আপনার সন্তান যেভাবে নামাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে

ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন।

 

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। শিশু বয়স থেকে নামাজের অনুশীলন করলে পরবর্তী জীবনে এর বিরাট সুফল লাভ করা যায়।

মুসলিম মা-বাবা হিসেবে আপনি আপনার সন্তানের কাছে প্রথম উদাহরণ। আপনি যদি সবসময় ইবাদত-বন্দেগীকে অগ্রাধিকার দেন এবং এই ক্ষেত্রে কোনো অলসতা বা অবহেলা না করেন তাহলেই আপনার সন্তান নামাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।

 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে নামাজ শিক্ষা দাও, যখন তাদের বয়স থাকে সাত। আর যখন তারা দশ বছরে পৌঁছে যাবে তখন তোমারা তোমাদের সন্তানদেরকে নামাজের জন্য প্রহার করো এবং তাদের বিছানা আলাদা করে দাও। (আবু দাউদ)

 

যদিও সাত বছর বয়সে শিশুরা নামাজ আদায় করতে বাধ্য নয় কিন্তু তারা সাত বছর থেকে নামাজে অভ্যস্ত হয়ে গেলে, তরুণ হওয়ার পরেও নামাজের বিষয়ে অনাগ্রহী হবে না।

 

বাসায় নামাজের জন্য একটি রুমকে নির্দিষ্ট করে রাখুন। অথবা একটি রুমের এক কোণায় সামান্য জায়গা নামাজের জন্য নির্ধারণ করে রাখুন। যাতে করে আপনার সন্তান বুঝতে পারে নামাজ পড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যার কারণে একটা নির্দিষ্ট জায়গা রাখা হয়েছে।

 

সন্তানদেরকে শিক্ষা দিন যে, এটা শুধু নামাজের জন্য নির্ধারিত জায়গা। এই জায়গাকে সব সময় পরিষ্কার ও পবিত্র রাখতে হবে।

 

বাসায় ইসলামী ক্যালেন্ডার ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এটা সন্তানদের প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করবে। কেননা ইসলামী ক্যালেন্ডারটি সন্তানের চাক্ষুষ অনুস্মারক হিসাবে কাজ করবে। আর প্রতিটি শুক্রবার তাকে স্মরণ করিয়ে দিন।

 

সন্তানের বয়স সাত বছর হলেই তাদেরকে নামাজের শিক্ষা দিন। তাদের জীবনের এই নতুন অধ্যায়কে উৎসাহিত করার জন্য সন্তানের বন্ধুদের বাসায় আমন্ত্রণ জানান এবং তাদেরকে হিজাব, তাজবিহ অথবা আজান দেয় এমন এলার্ম ঘড়ি গিফট করুন।

 

শৈশব থেকে আপনার সন্তানদের আল্লাহর বিষয়ে শিক্ষা দিন। আল্লাহ সবকিছু কীভাবে তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে আপনার সন্তানদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি এক গভীর ভালোবাসা তৈরি হবে।

 

বাসায় নবীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। তাদের জীবনী পাঠ করুন এবং তাদের সিরাত নিয়ে কথা বলুন। এটা জীবনে দৈনিক একটা রুটিন বানিয়ে নিন। নবীদেরকে তাদের সামনে মডেল হিসেবে তুলে ধরুন। তাহলে তারা তার মতো হতে চেষ্টা করবে।

 

বাবা-মা সব সময়ই চায় সন্তানরা নামাজকে ভালোবাসুক। কিন্তু এমন সময়ও আসবে যে, তারা অলসতা করবে এবং নামাজ পড়তে চাইবে না। মা-বাবা হিসেবে দায়িত্ব হবে তারা যেন সব সময়ই নামাজ পড়ে- সেই ব্যবস্থা করা। বিশেষত তাদের বয়স যখন দশ বছর হয়ে যায়। তখন নামাজ ছেড়ে দেয়া কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

 

নামাজের প্রতি অনুরাগ একটি ইতিবাচক মনোভাব। এটাকে উৎসাহিত করার একটি উপায় হচ্ছে, এটি নিয়ে একটি যৌথ অনুশীলন করতে হবে। প্রতিদিন পরিবারিকভাবে কমপক্ষে একবার নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন। আপনার সন্তান যদি আজান দিতে সক্ষম হয় তাহলে তাকে আজান দেয়ার দায়িত্ব দিন।  সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আ.লীগের ব্যবসাগুলো কারা চালায় আমরা জানি: হাসনাত আবদুল্লাহ

» এনসিপি ১০ জনের একটা দল, সেখানেও যৌন হয়রানি: রুমিন ফারহানা

» ‘দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন’: গয়েশ্বর

» ভারতের মোদিকে কসাই আখ্যা দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

» রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে জামায়াতের প্রার্থীর চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ

» সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতায় থাকতে চাওয়া হবে দুঃস্বপ্ন

» আওয়ামী লীগ সারাদেশকেই কারবালার প্রান্তরে পরিণত করেছিল : মির্জা ফখরুল

» পবিত্র আশুরা শোক, শ্রদ্ধা ও আত্মত্যাগের দিন: তারেক রহমান

» পবিত্র আশুরা অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠায় সাহস জোগাবে : প্রধান উপদেষ্টা

» করোনায় আরও একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আপনার সন্তান যেভাবে নামাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে

ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর পক্ষ থেকে বার বার নামাজের তাগিদ পেয়েছেন।

 

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সালাত শব্দ উল্লেখ করে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। শিশু বয়স থেকে নামাজের অনুশীলন করলে পরবর্তী জীবনে এর বিরাট সুফল লাভ করা যায়।

মুসলিম মা-বাবা হিসেবে আপনি আপনার সন্তানের কাছে প্রথম উদাহরণ। আপনি যদি সবসময় ইবাদত-বন্দেগীকে অগ্রাধিকার দেন এবং এই ক্ষেত্রে কোনো অলসতা বা অবহেলা না করেন তাহলেই আপনার সন্তান নামাজের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে।

 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে নামাজ শিক্ষা দাও, যখন তাদের বয়স থাকে সাত। আর যখন তারা দশ বছরে পৌঁছে যাবে তখন তোমারা তোমাদের সন্তানদেরকে নামাজের জন্য প্রহার করো এবং তাদের বিছানা আলাদা করে দাও। (আবু দাউদ)

 

যদিও সাত বছর বয়সে শিশুরা নামাজ আদায় করতে বাধ্য নয় কিন্তু তারা সাত বছর থেকে নামাজে অভ্যস্ত হয়ে গেলে, তরুণ হওয়ার পরেও নামাজের বিষয়ে অনাগ্রহী হবে না।

 

বাসায় নামাজের জন্য একটি রুমকে নির্দিষ্ট করে রাখুন। অথবা একটি রুমের এক কোণায় সামান্য জায়গা নামাজের জন্য নির্ধারণ করে রাখুন। যাতে করে আপনার সন্তান বুঝতে পারে নামাজ পড়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যার কারণে একটা নির্দিষ্ট জায়গা রাখা হয়েছে।

 

সন্তানদেরকে শিক্ষা দিন যে, এটা শুধু নামাজের জন্য নির্ধারিত জায়গা। এই জায়গাকে সব সময় পরিষ্কার ও পবিত্র রাখতে হবে।

 

বাসায় ইসলামী ক্যালেন্ডার ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। এটা সন্তানদের প্রার্থনা করতে উৎসাহিত করবে। কেননা ইসলামী ক্যালেন্ডারটি সন্তানের চাক্ষুষ অনুস্মারক হিসাবে কাজ করবে। আর প্রতিটি শুক্রবার তাকে স্মরণ করিয়ে দিন।

 

সন্তানের বয়স সাত বছর হলেই তাদেরকে নামাজের শিক্ষা দিন। তাদের জীবনের এই নতুন অধ্যায়কে উৎসাহিত করার জন্য সন্তানের বন্ধুদের বাসায় আমন্ত্রণ জানান এবং তাদেরকে হিজাব, তাজবিহ অথবা আজান দেয় এমন এলার্ম ঘড়ি গিফট করুন।

 

শৈশব থেকে আপনার সন্তানদের আল্লাহর বিষয়ে শিক্ষা দিন। আল্লাহ সবকিছু কীভাবে তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে আপনার সন্তানদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি এক গভীর ভালোবাসা তৈরি হবে।

 

বাসায় নবীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। তাদের জীবনী পাঠ করুন এবং তাদের সিরাত নিয়ে কথা বলুন। এটা জীবনে দৈনিক একটা রুটিন বানিয়ে নিন। নবীদেরকে তাদের সামনে মডেল হিসেবে তুলে ধরুন। তাহলে তারা তার মতো হতে চেষ্টা করবে।

 

বাবা-মা সব সময়ই চায় সন্তানরা নামাজকে ভালোবাসুক। কিন্তু এমন সময়ও আসবে যে, তারা অলসতা করবে এবং নামাজ পড়তে চাইবে না। মা-বাবা হিসেবে দায়িত্ব হবে তারা যেন সব সময়ই নামাজ পড়ে- সেই ব্যবস্থা করা। বিশেষত তাদের বয়স যখন দশ বছর হয়ে যায়। তখন নামাজ ছেড়ে দেয়া কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

 

নামাজের প্রতি অনুরাগ একটি ইতিবাচক মনোভাব। এটাকে উৎসাহিত করার একটি উপায় হচ্ছে, এটি নিয়ে একটি যৌথ অনুশীলন করতে হবে। প্রতিদিন পরিবারিকভাবে কমপক্ষে একবার নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন। আপনার সন্তান যদি আজান দিতে সক্ষম হয় তাহলে তাকে আজান দেয়ার দায়িত্ব দিন।  সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com