শিগগির পানিতে নামছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রমোদতরী

সংগৃহীত ছবি

 

আমাদের মাঝে বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রমোদতরীর কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে টাইটানিকের ছবি। প্রকাণ্ড সেই জাহাজটি তার প্রথম যাত্রায়ই ডুবে গিয়েছে আজ থেকে একশ বছরেরও বেশি সময় আগে।

টাইটানিকের দুর্ভাগ্যের পুনরাবৃত্তি আবারও ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলেও মানুষ দমে যায়নি। আর তারই প্রমাণ হলো দৈত্যাকার প্রমোদতরী ‘আইকন অব দ্য সি’।

জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রের ফিনল্যান্ডের ঐতিহ্য অনেক পুরনো। ফিনল্যান্ডের পুরনো ঐতিহ্যের কথা ভেবেই হয়তো রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল প্রকাণ্ড এই জাহাজটির নির্মাণের জন্য দেশটিকেই বেছে নিয়েছিল। আইকন অব দ্য সি- এর নির্মাণ কাজ করছে মেয়ার টুরকু নামের একটি শিপইয়ার্ড।

আইকন অব দ্য সি- এর দৈর্ঘ্য ৩৬৫ মিটার বা ১১৯৮ ফুট এবং ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন। দৈর্ঘ্য এবং ওজন থেকেই অনুমান করা যায় জাহাজটি আসলে কতোটা প্রকাণ্ড। তবে প্রকাণ্ড হলেও জাহাজটি নির্মাণে খুব বেশি সময় নিচ্ছে না মেয়ার টুরকু। কারণ, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছে এই জাহাজটির নির্মাণ কাজ। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের অক্টোবরেই প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে পানিতে নামবে। ফলে অনুমান করা কষ্টকর নয় যে, প্রায় চোখের পলকে; দুই বছরেরও কম সময়ে জাহাজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।

তবে জাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে, ক্যারিবিয়ান সাগরে। জাহাজটিতে একসঙ্গে প্রায় ৮ হাজার মানুষ অবস্থান করতে পারবে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬১০ জন হবে জাহাজটির যাত্রী। আর যাত্রীদের সেবার জন্য এবং জাহাজ পরিচালনার জন্য থাকবে ২ হাজার ৩৫০ জন ক্রু। বলাই যায়, রীতিমতো রাজকীয় আয়োজন।

আয়োজন কতটা রাজকীয় তা খানিকটা টের পাওয়া যায় ২০ তলা বিশিষ্ট জাহাজটিতে যাত্রীদের জন্য রাখা বিভিন্ন সুবিধা থেকে। যেমন যাত্রীরা চাইলেই ৭টি পুলে সাতার কাটতে পারবেন। আবার যদি কারো মনে হয়ে যে, একটু উষ্ণ পানির প্রসবনে গা ভিজিয়ে নেয়া দরকার তবে তার জন্য থাকবে ৯টি ওয়ার্লপুল; যেখানে সাধারণত তীব্র বেগে উষ্ণ পানির ধারা প্রবাহিত হয়।

কেবল পুলই নয় জাহাজটিতে ভোজন রসিকদের জন্যও রয়েছে সুব্যবস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেরা ৪০ ধরনের ডাইনিং মেন্যু পাওয়া যাবে জাহাজটিতে। এছাড়া অন্যান্য খাবারের সুবিধা তো থাকবেই। আবারও কেবল আহার নয়, জাহাজটিতে থাকছে একাধিক পানশালাও। যেখানে চাইলে যাত্রীরা যেকোনো সময় নিজেদের গলা ভিজিয়ে নিতে পারবেন রঙিন পানিতে।

প্রমোদতরীতে কেবল ভোজন বা পানাহার থাকবে আর সাতার কাটবে-এমন কারণে মানুষ নিশ্চয়ই যাবে না। যাত্রীদের তাই আলাদা মাত্রায় আনন্দিত করতে সেখানে থাকবে বিভিন্ন ধরনের চিত্ত বিনোদন আইটেম।

জাহাজটি মোট আটটি আলাদা অংশে বিভক্ত। প্রত্যেকটি ভাগের বৈশিষ্ট্য আলাদা। কোনোটি তরুণ যুগলদের জন্য, আবার কোনোটি বৃদ্ধদের মনোরঞ্জনের জন্য। আছে শিশুদের জন্য আলাদা এলাকাও। যেখানে কেবল শিশুদের জন্য নির্ধারিত সেবাই মিলবে।

বিশালাকৃতির এই জাহাজটি চলাতে আশ্রয় নেয়া হয়েছে তুলনামূলক আধুনিক পদ্ধতির। জাহাজটির মূল জ্বালানি হিসেবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হলেও এতে ফুয়েল সেল প্রযুক্তিও রাখা হয়েছে।

এরই মধ্যে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল জাহাজটির প্রথম যাত্রার জন্য প্রি-বুক অর্ডার শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে বুক করতে পারা যাবে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের বর্তমান সর্ববৃহৎ প্রমোদতরীর মালিকানাও রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন ‘ওয়ান্ডার অব দ্য সি’র দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৮৮ ফুট। জাহাজটিতে মোট ১৮টি তলা রয়েছে।

সূত্র: সিএনএন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পাঁচ থানায় একযোগে অভিযান, অস্ত্র উদ্ধার

» মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা হত্যা, মূলহোতাসহ গ্রেফতার ২জন

» সংবিধান পুনর্লিখনে গণপরিষদ-আইনসভা নির্বাচন একই হতে হবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ

» শেখ হাসিনা নির্বাচনকে জাদুঘরে পাঠিয়েছিল

» কেমন গয়না পছন্দ করেন মিমি?

» দেশের জন্য কাজ করছেন নাকি আ’লীগকে পুনর্বাসনের অপেক্ষা : কর্নেল অলির

» দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ: জি এম কাদের

» নির্বাচন প্রলম্বিত করার পক্ষপাতী নয় এনসিপি: আখতার হোসেন

» বাংলাদেশের ইতিহাসে সেরা নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা

» কুবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিগগির পানিতে নামছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রমোদতরী

সংগৃহীত ছবি

 

আমাদের মাঝে বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রমোদতরীর কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে টাইটানিকের ছবি। প্রকাণ্ড সেই জাহাজটি তার প্রথম যাত্রায়ই ডুবে গিয়েছে আজ থেকে একশ বছরেরও বেশি সময় আগে।

টাইটানিকের দুর্ভাগ্যের পুনরাবৃত্তি আবারও ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা থাকলেও মানুষ দমে যায়নি। আর তারই প্রমাণ হলো দৈত্যাকার প্রমোদতরী ‘আইকন অব দ্য সি’।

জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রের ফিনল্যান্ডের ঐতিহ্য অনেক পুরনো। ফিনল্যান্ডের পুরনো ঐতিহ্যের কথা ভেবেই হয়তো রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল প্রকাণ্ড এই জাহাজটির নির্মাণের জন্য দেশটিকেই বেছে নিয়েছিল। আইকন অব দ্য সি- এর নির্মাণ কাজ করছে মেয়ার টুরকু নামের একটি শিপইয়ার্ড।

আইকন অব দ্য সি- এর দৈর্ঘ্য ৩৬৫ মিটার বা ১১৯৮ ফুট এবং ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন। দৈর্ঘ্য এবং ওজন থেকেই অনুমান করা যায় জাহাজটি আসলে কতোটা প্রকাণ্ড। তবে প্রকাণ্ড হলেও জাহাজটি নির্মাণে খুব বেশি সময় নিচ্ছে না মেয়ার টুরকু। কারণ, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছে এই জাহাজটির নির্মাণ কাজ। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরের অক্টোবরেই প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে পানিতে নামবে। ফলে অনুমান করা কষ্টকর নয় যে, প্রায় চোখের পলকে; দুই বছরেরও কম সময়ে জাহাজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হতে যাচ্ছে।

তবে জাহাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে, ক্যারিবিয়ান সাগরে। জাহাজটিতে একসঙ্গে প্রায় ৮ হাজার মানুষ অবস্থান করতে পারবে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬১০ জন হবে জাহাজটির যাত্রী। আর যাত্রীদের সেবার জন্য এবং জাহাজ পরিচালনার জন্য থাকবে ২ হাজার ৩৫০ জন ক্রু। বলাই যায়, রীতিমতো রাজকীয় আয়োজন।

আয়োজন কতটা রাজকীয় তা খানিকটা টের পাওয়া যায় ২০ তলা বিশিষ্ট জাহাজটিতে যাত্রীদের জন্য রাখা বিভিন্ন সুবিধা থেকে। যেমন যাত্রীরা চাইলেই ৭টি পুলে সাতার কাটতে পারবেন। আবার যদি কারো মনে হয়ে যে, একটু উষ্ণ পানির প্রসবনে গা ভিজিয়ে নেয়া দরকার তবে তার জন্য থাকবে ৯টি ওয়ার্লপুল; যেখানে সাধারণত তীব্র বেগে উষ্ণ পানির ধারা প্রবাহিত হয়।

কেবল পুলই নয় জাহাজটিতে ভোজন রসিকদের জন্যও রয়েছে সুব্যবস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সেরা ৪০ ধরনের ডাইনিং মেন্যু পাওয়া যাবে জাহাজটিতে। এছাড়া অন্যান্য খাবারের সুবিধা তো থাকবেই। আবারও কেবল আহার নয়, জাহাজটিতে থাকছে একাধিক পানশালাও। যেখানে চাইলে যাত্রীরা যেকোনো সময় নিজেদের গলা ভিজিয়ে নিতে পারবেন রঙিন পানিতে।

প্রমোদতরীতে কেবল ভোজন বা পানাহার থাকবে আর সাতার কাটবে-এমন কারণে মানুষ নিশ্চয়ই যাবে না। যাত্রীদের তাই আলাদা মাত্রায় আনন্দিত করতে সেখানে থাকবে বিভিন্ন ধরনের চিত্ত বিনোদন আইটেম।

জাহাজটি মোট আটটি আলাদা অংশে বিভক্ত। প্রত্যেকটি ভাগের বৈশিষ্ট্য আলাদা। কোনোটি তরুণ যুগলদের জন্য, আবার কোনোটি বৃদ্ধদের মনোরঞ্জনের জন্য। আছে শিশুদের জন্য আলাদা এলাকাও। যেখানে কেবল শিশুদের জন্য নির্ধারিত সেবাই মিলবে।

বিশালাকৃতির এই জাহাজটি চলাতে আশ্রয় নেয়া হয়েছে তুলনামূলক আধুনিক পদ্ধতির। জাহাজটির মূল জ্বালানি হিসেবে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হলেও এতে ফুয়েল সেল প্রযুক্তিও রাখা হয়েছে।

এরই মধ্যে রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনাল জাহাজটির প্রথম যাত্রার জন্য প্রি-বুক অর্ডার শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে বুক করতে পারা যাবে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের বর্তমান সর্ববৃহৎ প্রমোদতরীর মালিকানাও রয়্যাল ক্যারিবিয়ান ইন্টারন্যাশনালের। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন ‘ওয়ান্ডার অব দ্য সি’র দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৮৮ ফুট। জাহাজটিতে মোট ১৮টি তলা রয়েছে।

সূত্র: সিএনএন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com