প্রতিদিন কতটুকু প্রোটিন খাবেন?

ছবি:সংগৃহীত

 

আমাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও বিকাশের জন্য প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ। সেইসঙ্গে এটি ভালোভাবে হজম হওয়াও জরুরি। প্রোটিনকে বিল্ডিং ব্লক অব লাইফ-ও বলা হয়। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টসের একটি হলো এই প্রোটিন। বাকি দুটি হলো ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট। এই তিন উপাদান আমাদের শরীরের গঠন ও বিকাশে সহায়তা করে। নিয়মিত প্রোটিন গ্রহণ করলে তা পেশি তৈরি থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখা, চুল পড়া বন্ধ করাসহ আরও অনেক উপকার করে। তবে কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাটের মতো প্রোটিন শরীরে জমা থাকে না। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।

শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ঘাটতি তৈরি হলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে মনোযোগ কমে যাওয়া, পেশির দুর্বলতা, ওজন বৃদ্ধি, অলসতা, বিভ্রান্তি ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে কিংবা এটি ঠিকভাবে হজম না হলে সমস্যা আরও বেশি হতে পারে।

প্রতিদিন কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন?

ভারতীয় পুষ্টিবিদ দীপ্তি জৈন বলেন, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের পরিমাণের হিসাবটা মজার। তার ওজনের প্রতি কেজিতে ০.৮ থেকে এক গ্রাম প্রোটিন। অর্থাৎ কারও ওজন যদি ৬৫ কেজি হয় তবে তার প্রতিদিন ৫২-৬৫ গ্রাম প্রোটিন দরকার হতে পারে। শারীরিক পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করে প্রোটিন কম-বেশি প্রয়োজন হতে পারে। সেইসঙ্গে এটি বয়স, শারীরিক অবস্থা, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে। যদি না বুঝতে পারেন, তবে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিলে সবচেয়ে ভালো হয়।

প্রোটিন অতিরিক্ত খেলে বা হজম ঠিকভাবে না হলে কী হয়?

অতিরিক্ত কোনোকিছুই ভালো নয়। একথা প্রোটিনের ক্ষেত্রেও সত্যি। কারণ অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে তা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের অসুবিধা সম্পর্কে-

 

অন্ত্রের সমস্যা

প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিন প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। তবে প্রোটিন ঠিকভাবে হজম হওয়ার বিষয়টিকে আমরা বেশিরভাগ সময়েই গুরুত্ব দেই না। অথচ এর ওপর নির্ভর করে আমার প্রোটিন থেকে সুবিধা পাবো কি না। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে বা এটি ঠিকভাবে হজম না হলে অন্ত্রের সমস্যা হতে পারে। সেসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ইত্যাদি।

ওজন বৃদ্ধি

ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে এর ঠিক উল্টোটা ঘটে। অর্থাৎ ওজন বেড়ে যেতে পারে। জার্নাল ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন অনুসারে, অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে তা ফ্যাট জমা করে। যে কারণে ওজন বেড়ে যেতে পারে।

 

ডিহাইড্রেশন

অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে তা শরীরে ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে। ফেডারেশন অব আমেরিকান সোসাইটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব খেলোয়াড় নিয়মিত বেশি প্রোটিন খান তাদের হাইড্রেশন লেভেল তুলনামূলক কম।

 

কিডনির সমস্যা

হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, যারা অতিরিক্ত প্রোটিন খায় তাদের কিডনির অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার ফলে অনেক বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট জমা হয় যা আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশনে বাধা দেয়।  সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু

» ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী তরুণ নিহত

» একাত্তর ও চব্বিশের শহীদদের প্রতি ডাকসুর বিজয়ীদের শ্রদ্ধা

» কুয়েত সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী দল

» প্রথমবারের মতো প্লে-অফে সাকিবের অ্যান্টিগা

» সংসদীয় আসন বিলুপ্তির প্রতিবাদে মোংলায় সরকারী অফিসে তালা

» ২২ কেজি ওজনের ঢাই মাছ ধরা পড়ল ,বিক্রি ১ লাখ ৩ হাজার ৯৬০

» কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন সাময়িক বরখাস্ত

» নায়ককে সজোরে থাপ্পড়, হোটেলে ফিরে কেঁদে ফেলেন কাজল

» সংস্কার প্রক্রিয়ায় সাফল্যের উপরেই নির্ভর করবে আগামীর বাংলাদেশ : আলী রীয়াজ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

প্রতিদিন কতটুকু প্রোটিন খাবেন?

ছবি:সংগৃহীত

 

আমাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও বিকাশের জন্য প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ। সেইসঙ্গে এটি ভালোভাবে হজম হওয়াও জরুরি। প্রোটিনকে বিল্ডিং ব্লক অব লাইফ-ও বলা হয়। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টসের একটি হলো এই প্রোটিন। বাকি দুটি হলো ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট। এই তিন উপাদান আমাদের শরীরের গঠন ও বিকাশে সহায়তা করে। নিয়মিত প্রোটিন গ্রহণ করলে তা পেশি তৈরি থেকে শুরু করে ওজন নিয়ন্ত্রণ, ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখা, চুল পড়া বন্ধ করাসহ আরও অনেক উপকার করে। তবে কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাটের মতো প্রোটিন শরীরে জমা থাকে না। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।

শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের ঘাটতি তৈরি হলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে মনোযোগ কমে যাওয়া, পেশির দুর্বলতা, ওজন বৃদ্ধি, অলসতা, বিভ্রান্তি ইত্যাদি সমস্যা তৈরি হতে পারে। তবে অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে কিংবা এটি ঠিকভাবে হজম না হলে সমস্যা আরও বেশি হতে পারে।

প্রতিদিন কতটুকু প্রোটিন প্রয়োজন?

ভারতীয় পুষ্টিবিদ দীপ্তি জৈন বলেন, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের পরিমাণের হিসাবটা মজার। তার ওজনের প্রতি কেজিতে ০.৮ থেকে এক গ্রাম প্রোটিন। অর্থাৎ কারও ওজন যদি ৬৫ কেজি হয় তবে তার প্রতিদিন ৫২-৬৫ গ্রাম প্রোটিন দরকার হতে পারে। শারীরিক পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করে প্রোটিন কম-বেশি প্রয়োজন হতে পারে। সেইসঙ্গে এটি বয়স, শারীরিক অবস্থা, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে। যদি না বুঝতে পারেন, তবে একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিলে সবচেয়ে ভালো হয়।

প্রোটিন অতিরিক্ত খেলে বা হজম ঠিকভাবে না হলে কী হয়?

অতিরিক্ত কোনোকিছুই ভালো নয়। একথা প্রোটিনের ক্ষেত্রেও সত্যি। কারণ অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে তা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের অসুবিধা সম্পর্কে-

 

অন্ত্রের সমস্যা

প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় প্রোটিন প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। তবে প্রোটিন ঠিকভাবে হজম হওয়ার বিষয়টিকে আমরা বেশিরভাগ সময়েই গুরুত্ব দেই না। অথচ এর ওপর নির্ভর করে আমার প্রোটিন থেকে সুবিধা পাবো কি না। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে বা এটি ঠিকভাবে হজম না হলে অন্ত্রের সমস্যা হতে পারে। সেসব সমস্যার মধ্যে রয়েছে বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ইত্যাদি।

ওজন বৃদ্ধি

ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে এর ঠিক উল্টোটা ঘটে। অর্থাৎ ওজন বেড়ে যেতে পারে। জার্নাল ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন অনুসারে, অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে তা ফ্যাট জমা করে। যে কারণে ওজন বেড়ে যেতে পারে।

 

ডিহাইড্রেশন

অতিরিক্ত প্রোটিন খেলে তা শরীরে ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে। ফেডারেশন অব আমেরিকান সোসাইটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব খেলোয়াড় নিয়মিত বেশি প্রোটিন খান তাদের হাইড্রেশন লেভেল তুলনামূলক কম।

 

কিডনির সমস্যা

হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, যারা অতিরিক্ত প্রোটিন খায় তাদের কিডনির অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার ফলে অনেক বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট জমা হয় যা আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশনে বাধা দেয়।  সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com