প্রস্রাবে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ, জটিল কোনও রোগের লক্ষণ নয় তো!

সম্পূর্ণ স্বচ্ছ হালকা হলুদ হলো সুস্থ মানুষের প্রস্রাবের রঙ। আবার গাঢ় হলুদ রঙ হলেও তা স্বাভাবিক। এমন প্রস্রাবের অর্থ হলো শরীর ঠিকমতো তার নিজের কাজ সামলে নিলেও সামান্য ডিহাইড্রেটেড। বেশি পরিমাণ পানি খেলে সেই সমস্যারও সমাধান হয়ে যায়।

 

প্রস্রাবের নিজস্ব কোনও গন্ধ নেই। কিন্তু প্রস্রাব করার পর বাতাসে অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিন্তু তার থেকে অ্যামোনিয়ার গন্ধ উৎপন্ন হয়। যে কারণে পাবলিক টয়লেট থেকে তীব্র ঝাঁঝালো কটূ গন্ধ আমাদের নাকে আসে। আর এই গন্ধ অনেক সময়ই মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। আর প্রস্রাবে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ কিন্তু জানান দেয় শারীরিক অসুস্থতার কথা।

 

কেন প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত হয়? এর কিন্তু একাধিক কারণ রয়েছে। কখনও তা কোনও শারীরিক সমস্যার কারণেও হতে পারে। যারা ইস্টের সংক্রণমে ভুগছেন বা যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের প্রস্রাব সব সময় গন্ধযুক্ত হয়। তবে এই গন্ধ মাত্রা ছাড়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নইলে হতে পারে শরীরের ক্ষতি। হতে পারে কিডনির সমস্যাও। কিন্তু কেন প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত হয় তার কিছু কারণও রয়েছে।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হল ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ। যে কোনও মানুষের ক্ষেত্রেই কিন্তু এই সংক্রমণ হতে পারে। মূত্রাশয়ে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি জানান দেয় ইউরিন ইনফেকশনের। এক্ষেত্রে প্রস্রাব করার সময় জ্বালা ভাব থাকে। প্রস্রাবের জায়গা বার বার চুলকায়। সেই সঙ্গে ঘন ঘন প্রস্রাবে যাওয়ার দরকারও পড়ে। এমন অবস্থায় প্রস্রাব কিন্তু দুর্গন্ধ যুক্ত হয়।

 

প্রস্রাব আমাদের দেহের রেচন পদার্থ। শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন এই প্রস্রাবের মধ্যে দিয়েই বাইরে আসে। ফলে একরকম কটূ গন্ধ তো থাকেই। কিন্তু পানি কম খেলে প্রস্রাব ঠিকমতো হয় না। আর তখন এই কটূ গন্ধ যেন আরও অনেকটাই বেড়ে যায়।

 

যারা চা-কফি বেশি মাত্রায় খান তাদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এই একই সমস্যা হতে পারে। কফির মধ্যে যে ক্যাফেন থাকে তার জন্যই এই সমস্যা হয়। কারণ এক্ষেত্রে বিপাক ঠিক মতো হয় না। সেই সঙ্গে কফি শরীরকে ডিহাইড্রেডও করে দেয়। আর তাই তখন প্রস্রাব দুর্গন্ধ যুক্ত হয়। এমন ক্ষেত্রে অবশ্যই এই ক্যাফেনের পরিমাণ কিন্তু কমাতে হবে।

 

ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলেও কিন্তু প্রস্রাবে দুর্গন্ধ আসে। এক্ষেত্রে চিনি সহজে হজম হয় না। শরীরের অন্যান্য বিপাকও প্রয়োজনের তুলনায় কম হয়। যে কারণে ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে কিন্তু প্রস্রাব মিষ্টি হয় এবং অন্যরকম গন্ধ থাকে। এছাড়াও ডায়াবেটিসের সমস্যায় বার বার টয়লেটে যাবারও প্রয়োজন পড়ে।

 

যৌনতার থেকেও এমন সমস্যা আসতে পারে। সেক্সচুয়াল ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন এর জন্য দায়ী। এক্ষেত্রেও সংক্রমণ হয় মূত্রনালীতে। যে কারণে প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন এসব একাধিক সমস্যা হয়। যেখান থেকে যোনিতে জ্বালা, দুর্গন্ধ যুক্ত প্রস্রাব এসব সমস্যা থেকেই যায়।

 

শরীর আবার বিভিন্ন খাবার বিভিন্ন ভাবে হজম করে। অ্যাসপারগাস, স্প্রাউটস, পিঁয়াজ, রসুন, মাছ এবং নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য গ্রহণ করতে সময় লাগায়। এখান থেকেও কিন্তু দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হতে পারে। কারণ যে সব খাবার হজম করা কঠিন এবং কটূ গন্ধ যুক্ত সে সব খাবার বেশি খেলে প্রস্রাবে আঁশটে গন্ধ থাকে।

সূত্র- আনন্দবাজার।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জুলাই শহীদদের স্মরণে গণসংহতির শ্রদ্ধা, সরকারকে সতর্ক করলেন সাকি

» ইউপিডিএফ সদস্য গ্রেপ্তার

» ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, প্রতিবছর অভ্যুত্থান স্মরণের অঙ্গীকার

» জুলাই গণহত্যা : শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির পক্ষে শুনানি সোমবার

» ‘জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া

» জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন করেই ছাড়বো: নাহিদ ইসলাম

» আসিফ মাহমুদের অস্ত্র রাখার বিষয়টি আইনত অপরাধ, বিচার করা উচিত : নিলুফার মনি

» নিষিদ্ধ করে সরকার আওয়ামী লীগকে উপকার করেছে: রুমিন ফারহানা

» আমৃত্যু জুলাইকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ : সারজিস আলম

» জুলাইয়ের প্রথম পোস্টার প্রকাশ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্রস্রাবে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ, জটিল কোনও রোগের লক্ষণ নয় তো!

সম্পূর্ণ স্বচ্ছ হালকা হলুদ হলো সুস্থ মানুষের প্রস্রাবের রঙ। আবার গাঢ় হলুদ রঙ হলেও তা স্বাভাবিক। এমন প্রস্রাবের অর্থ হলো শরীর ঠিকমতো তার নিজের কাজ সামলে নিলেও সামান্য ডিহাইড্রেটেড। বেশি পরিমাণ পানি খেলে সেই সমস্যারও সমাধান হয়ে যায়।

 

প্রস্রাবের নিজস্ব কোনও গন্ধ নেই। কিন্তু প্রস্রাব করার পর বাতাসে অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিন্তু তার থেকে অ্যামোনিয়ার গন্ধ উৎপন্ন হয়। যে কারণে পাবলিক টয়লেট থেকে তীব্র ঝাঁঝালো কটূ গন্ধ আমাদের নাকে আসে। আর এই গন্ধ অনেক সময়ই মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। আর প্রস্রাবে অতিরিক্ত দুর্গন্ধ কিন্তু জানান দেয় শারীরিক অসুস্থতার কথা।

 

কেন প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত হয়? এর কিন্তু একাধিক কারণ রয়েছে। কখনও তা কোনও শারীরিক সমস্যার কারণেও হতে পারে। যারা ইস্টের সংক্রণমে ভুগছেন বা যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের প্রস্রাব সব সময় গন্ধযুক্ত হয়। তবে এই গন্ধ মাত্রা ছাড়ানোর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নইলে হতে পারে শরীরের ক্ষতি। হতে পারে কিডনির সমস্যাও। কিন্তু কেন প্রস্রাব দুর্গন্ধযুক্ত হয় তার কিছু কারণও রয়েছে।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হল ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ। যে কোনও মানুষের ক্ষেত্রেই কিন্তু এই সংক্রমণ হতে পারে। মূত্রাশয়ে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি জানান দেয় ইউরিন ইনফেকশনের। এক্ষেত্রে প্রস্রাব করার সময় জ্বালা ভাব থাকে। প্রস্রাবের জায়গা বার বার চুলকায়। সেই সঙ্গে ঘন ঘন প্রস্রাবে যাওয়ার দরকারও পড়ে। এমন অবস্থায় প্রস্রাব কিন্তু দুর্গন্ধ যুক্ত হয়।

 

প্রস্রাব আমাদের দেহের রেচন পদার্থ। শরীরের অতিরিক্ত টক্সিন এই প্রস্রাবের মধ্যে দিয়েই বাইরে আসে। ফলে একরকম কটূ গন্ধ তো থাকেই। কিন্তু পানি কম খেলে প্রস্রাব ঠিকমতো হয় না। আর তখন এই কটূ গন্ধ যেন আরও অনেকটাই বেড়ে যায়।

 

যারা চা-কফি বেশি মাত্রায় খান তাদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এই একই সমস্যা হতে পারে। কফির মধ্যে যে ক্যাফেন থাকে তার জন্যই এই সমস্যা হয়। কারণ এক্ষেত্রে বিপাক ঠিক মতো হয় না। সেই সঙ্গে কফি শরীরকে ডিহাইড্রেডও করে দেয়। আর তাই তখন প্রস্রাব দুর্গন্ধ যুক্ত হয়। এমন ক্ষেত্রে অবশ্যই এই ক্যাফেনের পরিমাণ কিন্তু কমাতে হবে।

 

ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলেও কিন্তু প্রস্রাবে দুর্গন্ধ আসে। এক্ষেত্রে চিনি সহজে হজম হয় না। শরীরের অন্যান্য বিপাকও প্রয়োজনের তুলনায় কম হয়। যে কারণে ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে কিন্তু প্রস্রাব মিষ্টি হয় এবং অন্যরকম গন্ধ থাকে। এছাড়াও ডায়াবেটিসের সমস্যায় বার বার টয়লেটে যাবারও প্রয়োজন পড়ে।

 

যৌনতার থেকেও এমন সমস্যা আসতে পারে। সেক্সচুয়াল ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন এর জন্য দায়ী। এক্ষেত্রেও সংক্রমণ হয় মূত্রনালীতে। যে কারণে প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, প্রস্রাবের রং পরিবর্তন এসব একাধিক সমস্যা হয়। যেখান থেকে যোনিতে জ্বালা, দুর্গন্ধ যুক্ত প্রস্রাব এসব সমস্যা থেকেই যায়।

 

শরীর আবার বিভিন্ন খাবার বিভিন্ন ভাবে হজম করে। অ্যাসপারগাস, স্প্রাউটস, পিঁয়াজ, রসুন, মাছ এবং নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য গ্রহণ করতে সময় লাগায়। এখান থেকেও কিন্তু দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হতে পারে। কারণ যে সব খাবার হজম করা কঠিন এবং কটূ গন্ধ যুক্ত সে সব খাবার বেশি খেলে প্রস্রাবে আঁশটে গন্ধ থাকে।

সূত্র- আনন্দবাজার।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com