বিশ্বের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোন উন্মোচন করলো ইরান

ছবি: সংগৃহীত

 

বিশ্বের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোন উন্মোচন করেছে ইরান। এছাড়া ড্রোনের পাশাপাশি ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক মিসাইলও প্রদর্শন করেছে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটি। প্রতিবেশী ইরাকের সঙ্গে দেশটির ১৯৮০-এর দশকের যুদ্ধের বার্ষিকীতে এসব অস্ত্র সামনে আনে তেহরান।

 

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান শুক্রবার ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক মিসাইলসহ ‘বিশ্বের দীর্ঘতম পাল্লার ড্রোন’ প্রদর্শন করে প্যারেড করেছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে।

 

মিডিয়া বলছে, শুক্রবারের এই প্যারেডে ওই ড্রোনটি প্রথম ‘উন্মোচন করা হয়’। এছাড়া প্যারেডে প্রদর্শিত ড্রোনগুলো হচ্ছে- মোহাজের, শাহেদ এবং আরশ। শুক্রবারের এই অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

 

ইরানের সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ ড্রোন একইসঙ্গে কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে একই সময়ে আঘাত হানতে সক্ষম। স্থিতিশীল লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি চলমান লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে পারে এই ড্রোন।

 

অবশ্য গত মাসে ইরান জানিয়েছিল, তারা ‘মোহাজের-১০’ নামের নতুন একটি ড্রোন উন্মোচন করেছে। ড্রোনটি মোহাজের-৬ এর একটি উন্নত সংস্করণ। এটি উন্নত অস্ত্র ধারণের পাশাপাশি অধিকতর উচ্চতায় দীর্ঘ সময়ের জন্য উড়তে পারে।

 

ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছিল, ড্রোনটি ৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ও ২ হাজার কিলোমিটারের পরিচালন পরিসীমাসহ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে পারে। ইরান থেকে ইসরাইলের দূরত্ব প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার। যার অর্থ এটি ইসরাইলের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

 

ড্রোনটি ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতিতে ভ্রমণ করতে পারে। এটি সাম্প্রতিক ইলেকট্রনিক ও ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থায় সজ্জিত। পাশাপাশি মনুষ্যবিহীন ড্রোনটি ৩০০ কেজি ওজন পর্যন্ত ভার বহনে সক্ষম, যা আগের মডেলের তুলনায় দ্বিগুণ। ইরানের দাবি, ড্রোনটি সব ধরনের বোমা ও গোলাবারুদ বহনেও সক্ষম।

 

মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার কাছে মোহাজের-৬ ড্রোন বিক্রি করার অভিযোগ এনেছে। তবে তেহরান বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

 

রাজধানী তেহরানে শুক্রবারের কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, আমাদের বাহিনী এ অঞ্চলে ও পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। আমরা এই অঞ্চলের মানুষকে বলতে চাই, প্রতিরোধই এখন টিকে থাকার পথ। একমাত্র প্রতিরোধই শত্রুকে পিছু হটতে বাধ্য করে।

 

১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইরাকের তৎকালীন সাদ্দাম সরকার ইরানে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। প্রায় ৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধ ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলজিয়ার্স চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর ইরাকি আগ্রাসন শুরুর দিন থেকে জাতীয় প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করে আসছে ইরান।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিএনপি নেতাদের সতর্ক থাকার আহ্বান রিজভীর

» বাংলাদেশ ভ্রমণে কানাডার সতর্কতা জারি

» জনগণের ৭০ ভাগ পিআরের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে: মতিউর রহমান আকন্দ

» বদরুদ্দীন উমর ছিলেন বহু রাজনীতিবীদের শিক্ষক: মির্জা ফখরুল

» বিএনপি সেই গণতন্ত্রের কথা বলে, যে গণতন্ত্রে মানুষ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে  : ড. মঈন খান

» সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটে শাপলা বিক্রি করেই চলছে দিনমজুর হানিফের সংসার, সরকারী সহায়তা বঞ্চিত!

» লালমনিরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রস্তুত ৪ শত ৬৮ টি পূজা মন্ডব

» আগৈলঝাড়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ ললিতা সরকার শিক্ষা ও নৃত্যকলায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত

» ঢাকা থেকে জামালপুরের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

» গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল না করলে সরকারকে বাধ্য করার হুমকি ওলামা পরিষদের

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিশ্বের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোন উন্মোচন করলো ইরান

ছবি: সংগৃহীত

 

বিশ্বের ‘সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোন উন্মোচন করেছে ইরান। এছাড়া ড্রোনের পাশাপাশি ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক মিসাইলও প্রদর্শন করেছে পশ্চিম এশিয়ার এই দেশটি। প্রতিবেশী ইরাকের সঙ্গে দেশটির ১৯৮০-এর দশকের যুদ্ধের বার্ষিকীতে এসব অস্ত্র সামনে আনে তেহরান।

 

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান শুক্রবার ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক মিসাইলসহ ‘বিশ্বের দীর্ঘতম পাল্লার ড্রোন’ প্রদর্শন করে প্যারেড করেছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে।

 

মিডিয়া বলছে, শুক্রবারের এই প্যারেডে ওই ড্রোনটি প্রথম ‘উন্মোচন করা হয়’। এছাড়া প্যারেডে প্রদর্শিত ড্রোনগুলো হচ্ছে- মোহাজের, শাহেদ এবং আরশ। শুক্রবারের এই অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

 

ইরানের সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ ড্রোন একইসঙ্গে কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে একই সময়ে আঘাত হানতে সক্ষম। স্থিতিশীল লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি চলমান লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে পারে এই ড্রোন।

 

অবশ্য গত মাসে ইরান জানিয়েছিল, তারা ‘মোহাজের-১০’ নামের নতুন একটি ড্রোন উন্মোচন করেছে। ড্রোনটি মোহাজের-৬ এর একটি উন্নত সংস্করণ। এটি উন্নত অস্ত্র ধারণের পাশাপাশি অধিকতর উচ্চতায় দীর্ঘ সময়ের জন্য উড়তে পারে।

 

ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছিল, ড্রোনটি ৭ হাজার ফুট উচ্চতায় ও ২ হাজার কিলোমিটারের পরিচালন পরিসীমাসহ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত উড়তে পারে। ইরান থেকে ইসরাইলের দূরত্ব প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার। যার অর্থ এটি ইসরাইলের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

 

ড্রোনটি ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার গতিতে ভ্রমণ করতে পারে। এটি সাম্প্রতিক ইলেকট্রনিক ও ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থায় সজ্জিত। পাশাপাশি মনুষ্যবিহীন ড্রোনটি ৩০০ কেজি ওজন পর্যন্ত ভার বহনে সক্ষম, যা আগের মডেলের তুলনায় দ্বিগুণ। ইরানের দাবি, ড্রোনটি সব ধরনের বোমা ও গোলাবারুদ বহনেও সক্ষম।

 

মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়ার কাছে মোহাজের-৬ ড্রোন বিক্রি করার অভিযোগ এনেছে। তবে তেহরান বরাবরই সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

 

রাজধানী তেহরানে শুক্রবারের কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেন, আমাদের বাহিনী এ অঞ্চলে ও পারস্য উপসাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। আমরা এই অঞ্চলের মানুষকে বলতে চাই, প্রতিরোধই এখন টিকে থাকার পথ। একমাত্র প্রতিরোধই শত্রুকে পিছু হটতে বাধ্য করে।

 

১৯৮০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইরাকের তৎকালীন সাদ্দাম সরকার ইরানে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। প্রায় ৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধ ১৯৮৮ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলজিয়ার্স চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর ইরাকি আগ্রাসন শুরুর দিন থেকে জাতীয় প্রতিরক্ষা সপ্তাহ উদযাপন করে আসছে ইরান।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com