ছবি সংগৃহীত
গণ অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পদত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। কেউ নিজে থেকেই পদত্যাগ করছেন, কেউ আবার চাপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ক্ষমতার পালাবদলের ঢেউ পড়েছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি পদে থাকা কাজী সালাউদ্দিনেরও পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ নামে ফুটবল সমর্থকদের একটি সংগঠন সালাউদ্দিনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও বেঁধে দিয়েছিল। এবার নিজের পদত্যাগ ইস্যুতে মুখ খুললেন সালাউদ্দিন। পদত্যাগের আল্টিমেটামকে উড়িয়ে দিয়ে উল্টো নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি দেশের কয়েকটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করব না। নির্বাচন করব। নির্বাচন করা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেটা থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন কীভাবে?’
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বললে আমি ব্যাপারটা ভেবে দেখতাম। কিন্তু কোথা থেকে কিছু ছেলেপেলে আমাকে হুমকি দেবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ওরা (বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস) বলেছে, আমাকে যেখানে পাবে, সেখানেই নাকি মারবে। এটা তো ওরা বলতে পারে না।’
বাফুফে সভাপতি বলেন, তারা আমাকে বলছে, আমি যেন বলি আর নির্বাচন করব না। কিন্তু তারা বলার কে? আপনি তখনই আমার পদত্যাগের কথা বলতে পারতেন যদি ফেডারেশনে নির্বাচন না হতো। নির্বাচন হবে ২৬ অক্টোবর। আপনি নিজে নির্বাচন করেন। আমার বিরুদ্ধে আপত্তি করার কে? আমি কিন্তু ২০০৮ সালে নির্বাচন করে চেয়ারে বসেছি। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। বাদল রায়, সালাম মুর্শেদী, হারুনুর রশীদ, এদের বিপক্ষে নির্বাচন করেছি। আমি নির্বাচন করেই এসেছি। আপনিও নির্বাচন করে আসুন।
পদত্যাগের দাবি করা ফুটবল আল্ট্রাস বিলুপ্ত ক্লাব সাইফ স্পোর্টিংয়ের হয়ে কথা বলছে বলেও জানালেন সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ওরা আমার পদত্যাগ চাওয়ার কে, সেটা আমি জানতে চাই। ফুটবলে এভাবে কাউকে নিষিদ্ধ করার নিয়ম কোথায় আছে, তা আমি জানতে চাই। ওরা বললেই তো হবে না। ওরা কারা? ওরা সাইফ স্পোর্টিংয়ের (২০২২ সালে বিলুপ্ত ক্লাবের কর্ণধার তরফদার রুহুল আমিন) হয়ে কথা বলছে। ফুটবলে তাদের কতটুকু অবদান আছে?
সংগঠনটি সালাউদ্দিনের পদত্যাগে এক দফা দাবি ঘোষণা করে বলছে, বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন দীর্ঘ ষোল বছর দায়িত্ব পালন করলেও দেশের ফুটবল উন্নয়নে তার ভূমিকা সকলের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের ফুটবলে তার উন্নয়নের ছাপ নেই।
অন্যদিকে তার সভাপতি থাকাকালীন সময়ে ফিফার তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জরিমানার কবলে পড়েছেন বাফুফের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী। যা দেশের ফুটবলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
উল্লেখ্য, সরকার পরিবর্তন হলেও বাফুফেতে সরকারের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। ফিফার অনিয়ম অনুযায়ী, ফেডারেশনের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকলে তাদের সদস্য পদ স্থগিত করা হয়। এমনটা হয়েছে অনেকে দেশেই। সূএ: ঢাকা পোস্ট ডটকম