সাংবাদিককে কারাদণ্ড : সম্পাদক পরিষদের নিন্দা-উদ্বেগ

ফাইল ছবি

 

তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে দেশ রূপান্তরের শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা প্রতিনিধি শফিউজ্জামান রানাকে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

 

সোমবার এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, এভাবে অবাধ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নষ্ট ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ।

 

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় কেনা কম্পিউটার ও ল্যাপটপ-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে আবেদন করেন শফিউজ্জামান রানা। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে এই তথ্য না পাওয়া নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে ইউএনও মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাকে ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়ে জেলে পাঠান। এরপর নথি দিতে দেরি করে তার জামিনের পথ বিলম্বিত করা হয়।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, মোবাইল কোর্ট বসিয়ে একজন সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতা প্রদর্শনের চিরায়ত আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যেখানে যে কোনো অপরাধে জামিন পাওয়া ন্যূনতম আইনি অধিকার, সেখানে তা দীর্ঘায়িত করা হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ্য করছি, মোবাইল কোর্ট আসামিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া ছাড়াই একতরফা শাস্তি দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। আসামিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার পর একপক্ষীয় জেরার মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ফলে এ আইনে গ্রেফতার হওয়ার পর একজন ব্যক্তিকে অবধারিতভাবে কারাগারেই যেতে হয়। মুক্তমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের স্বার্থে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর মোবাইল কোর্ট আইন প্রয়োগ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আমরা গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর এ আইনের ব্যবহার এই মুহূর্তে বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ও ব্যক্তিস্বার্থে যারা এই আইনের চরম অপব্যবহার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তথ্য কমিশন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং কমিশনের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভাষা সৈনিক আজিজুল জলিল আর নেই

» লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি

» ভারত থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশি দুই তরুণী আটক

» বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ, স্থিতিশীল গরু-খাসি-মুরগি

» ফেসবুকে দোয়া চাওয়া যাবে কি?

» ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

» আইসিসির পরোয়ানা এখানে এলে গ্রেপ্তার হবেন নেতানিয়াহু : ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী

» নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনাররা শপথ নেবেন রোববার

» বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন

» সরকার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সাংবাদিককে কারাদণ্ড : সম্পাদক পরিষদের নিন্দা-উদ্বেগ

ফাইল ছবি

 

তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে দেশ রূপান্তরের শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা প্রতিনিধি শফিউজ্জামান রানাকে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।

 

সোমবার এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, এভাবে অবাধ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নষ্ট ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করছে সম্পাদক পরিষদ।

 

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় কেনা কম্পিউটার ও ল্যাপটপ-সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে আবেদন করেন শফিউজ্জামান রানা। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে এই তথ্য না পাওয়া নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে ইউএনও মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাকে ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়ে জেলে পাঠান। এরপর নথি দিতে দেরি করে তার জামিনের পথ বিলম্বিত করা হয়।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, মোবাইল কোর্ট বসিয়ে একজন সাংবাদিককে কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষমতা প্রদর্শনের চিরায়ত আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। যেখানে যে কোনো অপরাধে জামিন পাওয়া ন্যূনতম আইনি অধিকার, সেখানে তা দীর্ঘায়িত করা হয়েছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে।

 

বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ্য করছি, মোবাইল কোর্ট আসামিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া ছাড়াই একতরফা শাস্তি দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। আসামিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করার পর একপক্ষীয় জেরার মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ফলে এ আইনে গ্রেফতার হওয়ার পর একজন ব্যক্তিকে অবধারিতভাবে কারাগারেই যেতে হয়। মুক্তমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের স্বার্থে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর মোবাইল কোর্ট আইন প্রয়োগ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। আমরা গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর এ আইনের ব্যবহার এই মুহূর্তে বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ও ব্যক্তিস্বার্থে যারা এই আইনের চরম অপব্যবহার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। তথ্য কমিশন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং কমিশনের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com