পিলখানার ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করা হবে : বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী

ছবি সংগৃহীত

 

বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, পিলখানার ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।

আজ সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে পিলখানার শহীদদের কবরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলে।

 

মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর চৌকস অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা সশস্ত্র বাহিনীসহ পুরো দেশবাসীর জন্য একটি দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। এই ঘটনা বিচারের আওতাধীন রয়েছে। বিচারকার্যের যে নিয়ম সেটা আমাদের অনুসরণ করতে হবে। আমরা যতদূর জেনেছি, এই বিচারকার্য এগিয়ে চলেছে, অনেকটা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নিহতের পরিবার এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই বিচার কার্যক্রম শেষ হবে।

বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি যারা এই নির্মম ঘটনার সঙ্গে জড়িত, যারা দোষী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আর এ ধরনের ঘটনা যেন বাংলাদেশে আর কখনো ঘটতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।

বিশ্লেষকরা বলছে, ঘটনায় জড়িত ৮০০ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে কিন্তু মাস্টারমাইন্ডরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে – আপনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে কি মনে করেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিষয়ে সকল মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজে বের করতে হবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনার পেছনে যারা কুশীলব কিছুটা তো আমরা জানি কারা ছিল। আমরা জানি যে সেদিনের ঘটনার কিছুক্ষণ আগে বেগম জিয়ার বাসা থেকে কালো রঙের একটি গাড়ি কোনো ধরনের প্রোটোকল ছাড়া বেড়িয়ে গেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে তিনি জানতেন এমন ঘটনা ঘটবে।

 

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এই দিনে সকাল ৯টা ২৭ মিনিটের দিকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার চলাকালে হলে ঢুকে পড়েন একদল বিদ্রোহী সৈনিক। তাদের একজন তৎকালীন মহাপরিচালকের (শাকিল আহমেদ) বুকে বন্দুক তাক করেন। সূচনা হয় ইতিহাসের সেই নৃশংসতম ঘটনার।

 

তাদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়তে থাকেন সেনা কর্মকর্তারা। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। পরে পিলখানার ভেতরে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। ৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, এক সৈনিক, দুই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ বিজিবি সদস্য ও পাঁচ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন।

 

বহুল আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় (পিলখানা হত্যা মামলা) ১৩৯ জনের ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি কোনো মামলার। দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অপর মামলাটি এখনো বিচারিক (নিম্ন) আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের গণ্ডি পার হয়নি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে ভারত: নীরব

» খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে

» ভিডিও বার্তায় মইন ইউ আহমেদ মুন্নি সাহার লাইভ বিডিআর বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে

» ক্ষমতায় গেলে দেশের সকল ফরম থেকে ধর্মালম্বী অপশন তুলে দেওয়া হবে—- ড. মঈন খান

» পলাশে হামলা ভাংচুরের পর বন্ধ হয়ে গেল জনতা জুটমিল, কর্মহীন হয়ে পড়েছে ৭ হাজার শ্রমিক

» বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার এক সপ্তাহ পরেও যে কারণে পর্যটক নেই

» হাতীবান্ধা রিপোর্টার্স ক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি মোস্তফা সম্পাদক রহিম

» ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইসলামপুর উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধন

» এক্সিম ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার অভিযোগে ১০ জন আটক

» ‘লুকিয়ে রাখা’ পুতিনের দুই ছেলের তথ্য ফাঁস!

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পিলখানার ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করা হবে : বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী

ছবি সংগৃহীত

 

বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, পিলখানার ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।

আজ সকালে বনানীর সামরিক কবরস্থানে পিলখানার শহীদদের কবরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলে।

 

মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর চৌকস অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা সশস্ত্র বাহিনীসহ পুরো দেশবাসীর জন্য একটি দুঃখজনক ও মর্মান্তিক ঘটনা। এই ঘটনা বিচারের আওতাধীন রয়েছে। বিচারকার্যের যে নিয়ম সেটা আমাদের অনুসরণ করতে হবে। আমরা যতদূর জেনেছি, এই বিচারকার্য এগিয়ে চলেছে, অনেকটা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নিহতের পরিবার এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এই বিচার কার্যক্রম শেষ হবে।

বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি যারা এই নির্মম ঘটনার সঙ্গে জড়িত, যারা দোষী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। আর এ ধরনের ঘটনা যেন বাংলাদেশে আর কখনো ঘটতে না পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।

বিশ্লেষকরা বলছে, ঘটনায় জড়িত ৮০০ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে কিন্তু মাস্টারমাইন্ডরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে – আপনি সাবেক সেনা কর্মকর্তা হিসেবে কি মনে করেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ফারুক খান বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিষয়ে সকল মাস্টারমাইন্ডকে খুঁজে বের করতে হবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি ঘটনার পেছনে যারা কুশীলব কিছুটা তো আমরা জানি কারা ছিল। আমরা জানি যে সেদিনের ঘটনার কিছুক্ষণ আগে বেগম জিয়ার বাসা থেকে কালো রঙের একটি গাড়ি কোনো ধরনের প্রোটোকল ছাড়া বেড়িয়ে গেছে। এতে প্রমাণিত হয় যে তিনি জানতেন এমন ঘটনা ঘটবে।

 

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এই দিনে সকাল ৯টা ২৭ মিনিটের দিকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার চলাকালে হলে ঢুকে পড়েন একদল বিদ্রোহী সৈনিক। তাদের একজন তৎকালীন মহাপরিচালকের (শাকিল আহমেদ) বুকে বন্দুক তাক করেন। সূচনা হয় ইতিহাসের সেই নৃশংসতম ঘটনার।

 

তাদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়তে থাকেন সেনা কর্মকর্তারা। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। পরে পিলখানার ভেতরে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। ৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, এক সৈনিক, দুই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ বিজিবি সদস্য ও পাঁচ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন।

 

বহুল আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় (পিলখানা হত্যা মামলা) ১৩৯ জনের ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি কোনো মামলার। দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অপর মামলাটি এখনো বিচারিক (নিম্ন) আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের গণ্ডি পার হয়নি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com