ভোট নিয়ে কমিশনের চেয়ে রাজনীতিবিদদের দায়িত্ব বেশি এমন দাবি করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
আজ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের ১০ দিনে গণফোরামের সঙ্গে বসে ইসি। এসময় সিইসি এ কথা বলেন।
দলটির নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান নেতৃত্বে ১০ জন সদস্য সংলাপে অংশ নেন। তারাও অন্য দলগুলোর মতো লিখিত বেশ কিছু প্রস্তাব দেয়।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে যদি সহনশীলতা জাগ্রত করা না যায়, তাহলে সংকট থেকে যাবে। নির্বাচন হাড্ডাহাড্ডি যখন হয়, তখন ভোটের শেষে মারামারিটা হয়।
সিইসি বলেন, কালকে একটা ঘটনা ঘটেছে (ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে)। নির্বাচন হাড্ডাহাড্ডি যখন হয়, তখন ভোটের শেষে মারামারিটা হয়। কালকে একটা বাচ্চা মারা গেছে। রাত ১০টা-১১টার দিকে ফোন করেছি ডিসি, এসপিকে যে কী হলো। নির্বাচনটা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং মেম্বার প্রার্থী হামলা করে বসলো।
তিনি বলেন, আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা আছে, আমি নির্বাচন করবো এবং আমাকে জিততেই হবে। হারতে যে হতে পারে, এটা কিন্তু কেউ মেনে নিচ্ছে না। মনস্তাত্ত্বিক দৈন্য আমাদের মধ্যে আছে। তাই সহনশীলতা যদি জাগ্রত করা না যায় তাহলে সংকট থেকে যাবে।
কাজী হাবিবুল বলেন, রাজনীতি আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেন। রাজনীতির সংস্কৃতি ধারণ করা, লালন করা আপনাদের দায়িত্ব। আপনাদের দায়িত্ব অনেক বড়। আপনাদের কাছে ছোট কিন্তু আমাদের কাছে অনেক বড়। আপনাদের বক্তব্য শুনেছি। চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, সঠিক, সুস্থ, অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। আমরা আমাদের দায়িত্ব বলতে চাচ্ছি না। আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বে নেই এবং প্রশাসনিক সংগঠন। আমাদের কাজ হবে নির্বাচনে যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার স্বাধীনভাবে প্রয়োগ করতে হবে, এই ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করবো সর্বাত্মক। আপনাদেরও সহযোগিতা চাইবো। আপনাদের আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। নির্বাচনের মাঠে যদি আপনারাও থাকেন, আমরাও যদি থাকি, তাহলে কোনো অপশক্তিকে প্রতিহত, প্রতিরোধ করা সহজ হবে।
গণফোরাম নির্বাচনে ইভিএমের বিপক্ষে জানিয়ে তারা নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন, ইসিকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া, সর্বদলীয় পর্যবেক্ষক দল গঠন ও তালিকা তৈরি করে রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলের তালিকা নির্বাচনের এক মাস আগে প্রকাশ ও স্বচ্ছ ব্যালট বক্সও চায় গণফোরাম।