হোটেলের খাবারের মান কমেছে, দাম বেড়েছে

ব্যস্ত শহর ঢাকা। জীবিকার তাগিদে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ছুটছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সকালে বেরিয়ে অনেকের ফিরতে হয় রাতে। দুপুরে খাওয়ার জন্য অনেকেরই একমাত্র ভরসাস্থল হোটেল-রেস্তরাঁ। কেউ কেউ আবার রাতের খাবারও সারেন হোটেলেই। এমনও মানুষ আছেন যারা তিন বেলার খাবারই গ্রহণ করেন হোটেলে।

 

নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি প্রভাব ফেলেছে এ খাতেও। হোটেল-রেস্তরাঁগুলোতে ইতিমধ্যেই অনেক খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে।

 

অন্যদিকে কিছু খাবারের দাম না বাড়ানো হলেও পরিমাণ বা মান কমিয়ে সমন্বয় করার কথা বলেছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সবজি ও মুদি পণ্যের দাম বেড়েছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভোজ্য তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি এবং মাংসের দামও। ফলে যা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই। এদিকে জিনিসের দাম বাড়ায় হোটেল ব্যবসায়ীদের কোনো ক্ষতি নেই জানিয়ে ক্রেতারা জানান, সবকিছু তাদেরকেই বহন করতে হবে। হোটেল ব্যবসায়ীরা খাবারের দাম ঠিকই বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমস্যায় পড়ছে শুধু সাধারণ ক্রেতারা।

আগারগাঁওয়ের একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে আসা সিএনজিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা দিন আনি, দিন খাই। আমাদের কাছে একটু দাম বাড়লেই অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার কারণে আমাদের মতো মানুষের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। আমরা রোজ যে আয় করি তার মধ্যে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা খাওয়ার জন্য রেখে দেই। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে খেতে গেলে অন্যান্য খরচ মেটাতে পারি না। এজন্য হোটেলে ডাল ভাতের বাইরে কিছু খেতে পারি না। ভাতের দাম না বাড়লেও পরিমাণ কমানো হয়েছে। আগে ১০ টাকায় যে পরিমাণ ভাত দেয়া হতো এখন সেই পরিমাণ দেয়া হচ্ছে না।

 

ফার্মগেটে অবস্থিত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আশরাফুল হোসেন। অল্প বেতনের চাকরি করায় পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতে পারেন না তিনি। মেসে থাকতে হয় তাকে। তার প্রতিদিনের দুপুরের খাবারের জন্য হোটেলই একমাত্র ভরসাস্থল। হোটেলে খাবারের দাম বাড়ায় অনেক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন তিনি। আশরাফুল হোসেন বলেন, হোটেলে শুধুমাত্র সবজি দিয়ে ভাত খেলেও ৬০ থেকে ৭০ টাকা খরচ করতে হয়। মাছ মাংসের কথা আর নাই বললাম। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে এখন ভাবছি আরও বাড়ে কিনা। খাবারের দাম যদি আরও বাড়ে তাহলে ঢাকায় আর টিকতে পারবো না। জিনিসের দাম বাড়ায় হোটেল ব্যবসায়ীদের কোনো ক্ষতি নেই। হোটেল ব্যবসায়ীরা জিনিসের দাম ঠিকই বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমস্যায় পড়ছে শুধু সাধারণ ক্রেতারা।

 

আগারগাঁওয়ের হোটেল ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, সবজি ও মুদি পণ্যের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া ভোজ্য তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, মাছ, মাংসসহ সবকিছুর দাম বাড়তি। এই মুহূর্তে খাবারের দাম না বাড়িয়ে আমাদের উপায় নেই। আমরা ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে সেভাবে দাম বাড়াইনি। মাংসের দাম বাড়ায় রান্না মাংসের দামও বাড়াতে হয়েছে। তাছাড়া আমাদের কোনো উপায় ছিল না। তিনি বলেন, কিছু খাবারের দাম না বাড়িয়ে আমরা পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিচ্ছি। কারণ মানুষ বেশি দামের কথা শুনলে খেতে চায় না। নানান কথা বলে। তবে দাম না বাড়িয়ে উপায় দেখছি না। অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। আমরা অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত আছি। সবাই আমাদের ধরে। সরকারকে কিছু বলতে পারে না।

 

কাওরান বাজারের হোটেল মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই খাবারের দাম বাড়ার কথা। আমরা আগের দামেই সবকিছু বিক্রি করছি। তবে এভাবে আর চালানো সম্ভব হবে না। খাবারের দাম বাড়াতে হবে।

 

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেহেদী হাসান প্রতিদিন দুপুরে হোটেল থেকে খাবার খেয়ে থাকেন। তিনি বলেন, আগে প্লেটে যে পরিমাণ ভাত দেয়া হতো এখন কিছুটা কম দিচ্ছে। মাছ মাংসের আকারও ছোট করেছে। সবজির পরিমাণও কমানো হয়েছে। খাবারে আগের মতো স্বাদ নেই। তারপরেও বাধ্য হয়ে আমাদের খেতে হচ্ছে। রাসেল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, কিছুদিন ধরে খাবারের দাম বেশি নিচ্ছে। ৭০ টাকার মাছ এখন ৮০ টাকা বিক্রি করছে। ১৪০ টাকা দিয়েও ভালোমতো খাবার খাওয়া যাচ্ছে না। অথচ কিছুদিন আগেও ১২০ টাকায় খেতাম। তাদের মতো একই অভিযোগ তোলেন দুপুরে হোটেলে খাবার খাওয়া অসংখ্য নিয়মিত ক্রেতা। মিঠুন মুন্সি বলেন, আগে একটা চিকেন বার্গার ৮০ টাকা বিক্রি করতো। আজকে ১০০ টাকা করে রাখলো। দোকানদার বলছে মুরগির দাম, তেলের দাম বাড়ছে এজন্য তারাও ২০ টাকা বাড়িয়েছে।

 

সবুজবাগ থানাধীন বৌদ্ধমন্দিরের হারুন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জহুরুল ইসলাম আহাদ বলেন, দ্রব্যমূল্য এখন অনেক বেশি। কিন্তু আমরা খাবারের দাম বাড়াতে পারছি না। কাস্টমাররা তাহলে অন্য হোটেলে চলে যাবে। তাই উপায় না পেয়ে পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছি। এখন এককেজি তেল কিনতে আমাদের ১৮০ টাকা লাগে। যেখানে আমরা পাঁচ কেজি তেল দিয়ে রান্না করতাম সেখানে এখন তিন কেজি দিয়ে রান্না করতে হচ্ছে। এজন্য খাবারের মান কমে যাচ্ছে। ক্রেতাদেরও কথা শুনতে হচ্ছে। লস দিয়ে তো ব্যবসা করা সম্ভব না। দ্রব্যমূল্য না কমলে খাবারের মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।

 

বিসমিল্লাহ হোটেলের মালিক আলমগীর হোসেন বলেন, সব কিছুর দাম বাড়ছে। গরু-মুরগির মাংসের দামও এখন বেশি। এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারও আজকে ৪০০ টাকা বেশি দিয়ে আনতে হয়েছে। আমাদের খরচ অনেক বেড়েছে। কিন্তু আমাদের পাঁচ টাকার পরোটা এখনো আগের দামই আছে। আমরা দাম বাড়ালে কাস্টমার খেতে চান না। আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এখনো কর্মচারীদের বেতন দিতে পারি নাই। এভাবে খরচ চালাতে পারছি না। কীভাবে ব্যবসা চালাবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি।

 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেস্তরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান  বলেন, এখন তেল, গরুর মাংসসহ সব কিছুর দামই বাড়ছে। কীভাবে খাবারের মান ধরে রাখতে পারবো জানি না। আমাদের জীবন শেষ। হোটেলে বিক্রিও কমেছে। মানুষ এত খরচ বহন করতে পারছে না। যেসব নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়েছে তা আমরা টিসিবি’র মাধ্যমে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। এখন আমরা চেষ্টা করছি কিছু উপকরণ কম দিয়ে রান্না করার। কিন্তু এতে খাবারের মানতো ঠিক থাকবে না। আমরা নিজেরা একটা মিটিং করে আরও বিস্তারিত কি করা যায় সেই সিদ্ধান্ত নেবো। সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের বাধাহীন প্রবেশাধিকারের দাবি নোয়াব ও সম্পাদক পরিষদের

» ২০০ টাকায় দেখা যাবে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে লড়াই

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২০জন গ্রেপ্তার

» চীন সফরে যাওয়ার আগে জুলাইয়ে ভারত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী

» উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেই: ইসি আলমগীর

» মানুষের প্রতিকার চাওয়ার কোনো জায়গা নেই: রিজভী

» হজের ভিসা আবেদনের সময় বাড়লো

» জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত, সংশোধিত সূচি প্রকাশ

» আ.লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা সন্ধ্যায়

» ব্যারিস্টার খোকনের অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হোটেলের খাবারের মান কমেছে, দাম বেড়েছে

ব্যস্ত শহর ঢাকা। জীবিকার তাগিদে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ছুটছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সকালে বেরিয়ে অনেকের ফিরতে হয় রাতে। দুপুরে খাওয়ার জন্য অনেকেরই একমাত্র ভরসাস্থল হোটেল-রেস্তরাঁ। কেউ কেউ আবার রাতের খাবারও সারেন হোটেলেই। এমনও মানুষ আছেন যারা তিন বেলার খাবারই গ্রহণ করেন হোটেলে।

 

নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি প্রভাব ফেলেছে এ খাতেও। হোটেল-রেস্তরাঁগুলোতে ইতিমধ্যেই অনেক খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে।

 

অন্যদিকে কিছু খাবারের দাম না বাড়ানো হলেও পরিমাণ বা মান কমিয়ে সমন্বয় করার কথা বলেছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সবজি ও মুদি পণ্যের দাম বেড়েছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভোজ্য তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি এবং মাংসের দামও। ফলে যা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই। এদিকে জিনিসের দাম বাড়ায় হোটেল ব্যবসায়ীদের কোনো ক্ষতি নেই জানিয়ে ক্রেতারা জানান, সবকিছু তাদেরকেই বহন করতে হবে। হোটেল ব্যবসায়ীরা খাবারের দাম ঠিকই বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমস্যায় পড়ছে শুধু সাধারণ ক্রেতারা।

আগারগাঁওয়ের একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে আসা সিএনজিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা দিন আনি, দিন খাই। আমাদের কাছে একটু দাম বাড়লেই অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার কারণে আমাদের মতো মানুষের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। আমরা রোজ যে আয় করি তার মধ্যে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা খাওয়ার জন্য রেখে দেই। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে খেতে গেলে অন্যান্য খরচ মেটাতে পারি না। এজন্য হোটেলে ডাল ভাতের বাইরে কিছু খেতে পারি না। ভাতের দাম না বাড়লেও পরিমাণ কমানো হয়েছে। আগে ১০ টাকায় যে পরিমাণ ভাত দেয়া হতো এখন সেই পরিমাণ দেয়া হচ্ছে না।

 

ফার্মগেটে অবস্থিত একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আশরাফুল হোসেন। অল্প বেতনের চাকরি করায় পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকতে পারেন না তিনি। মেসে থাকতে হয় তাকে। তার প্রতিদিনের দুপুরের খাবারের জন্য হোটেলই একমাত্র ভরসাস্থল। হোটেলে খাবারের দাম বাড়ায় অনেক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন তিনি। আশরাফুল হোসেন বলেন, হোটেলে শুধুমাত্র সবজি দিয়ে ভাত খেলেও ৬০ থেকে ৭০ টাকা খরচ করতে হয়। মাছ মাংসের কথা আর নাই বললাম। যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে এখন ভাবছি আরও বাড়ে কিনা। খাবারের দাম যদি আরও বাড়ে তাহলে ঢাকায় আর টিকতে পারবো না। জিনিসের দাম বাড়ায় হোটেল ব্যবসায়ীদের কোনো ক্ষতি নেই। হোটেল ব্যবসায়ীরা জিনিসের দাম ঠিকই বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমস্যায় পড়ছে শুধু সাধারণ ক্রেতারা।

 

আগারগাঁওয়ের হোটেল ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, সবজি ও মুদি পণ্যের দাম বেড়েছে। এ ছাড়া ভোজ্য তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, মাছ, মাংসসহ সবকিছুর দাম বাড়তি। এই মুহূর্তে খাবারের দাম না বাড়িয়ে আমাদের উপায় নেই। আমরা ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে সেভাবে দাম বাড়াইনি। মাংসের দাম বাড়ায় রান্না মাংসের দামও বাড়াতে হয়েছে। তাছাড়া আমাদের কোনো উপায় ছিল না। তিনি বলেন, কিছু খাবারের দাম না বাড়িয়ে আমরা পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিচ্ছি। কারণ মানুষ বেশি দামের কথা শুনলে খেতে চায় না। নানান কথা বলে। তবে দাম না বাড়িয়ে উপায় দেখছি না। অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। আমরা অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত আছি। সবাই আমাদের ধরে। সরকারকে কিছু বলতে পারে না।

 

কাওরান বাজারের হোটেল মালিক মোশারফ হোসেন বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই খাবারের দাম বাড়ার কথা। আমরা আগের দামেই সবকিছু বিক্রি করছি। তবে এভাবে আর চালানো সম্ভব হবে না। খাবারের দাম বাড়াতে হবে।

 

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেহেদী হাসান প্রতিদিন দুপুরে হোটেল থেকে খাবার খেয়ে থাকেন। তিনি বলেন, আগে প্লেটে যে পরিমাণ ভাত দেয়া হতো এখন কিছুটা কম দিচ্ছে। মাছ মাংসের আকারও ছোট করেছে। সবজির পরিমাণও কমানো হয়েছে। খাবারে আগের মতো স্বাদ নেই। তারপরেও বাধ্য হয়ে আমাদের খেতে হচ্ছে। রাসেল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, কিছুদিন ধরে খাবারের দাম বেশি নিচ্ছে। ৭০ টাকার মাছ এখন ৮০ টাকা বিক্রি করছে। ১৪০ টাকা দিয়েও ভালোমতো খাবার খাওয়া যাচ্ছে না। অথচ কিছুদিন আগেও ১২০ টাকায় খেতাম। তাদের মতো একই অভিযোগ তোলেন দুপুরে হোটেলে খাবার খাওয়া অসংখ্য নিয়মিত ক্রেতা। মিঠুন মুন্সি বলেন, আগে একটা চিকেন বার্গার ৮০ টাকা বিক্রি করতো। আজকে ১০০ টাকা করে রাখলো। দোকানদার বলছে মুরগির দাম, তেলের দাম বাড়ছে এজন্য তারাও ২০ টাকা বাড়িয়েছে।

 

সবুজবাগ থানাধীন বৌদ্ধমন্দিরের হারুন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জহুরুল ইসলাম আহাদ বলেন, দ্রব্যমূল্য এখন অনেক বেশি। কিন্তু আমরা খাবারের দাম বাড়াতে পারছি না। কাস্টমাররা তাহলে অন্য হোটেলে চলে যাবে। তাই উপায় না পেয়ে পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছি। এখন এককেজি তেল কিনতে আমাদের ১৮০ টাকা লাগে। যেখানে আমরা পাঁচ কেজি তেল দিয়ে রান্না করতাম সেখানে এখন তিন কেজি দিয়ে রান্না করতে হচ্ছে। এজন্য খাবারের মান কমে যাচ্ছে। ক্রেতাদেরও কথা শুনতে হচ্ছে। লস দিয়ে তো ব্যবসা করা সম্ভব না। দ্রব্যমূল্য না কমলে খাবারের মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।

 

বিসমিল্লাহ হোটেলের মালিক আলমগীর হোসেন বলেন, সব কিছুর দাম বাড়ছে। গরু-মুরগির মাংসের দামও এখন বেশি। এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারও আজকে ৪০০ টাকা বেশি দিয়ে আনতে হয়েছে। আমাদের খরচ অনেক বেড়েছে। কিন্তু আমাদের পাঁচ টাকার পরোটা এখনো আগের দামই আছে। আমরা দাম বাড়ালে কাস্টমার খেতে চান না। আগের দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এখনো কর্মচারীদের বেতন দিতে পারি নাই। এভাবে খরচ চালাতে পারছি না। কীভাবে ব্যবসা চালাবো তা নিয়ে চিন্তায় আছি।

 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেস্তরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান  বলেন, এখন তেল, গরুর মাংসসহ সব কিছুর দামই বাড়ছে। কীভাবে খাবারের মান ধরে রাখতে পারবো জানি না। আমাদের জীবন শেষ। হোটেলে বিক্রিও কমেছে। মানুষ এত খরচ বহন করতে পারছে না। যেসব নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেড়েছে তা আমরা টিসিবি’র মাধ্যমে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। এখন আমরা চেষ্টা করছি কিছু উপকরণ কম দিয়ে রান্না করার। কিন্তু এতে খাবারের মানতো ঠিক থাকবে না। আমরা নিজেরা একটা মিটিং করে আরও বিস্তারিত কি করা যায় সেই সিদ্ধান্ত নেবো। সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com