দুদকে শরীফ উদ্দিন, নিজেকে নির্দোষ দাবি করে চাইলেন ন্যায়বিচার

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অপসারিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চৌধুরী বিভাগীয় মামলায় সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এসেছেন। এসময় সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে দুদকের প্রধান কার্যালয় সেগুনবাগিচায় আসেন শরীফ উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বা বিভাগীয় তদন্ত ৯/২১-এ তথ্য দেন তিনি।

 

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফকে চাকরি থেকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর দুদকের কর্মকর্তা থাকাকালে নানা আলোচিত দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে তার তদন্তের বিষয়টি সামনে আসে। তিনি প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন- এমন অভিযোগ জোরাল হয়ে উঠে।

 

সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ন্যায়বিচারে প্রতীক, তার কাছে খবর পৌঁছানোর কারণে আমি এখনও গুম হইনি। আমি আশা করি তিনি আমার প্রতি ন্যায়বিচার করবেন।

 

দুদকের অপসারিত কর্মকর্তা শরীফ বলেন, এটা আমার কাছে খুব বিব্রতকর পরিস্থিতি যে একজন দুদকের সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে দুদকে হাজিরা দিতে এসেছি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে দুঃখজনকভাবে হলেও সত্যি আমি অপসারণের পরও বিভাগীয় মামলায় হাজিরা দিচ্ছি। এটা আইনের দৃষ্টিতে কতটুকু সাম্য আমি বলতে পারব না। তবে এটা নিয়ে আমি খুব বিব্রত।

 

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে তিনিটি ডিপি (বিভাগীয় মামলা) চলমান। প্রথমটি হলো- নো ডেবিট (ব্যাংক হিসাব স্তগিতের আদেশ), নথি হস্তান্তর দেরি কেন, আর তৃতীয় নম্বর ডিপি হলো আমি দেরিতে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কারণে।

 

আজকে দুদকে হাজির হওয়ারে কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে আমি হাজির হয়েছি নথি হস্তান্তর দেরি হওয়ার কারণ জানাতে। আমি ফিজিক্যালি এসেছি, আমি আমার যাবতীয় যে প্রমাণ দাখিণ করেছি। আমাকে ২০২১ সালে ১৬ জুন পটুয়াখালি বদলি করা হয়।

 

শরীফ উদ্দিন বলেন, আমার কাছে ১৩০টা নথি রয়েছে। মামলার আলামত পাঁচ আলমারি। এগুলো নিজে বুঝে আরেকজনকে বুঝিয়ে দেওয়া অনেক সময় সাপেক্ষ। তারপর আমি সেটা করেছি, হয়তো সময় লেগেছে। আমিও নিজেও হাসপাতলে ভর্তি ছিলাম, সেকারণে আমার যোগ দিতেও দেরি হয়েছে, মামলার নথি বোঝাতেও সময় লেগেছে।

 

তিনি আরও বলেন, কেউ বদলি হলে ছুটি নিয়ে নথি বুঝিয়ে দেয় আমার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। আমাকে সরাসরি ২০২১ সালে ২২ আগস্ট সরাসরি শোকজ করা হয়েছে। অন্তত্য দুঃখের বিষয় আমাকে আসতেও দেওয়া হয়নি। নথি হস্তান্তরের সুয়োগও দেওয়া হয়নি।

 

অপসারণের পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুদক সচিব গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শরীফের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তবে সেগুলো প্রকাশ্যে বলা হবে না। তার তিন দিন পর দুদক থেকে শরীফের বিরুদ্ধে ১৩টি অভিযোগের কথা জানিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়।

 

এদিকে শরীফ অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন জানিয়ে হাইকোর্টে ১০ আইনজীবী চিঠি দেন। জবাবে হাইকোর্ট চাকরি ফিরে পেতে ও তার নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আদালতে রিট করতে বলেন। সোমবার রিটের শুনানিতে শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের কারণ লিখিতভাবে জানাতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খানকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।  সূূএ:ঢাকাটাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সকালে খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদের উপকারিতা

» গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

» হার্টে ব্লক : ওষুধ খাবেন কতদিন

» রণবীরের ‘ধুরন্ধর’ ছবির লুক নিয়ে তোলপাড়

» বরিশালকে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় রংপুরের

» উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় সেই কোরীয় এয়ারলাইন্স প্রধানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

» অদক্ষ চালক বেপরোয়া গতি কেন মারণফাঁদ এক্সপ্রেসওয়ে

» ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফরহাদ, সেক্রেটারি মহিউদ্দিন

» ইজিবাইকের ধাক্কায় বাইসাইকেল চালক নিহত

» খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন সেনাপ্রধান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

দুদকে শরীফ উদ্দিন, নিজেকে নির্দোষ দাবি করে চাইলেন ন্যায়বিচার

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অপসারিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন চৌধুরী বিভাগীয় মামলায় সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দিতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এসেছেন। এসময় সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে দুদকের প্রধান কার্যালয় সেগুনবাগিচায় আসেন শরীফ উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বা বিভাগীয় তদন্ত ৯/২১-এ তথ্য দেন তিনি।

 

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফকে চাকরি থেকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর দুদকের কর্মকর্তা থাকাকালে নানা আলোচিত দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে তার তদন্তের বিষয়টি সামনে আসে। তিনি প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন- এমন অভিযোগ জোরাল হয়ে উঠে।

 

সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ন্যায়বিচারে প্রতীক, তার কাছে খবর পৌঁছানোর কারণে আমি এখনও গুম হইনি। আমি আশা করি তিনি আমার প্রতি ন্যায়বিচার করবেন।

 

দুদকের অপসারিত কর্মকর্তা শরীফ বলেন, এটা আমার কাছে খুব বিব্রতকর পরিস্থিতি যে একজন দুদকের সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে দুদকে হাজিরা দিতে এসেছি। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে দুঃখজনকভাবে হলেও সত্যি আমি অপসারণের পরও বিভাগীয় মামলায় হাজিরা দিচ্ছি। এটা আইনের দৃষ্টিতে কতটুকু সাম্য আমি বলতে পারব না। তবে এটা নিয়ে আমি খুব বিব্রত।

 

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে তিনিটি ডিপি (বিভাগীয় মামলা) চলমান। প্রথমটি হলো- নো ডেবিট (ব্যাংক হিসাব স্তগিতের আদেশ), নথি হস্তান্তর দেরি কেন, আর তৃতীয় নম্বর ডিপি হলো আমি দেরিতে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কারণে।

 

আজকে দুদকে হাজির হওয়ারে কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে আমি হাজির হয়েছি নথি হস্তান্তর দেরি হওয়ার কারণ জানাতে। আমি ফিজিক্যালি এসেছি, আমি আমার যাবতীয় যে প্রমাণ দাখিণ করেছি। আমাকে ২০২১ সালে ১৬ জুন পটুয়াখালি বদলি করা হয়।

 

শরীফ উদ্দিন বলেন, আমার কাছে ১৩০টা নথি রয়েছে। মামলার আলামত পাঁচ আলমারি। এগুলো নিজে বুঝে আরেকজনকে বুঝিয়ে দেওয়া অনেক সময় সাপেক্ষ। তারপর আমি সেটা করেছি, হয়তো সময় লেগেছে। আমিও নিজেও হাসপাতলে ভর্তি ছিলাম, সেকারণে আমার যোগ দিতেও দেরি হয়েছে, মামলার নথি বোঝাতেও সময় লেগেছে।

 

তিনি আরও বলেন, কেউ বদলি হলে ছুটি নিয়ে নথি বুঝিয়ে দেয় আমার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। আমাকে সরাসরি ২০২১ সালে ২২ আগস্ট সরাসরি শোকজ করা হয়েছে। অন্তত্য দুঃখের বিষয় আমাকে আসতেও দেওয়া হয়নি। নথি হস্তান্তরের সুয়োগও দেওয়া হয়নি।

 

অপসারণের পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুদক সচিব গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, শরীফের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। তবে সেগুলো প্রকাশ্যে বলা হবে না। তার তিন দিন পর দুদক থেকে শরীফের বিরুদ্ধে ১৩টি অভিযোগের কথা জানিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হয়।

 

এদিকে শরীফ অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন জানিয়ে হাইকোর্টে ১০ আইনজীবী চিঠি দেন। জবাবে হাইকোর্ট চাকরি ফিরে পেতে ও তার নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আদালতে রিট করতে বলেন। সোমবার রিটের শুনানিতে শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের কারণ লিখিতভাবে জানাতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খানকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।  সূূএ:ঢাকাটাইমস

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com