ইসলামে আমানত রক্ষার প্রতি যেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তেমনই যে আমানত রক্ষা করে না, মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে, অপরের হক আত্মসাৎ করে, তার জন্যও ঘোষণা করা হয়েছে মারাত্মক ও কঠিন শাস্তির কথা।
প্রিয় নবী (সা.) ছোটবেলা থেকেই আমানতদার ছিলেন। ইহুদি আর খৃষ্টান নেই, সব মতবাদের লোকেরাই তাকে বিশ্বাস করত এবং তার কাছে অতি মূল্যবান আসবাবপত্র গচ্ছিত রাখত।
নবীজির এমন বিশ্বস্ততার কারণেই সবাই তাকে আল আমিন বলে ডাকত। যার অর্থ বিশ্বস্ত ব্যক্তি। মোমিন বান্দার অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হল সে বিশ্বস্ত এবং আমানতদার হবে। এগুণে নবী-রাসুলেরা যেমন গুণান্বিত ছিলেন, তেমনি ছিলেন আখেরি নবীর সাহাবিরাও।
সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যারা পরের হক ফেরত দিচ্ছেন না, তাদের পরকালে কী ধরনের শাস্তি হবে ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান আপনার জিজ্ঞাসায় এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিশিষ্ট আলেম ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
তিনি বলেন, এটা তাদের দুনিয়াতে ফেরত দিতে হবে। তারা হক দুনিয়াতে ফেরত দেবে এবং বাধ্য হয়ে ফেরত দেবে। কারণ, আল্লাহ জালেমকে সুযোগ দেন, কিন্তু জালেমের ব্যাপারে আল্লাহ অমনোযোগী নন। আল্লাহ জালেমের প্রত্যেকটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করেন।
কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘অবশ্যই অচিরে আমি তাদের পাকড়াও করব, সেটা তারা বুঝতেও পারবে না।’
প্রায় সব ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে সাব্যস্ত হয়েছে যে, জালেম ব্যক্তি কোনোভাবেই পৃথিবীতে পার পাবে না। সে যতই চেষ্টা করুক না কেন, যতই চালাকি করুক না কেন। কারণ, আল্লাহ তার ব্যাপারে বেখবর নন। হয়তো আজকে তাকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, আগামীকাল তাকে সুযোগ দেওয়া হবে, কিছুদিন তাকে সুযোগ দেওয়া হবে, কিন্তু একদিন না একদিন সে ধরা পড়বেই। আপনি যদি গোটা পৃথিবীর ইতিহাস দেখেন, জালেমদের ইতিহাস দেখেন, তাহলে আপনার কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে জালেমদের কাউকে আল্লাহ ছেড়ে দেননি। তাদের পতনের কথা ইতিহাসে লেখা আছে।
দ্বিতীয়ত, জালেমদের ওই আধিকারটুকু কেয়ামতের দিন আল্লাহর দরবারে আবার বুঝিয়ে দিতে হবে ওই মাজলুমের কাছে, যার হক সে নষ্ট করেছে। তাকে অবশ্যই কেয়ামতের দিন তার হক বুঝিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সেদিন টাকা পাবে না, ডলার পাবে না, দিনার আর দেরহাম পাবে না, তখন তার নেক আমল দিয়ে হক বুঝিয়ে দিতে হবে। আর যদি নেক আমল না থাকে, তখন ওই অত্যাচারিত ব্যক্তির যত গুনাহ আছে, সেই গুনাহ জালেমের মাথায় নিতে হবে। সুতরাং, এটি কঠিন শাস্তির বিষয়। তাদের সর্বশেষ পরিণতি হবে জাহান্নাম।
সূএ:ডেইলি-বাংলাদেশ