন, আমরা ইফতারিতে বাংলাদেশের স্টাইলে শাহী হালিম, শাহী জিলাপি, বেগুনি, পিয়াজু, আলুর চপ, ছোলাসহ বাহারি রকমের ফল ও শরবতের ব্যবস্থা রাখি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সবাই মিলে যখন ইফতারি করি তখন বাবা-মাসহ শৈশবের সেই ইফতারির দিন গুলোকে খুব মিস করি।

 

সিয়াম সাধনার মাসে সংযম আর আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে যাবতীয় ভোগ-বিলাস, অন্যায়, অপরাধ, হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত পরিহার করে ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনে বয়ে নিয়ে আসবে শান্তির বার্তা কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের এমনটাই প্রত্যাশা।সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com